সর্বশেষ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় সেনাপ্রধানের
বিমান হামলার পর লেবাননকে বড় হুমকি দিল ইসরায়েল
বাংলাদেশসহ ১৪ দেশকে ‘ওয়ার্ক ভিসা’ দিবে না সৌদি
জাতি যেনতেন নির্বাচন চায় না: ডা. শফিকুর রহমান
‘হানাহানির রাজনীতি ফিরে আসুক তা চাই না’
ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির মাঝে প্রশান্তির খোঁজে মানুষ
অস্ত্রোপচার সম্পন্ন, এখন কেমন আছেন ক্যানসারে আক্রান্ত দীপিকা
লড়াই করে আদায় করতে হয়েছিল পশু কোরবানির অধিকার
চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনার দিনক্ষণ জানালেন ট্রাম্প
মালয়েশিয়ায় ঈদুল আজহার নামাজ আদায়
মেট্রোরেল চলবে না আজ
নিষিদ্ধ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট যেভাবে ফিরে পাবেন
গবেষণা একাডেমিতে ৮ পদে চাকরির সুযোগ
ফিরোজায় ঈদ উদযাপন করবেন বেগম খালেদা জিয়া, দেশবাসীকে জানালেন শুভেচ্ছা
ঈদে কোরবানির মাংস খাওয়ার স্বাস্থ্যসম্মত ৪ গাইডলাইন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে তরুণরা

অনলাইন ডেস্ক

বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে অনেকেই সঠিক দিকনির্দেশনা এবং কার্যকর কৌশলের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই জগতে টিকে থাকা এবং সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, দক্ষতা এবং সঠিক পরিকল্পনা। যাঁরা এই গুণগুলো অর্জন করতে পেরেছেন, তাঁরা শুধু নিজেকে নয়, বরং দেশের জন্যও বয়ে আনছেন সাফল্যের গল্প।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার গল্প

এস এম মুনতাসির মুকিত এমনই একজন ফ্রিল্যান্সার, যিনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে নিজের জন্য একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। ২০১৫ সালে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে পা রাখেন মুকিত। শুরুর দিকে কাজের সুযোগ খুঁজে পাওয়া যেমন কঠিন ছিল, তেমনি আন্তর্জাতিক মানের কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করাও ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে মুকিত সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন অধ্যবসায়, কঠোর পরিশ্রম এবং নিয়মিত শেখার মাধ্যমে।

ছোটবেলা থেকেই মুকিতের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈশ্বিক সংযোগের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, একজন দক্ষ ব্যক্তি শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো বিশ্বে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিতে পারেন। সেই স্বপ্নকে সামনে রেখে মুকিত শুরু থেকেই কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি বিশ্বের ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য সেবা প্রদান করছেন এবং বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার উপায়

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে তরুণদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দিতে হবে—

  • দক্ষতা বৃদ্ধি: শুধু কাজ জানা নয়, কাজের মান আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে।
  • যোগাযোগ দক্ষতা: ক্লায়েন্টের সঙ্গে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান: নিয়মিত নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে।
  • ধৈর্য এবং অধ্যবসায়: দ্রুত সাফল্যের আশা না করে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

একজন তরুণ ফ্রিল্যান্সার জানান, “শুরুতে কাজ পাওয়া ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ধৈর্য ধরে কাজ শিখে এবং ক্লায়েন্টদের প্রয়োজন বুঝে কাজ করার মাধ্যমে আমি এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছি। ফ্রিল্যান্সিং শুধু আমার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করেনি, বরং আমার আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়েছে।”

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সম্ভাবনা

ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের একটি অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন ক্ষেত্র। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ব্র্যান্ডিং, এবং গ্রাফিক ডিজাইনের মতো কাজগুলো ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করছে। মুকিতের মতো ফ্রিল্যান্সাররা এই খাতে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করছেন এবং বাংলাদেশের নাম বিশ্বের দরবারে তুলে ধরছেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দেশের তরুণরা ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছেন।

তরুণদের জন্য করণীয়

তরুণদের ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে তাদের অবশ্যই কয়েকটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে:

  • পেশাগত প্রশিক্ষণ: বিভিন্ন কোর্স এবং ওয়ার্কশপের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে তোলা।
  • নেটওয়ার্কিং: আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন।
  • মেন্টরশিপ: অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ।
  • নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি: নিজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করা, যা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে পারে।

মুকিত বলেন, “আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আরও দক্ষ হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যদিও আমরা একটি তৃতীয় বিশ্বের দেশ, কিন্তু আমাদের কাজের গুণমান যদি প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর মতো হয়, তাহলে আমরা সহজেই বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারব।”

সরকারের ভূমিকা

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফ্রিল্যান্সিং খাতকে আরও গতিশীল করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তরুণদের জন্য সহজলভ্য প্রশিক্ষণ, ইন্টারনেট সুবিধা, এবং পেমেন্ট গেটওয়ের মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হলে দেশের ফ্রিল্যান্সাররা আরও সফল হতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তি নয়, বরং পুরো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তরুণদের দক্ষতা বাড়ানো এবং সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ডিজিটাল অর্থনীতির শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ