যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ‘শাটডাউন’ এড়াতে গতকাল শুক্রবার বিল পাস করেছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ। শাটডাউন শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এক ভোটাভুটিতে অর্থ বিলটি পাস হয়। এদিন রিপাবলিকানদের পাশাপাশি ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও বিলটির পক্ষে অবস্থান নেন।
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে বিলটি পাস হওয়ায় (৩৬৬–৩৪ ভোট) আগামী মধ্য–মার্চ পর্যন্ত মার্কিন ফেডারেল সংস্থাগুলোর তহবিলের জোগান অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা তৈরি হলো। যদিও এখন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে এ রাষ্ট্রীয় অর্থবিলকে (সরকারি ব্যয় প্যাকেজ) অনুমোদন পেতে হবে।
বিলে অনুমোদন দিতে সিনেটের হাতেও বেশি সময় নেই। আজ শনিবার মধ্যরাতের (০৫০০ জিএমটি) মধ্যে এ অনুমোদন দিতে হবে। অন্যথায় ফেডারেল সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হতে শুরু করবে।
প্রতিনিধি পরিষদে গত বৃহস্পতিবার বিলটি পাস হতে ব্যর্থ হলে আজ শনিবার থেকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় গতকাল পরিষদে আবার ভোটাভুটি হয়। গতকালের মতো বৃহস্পতিবারের ভোটেও পরিষদের প্রায় সব ডেমোক্র্যাট সদস্য বিলটিকে সমর্থন করেছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত এ অর্থবিল প্রতিনিধি পরিষদে পাস হতে ব্যর্থ হয়। কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়নের জন্য সেদিন পরিষদে আনা এ বিলের বিরুদ্ধে ৩৪ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ভোট দেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা বিলটি পাসে ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করেন।
বিলটি পাস হতে ব্যর্থ হলে আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় শাটডাউন এড়াতে গতকাল আবারও ভোটাভুটি হয়। গতকালের মতো বৃহস্পতিবারের ভোটেও প্রতিনিধিদের পরিষদের প্রায় সব ডেমোক্র্যাট সদস্য বিলটিকে সমর্থন করেছিলেন।
গতকালের ভোটাভুটির পর ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেসসদস্য বেনি থম্পসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, ‘আজ আমাদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা বিভক্তি নয়; বরং সহযোগিতা করার পক্ষে তাঁদের যে প্রতিশ্রুতি, তা জোরালভাবে রক্ষা করলেন। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এমন একটি সরকার চায়, যা তাদের জন্য কাজ করবে।’
সিনেটররা বিলটিতে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানালে শাটডাউন শুরু হবে। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভরশীল নানা কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে সৃষ্টি হবে অচলাবস্থা। ব্যাহত হবে বিমানবন্দরের কার্যক্রম। সে ক্ষেত্রে আসন্ন ক্রিসমাসের ভ্রমণ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
সিনেটররা বিলটিতে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানালে আজ শনিবার রাত থেকেই শাটডাউন শুরু হবে। শাটডাউনের আওতায় মূলত অত্যাবশ্যক নয়, এমন সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হতে শুরু করবে, ৮ লাখ ৭৫ হাজার পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হবেন এবং আরও ১৪ লাখ কর্মীকে বিনা বেতনে কাজ করতে হবে।
শাটডাউনের আওতায় মূলত অত্যাবশ্যক নয়, এমন সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হতে শুরু করবে, ৮ লাখ ৭৫ হাজার পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হবেন এবং আরও ১৪ লাখ কর্মীকে বিনা বেতনে কাজ করতে হবে।
ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন সিনেট বিলটির ব্যাপারে প্রতিনিধি পরিষদের মতোই অবস্থান নেবে অর্থাৎ এতে অনুমোদন দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখন প্রধান যে প্রশ্ন তা হলো, এ ব্যাপারে সিনেটররা কত দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
সরকারি তহবিলে কংগ্রেসের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি সব সময়ই একটি জটিল কাজ। কেননা, কংগ্রেসের উভয় কক্ষ রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে বিভক্ত।
ইতিমধ্যে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শাটডাউন নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘যদি সরকারে শাটডাউন হয়–ই, তবে তা বাইডেন প্রশাসনের অধীন এখনই শুরু হোক।’
আর হোয়াইট হাউস বলেছে, সিনেট বিলটিতে অনুমোদন দিলে তা আইনে পরিণত করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এতে সই করতে ইচ্ছুক।