ভাজা মুচমুচে মিষ্টিকুমড়ার বীজ প্রতিদিন মাত্র এক টেবিল চামচ খেলে শরীরে আসতে পারে বিস্ময়কর পরিবর্তন। প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বীজ হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা পর্যন্ত উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই খাদ্যতালিকায় সহজলভ্য, সস্তা তবে শক্তিশালী কিছু যোগ করতে চাইলে জেনে নিন কেন প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মিষ্টিকুমড়ার বীজ খাবেন।
১. হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ উপকারী
কুমড়ার বীজে আছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়। ফলে হৃৎপিণ্ডের অসুখের ঝুঁকি কমে এবং কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
২. ভালো ঘুমের সহায়ক
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য মিষ্টিকুমড়ার বীজ ঘুমপাড়ানি মাসিপিসির মতো। এতে আছে ট্রিপটোফ্যান নামের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই দুটি হরমোন স্বাভাবিক ঘুমের জন্য অপরিহার্য। রাতে শোয়ার আগে এক টেবিল চামচ কুমড়ার বীজ খেলে ভালো ঘুম হবে এবং ঘুমের চক্র থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম শরীরের পেশি ও স্নায়ু শিথিল করতে সহায়তা করে, ফলে রাতের ঘুমটা ভালো হয়।
৩. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে
এই ছোট্ট সুপারফুডে আছে প্রচুর জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে সহায়ক। বিশেষ করে জিঙ্ক স্নায়ুর সংকেত আদান-প্রদান ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৪ সালের এক গবেষণা বলছে, নিয়মিত মিষ্টিকুমড়ার বীজ খেলে মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়তে পারে, কমতে পারে আলঝেইমার্স ডিজিজসহ স্নায়ুর রোগের ঝুঁকি।
৪. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করতে চাইলে মিষ্টিকুমড়ার বীজ খান। এতে পাবেন জিঙ্ক ও ভিটামিন ই। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। জিঙ্ক ক্ষত সারিয়ে তুলতে এবং ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, আর ভিটামিন ই কাজ করে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে, যা প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দৃঢ় রাখে।
৫. পাচনতন্ত্র ও অন্ত্রের জন্য ভালো
সুস্থ পরিপাকক্রিয়া ভালো স্বাস্থ্যের মূল ভিত্তি। আর মিষ্টিকুমড়ার বীজ অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার বা আঁশ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে করা এক গবেষণায় জানা গেছে, মিষ্টিকুমড়ার বীজে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক গুণ আছে, যা অন্ত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে এবং হজমক্রিয়া ভালো করতে সহায়ক।
সূত্র: হেলদি