আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হল কিডনি। মূত্র থেকে শুরু করে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায় এই অঙ্গ। তাই সুস্থ থাকতে বৃক্কের হাল ঠিক রাখা জরুরি। মানুষের শরীরে কিডনির সংখ্যা দু’টি, তাই একটি বিকল হলেও কাজ চলতে পারে অন্যটি দিয়ে। ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো প্রথমেই কিডনির ক্ষতির আঁচ পাওয়া যায় না। আর সময় থাকতে কিডনির সমস্যা ধরা না পড়লে সেরে ওঠার সম্ভাবনাও কমতে থাকে। তবে শরীরের কিছু লক্ষণ রয়েছে যা কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে রাতের দিকে কয়েকটি লক্ষণ দেখলে সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে নেওয়া যাক সেই বিষয়ে-
১. রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব- ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ শুধু ডায়াবেটিসের নয়, কিডনির অসুখের কারণেও হতে পারে। যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় নকচুরিয়া। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মূত্রত্যাগ করতে হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
২. হাত-পা ফুলে যাওয়া- রাতে শুয়ে থাকার সময়ে যদি হাত-পা অস্বাভাবিক ফুলে গেছে লক্ষ্য করেন তাহলে অবহেলা করবেন না। কিডনির সমস্যায় শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়। যার ফলে হাত-পা ফুলে যায়। পায়ের আঙুল, পায়ের পাতা, গোড়ালি ফুলে গিয়ে যদি ব্যথা অনুভূত না হয় তাহলে তা কিডনির অসুখের সংকেত হতে পারে।
৩. অনিদ্রা- কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে মূত্রের মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থ দেহের বাইরে বেরতে পারে না। যার ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। দেখা গিয়েছে, যাদের কিডনির অসুখ রয়েছে, তাঁদের সুস্থ মানুষের তুলনায় ঘুমের সমস্যা বেশি হয়। তাই হঠাৎ অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
৪. ক্লান্তিভাব- সারাদিনের কাজের শেষে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ক্লান্ত লাগলে সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক না থাকলে শরীরে কম লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন হয়। যার ফলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সঙ্গে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব হয়।
৫. শ্বাসকষ্ট- সারা দিন সব কিছু ঠিক রয়েছে, কিন্তু রাতে শোওয়ার পরই হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে তা কিডনি বিকল হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। আসলে কিডনির সমস্যায় শরীরে তরলের পরিমাণে হেরফের হয়। যার ফলে ফুসফুসের উপর চাপ পড়ে। রাতে শোওয়ার পর এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।
৬. ত্বকে র্যাশ- কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ঠিক মতো বের করতে না পারলে ত্বকেও লক্ষণ দেখা যায়। ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, ব্যথা হতে পারে। হাত, মুখ পায়ে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা প্রকট হতে পারে। এই ধরনের কোনও লক্ষণ দেখলেও সতর্ক হন।