নেত্রকোনার আটপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গৃহবধূ নূরজাহান বেগমকে (৫০) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নিহতের বড় ছেলে মেহেদী হাসান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় মাসুদ মিয়াকে প্রধান করে পাঁচজনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ আটক দুজনকে গ্রেফতার দেখায়।
আসামিরা হলেন- গণিপুর গ্রামের লাল মিয়া (৬৬) ও তার স্ত্রী মঞ্জুরা বেগম (৫৮)। আর নিহত নূরজাহান একই গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবুল মিয়ার সঙ্গে তার মামা লাল মিয়া ও তার সন্তানদের জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তারা পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। গত বুধবার রাতে বাবুল মিয়ার পরিবার সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় লাল মিয়া তার স্ত্রী মঞ্জুরা বেগম, দুই ছেলে মাসুদ মিয়া (৪০), এরশাদ মিয়া (৩৮) ও খাইরুল মিয়া নামে এক আত্মীয়কে প্রথমে বাড়ির উঠোনে রান্না করতে থাকা নূরজাহানকে কুপাতে থাকেন। পরে তার চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে বাবুল মিয়ার ঘরে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। হামলাকারী বাবুলের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাসহ বাবুল, তার বৃদ্ধ বাবা ইঞ্জিল মিয়া, মা পরিষ্কারের নেছা, বাবুল মিয়ার ছেলে মারুফ মিয়াকে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয় লোকজন হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সর্বশেষ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নূরজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন। আর অন্যদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় শুক্রবার পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়। পরে পুলিশ লাল মিয়া ও তার স্ত্রী মঞ্জুরা বেগমকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
বাবুল মিয়ার ছোট ভাই মো. দীন ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমার মামা লাল মিয়া ও তার ছেলেরা আমার বড় ভাইয়ের ওপর হামলা করেন। এ সময় ভাবি তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তারা ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের অবস্থা মুমূর্ষু। তাকে আইসিইউতে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠান বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দায়ের করা মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।