সর্বশেষ
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে অ্যালোভেরা জেল কীভাবে লাগাবেন? 
লটকনের পুষ্টিগুণ
মিনিড্রেসের ৭টি আবেদনময় লুকে মোহনীয় মন্দিরা
দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেলেই সমস্যা হয়?
ফিউশনওয়্যারে জুড়ি নেই তানজিন তিশার, দেখে নিন আকর্ষণীয় ১০ লুক
রক্তে অতিরিক্ত চর্বির কারণ ও প্রতিকার
একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
যে ফলগুলো খেলে গরমে আপনার চুল ভালো থাকবে
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সুফিউর
শেখ হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ
বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রয়াস
রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা হয়নি, জুনে নির্বাচন নিয়ে সংশয়
মেট্রোরেলের র‍্যাপিড পাসও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়, ভোগান্তি যাত্রীদের
নারী বিশ্বকাপে খেলতে ভারতে যাবে না পাকিস্তান
৩ মে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের ডাক

সাংবাদিকদের সত্য উদ্ঘাটন ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে: কাদের গনি

অনলাইন ডেস্ক

বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাংবাদিকদের সত্য উদ্ঘাটন, অনুসন্ধান ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে। অর্ধ সত্য নয়, সত্য ও অসত্যের মিশ্রণও নয়, তাদের প্রকাশ করতে হবে অখণ্ড ও পূর্ণ সত্য।

তিনি বলেন, সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চাকরির ঝুঁকি, জীবনের ঝুঁকিসহ নানা ঝুঁকি নিতে হয়। সাংবাদিকরা এই ঝুঁকি না নিলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে? অসহায় আত্মসমর্পণ সাংবাদিকদের মানায় না। বিগত সরকারের সময় আমাদের সাংবাদিকদের বিরাট অংশকে আমরা অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখেছি সেলফ সেন্সরশিপের মাধ্যমে।মনে রাখবেন সত্য প্রকাশে বাধা ও বিপদের সম্মুখীন হলেও সমাজের সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের পাশে এসে দাঁড়ায়।

রোববার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে কাদের গনি চৌধুরী এসব বলেন।

কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন, কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, জামায়াত সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ার্দার, ইসলামী আন্দোলনের আহমদ আলী, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক আবু বকর,পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট সাতিল মাহমুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শামীউল হাসান অপু।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, জীবনে কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যার সঙ্গে আপস করা চলবে না।তাহলে সাংবাদিকতা হবে না। সত্যের তরে দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করাই সাংবাদিকতা।সত্য প্রকাশই হতে হবে গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার।

সাংবাদিকদের এই নেতা বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে সবচেয়ে জীবন্ত ও আধুনিক পেশা। বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা, সাংবাদিকতা কখনই মূর্খজনের পেশা নয়; পেশা হিসেবেই সাংবাদিকতা বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের পেশা। যে মানুষ অতীতকে ধারণ করে বর্তমানের সঙ্গে তা মিলিয়ে ভবিষ্যতের নির্দেশনা দিতে না পারেন, ভাষায়-ব্যাখ্যায়-উপস্থাপনায় যিনি মেধার ছোঁয়া না বুলাতে পারেন, তিনি আর যা-ই হোন সাংবাদিক হতে পারেন না। কিছু মৌলিক কাঠামোই সাংবাদিকতাকে আধুনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পেশার শক্ত ভিত্তি দিয়েছে। সাংবাদিকতাকে দাঁড়াতে হয় এই মৌলিক ভিত্তির ওপর। একটি সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাটি যদি নিশ্চিত না থাকে, সমাজটি যদি চিন্তা ও বিবেকের জন্য খোলা প্রান্তর অবারিত করতে না পারে- সেই সমাজে স্বাধীন বা মুক্ত সাংবাদিকতা বিকশিত হতে পারে না। সাহসী ও  বুদ্ধিবৃত্তিক সাংবাদিকতার ভিতও দৃঢ় হয় না।

তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলি কিন্তু নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার কথা বলি না।আজকাল প্রায়শই সংবাদমাধ্যম বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার বিষয়টি উচ্চারিত হয় জোরেসোরে। সংবাদ মাধ্যমের প্রথাগত দায়িত্বটি মানুষকে তথ্য জানানো, সেই তথ্য জানানোর মধ্যদিয়েই মানুষকে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা, তথ্য এবং আলোচনার মাধ্যমে বিনোদন দেওয়া এবং সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তোলা।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে আপনারা জানেন। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন যখন চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে, সে সময়কার পূর্বপাকিস্তানের এক দল সম্পাদক গিয়েছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। মানিক মিয়া স্মৃতিচারণ করছেন, সে সময় পশ্চিম পাকিস্তানে তাদের বন্ধু সাংবাদিক সুলেরী বলছেন- মানিক মিয়া তোমরা পূর্বপাকিস্তানের সংবাদপত্রে এখন সাংবাদিকতার চাইতে রাজনীতিটাই বেশি করছ। মানিক মিয়া হেসে জবাব দিয়েছিলেন- সুলেরী, পূর্ববঙ্গে এখনকার যা পরিস্থিতি, যে জনআকাঙ্ক্ষা আমরা তার সঙ্গে মিলিয়েই সাংবাদিকতা করছি। সেই জনআকাঙ্ক্ষার অনেক দূরে পশ্চিমে বসে তোমরা যা করতে পার আমরা তা পারি না।সাংবাদিকতা যেহেতু জনমানুষের আশ্রয়েই বেঁচে থাকে, কাজেই পেশাদারিত্ব বজায় রেখেই নতুন দায়িত্বও মাথায় নিতে হয়।

তিনি বলেন, দায়িত্বশীলতা প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকতার সঙ্গে এমনভাবে ঘনিষ্ঠ যে, সেজন্য পৃথক কোনো সংজ্ঞার প্রয়োজন হয় না। কারণ, সাংবাদিকতা পেশাটিই দায়িত্বশীল পেশা। প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকতা কখনো ‘অ-দায়িত্বশীল’ হতে পারে না। যারা দায়িত্বহীনভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করেন, তারা আর যাই হোক ‘সাংবাদিক’ নন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আরেকটি বিষয়ে না বললেই নয়- গণমাধ্যম বা সাংবাদিক কার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে, কার কাছে জবাবদিহি করবে? এই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সরকার চায় জবাবদিহিতা থাকুক তার কাছে, মালিক চায় তার কাছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সংবাদমাধ্যমের দায়বদ্ধতা সমাজের প্রতি। সমাজের পাঠক বা দর্শকই তো তার ভোক্তা। তারাই মূল্যায়ন করবেন। ভালো লাগলে গ্রহণ করবেন, না হলে প্রত্যাখ্যান করবেন। সেই গণমাধ্যমই টিকে থাকবে, যেটি মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। আস্থা অর্জন করা সম্ভব হবে যদি সংবাদমাধ্যমটি নৈতিকতার দিক থেকে পরিশীলিত হয়, পেশাদারিত্বের দিক থেকে পরিশীলিত হয়, সত্যপ্রকাশে সাহসী-আপসহীন হয়।

তিনি বলেন, আবার রাষ্ট্রের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতির গণমাধ্যমের দায়বোধ থাকা জরুরি। মনে রাখতে হবে, কোনো স্বাধীনতাই নিরঙ্কুশ নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর বিদ্বেষ ছড়ানো সমার্থক নয়। কোনো তথ্য যাচাই না করে তার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধ ঘোষণা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। সমাজে ন্যায্যতার পক্ষে গণমাধ্যমকে থাকতে হবে।তবে সমাজকে শিক্ষিত করে তোলাও গণমাধ্যমের দায়িত্ব। শিক্ষিত সমাজই বুঝবে গণমাধ্যমের কাছে কতটা প্রত্যাশা করা সঙ্গত। তাই বলা হয়, শিক্ষিত সমাজে সাংবাদিকরা বেশি নিরাপদ।মনে রাখবেন, সততা ছাড়া কোনো গণমাধ্যম বহু মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে না। বৈশ্বিকভাবেই এখন সংবাদমাধ্যমের বড় সংকট ‘ফেক নিউজ’।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ