ঘরে ঘরে এখন ডায়াবেটিসের সমস্যা। সমস্যার বিষয় হল, অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য লক্ষণ দেখা যায় না। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতেও পারেন না যে তাঁর ডায়াবেটিস হয়েছে। এই সুযোগে ডায়াবেটিস নীরবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, স্নায়ুর ক্ষতি এবং অন্ধত্বের মতো মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এই কারণে ডায়াবেটিসকে নীরব ঘাতক বলা হয়।
কিন্তু জানেন কি কখনও কখনও চোখের সমস্যা দেখেই চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন যে রোগী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত?
বিষয়টিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। এই সমস্যায় ডায়াবেটিস চোখের রেটিনাকে (আলো সংবেদী স্তর) প্রভাবিত করে। দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্ত শর্করার কারণে রেটিনার ছোট রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই রোগ হয়।
দেখে নিন ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির কিছু সাধারণ উপসর্গ।
* দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
* চোখের সামনে কালো বা অস্বচ্ছ দাগ ভাসা (ফ্লোটার)
* দৃষ্টিশক্তির ওঠানামা
* রং চিনতে অসুবিধা হওয়া
* দৃষ্টি ক্ষেত্রের কিছু অংশে অন্ধকার দেখতে পাওয়া
* দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
যদি এই উপসর্গগুলো অনুভব করেন, তবে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তবে মনে রাখবেন এই উপসর্গ দেখে ডায়াবেটিস চিহ্নিত করা যেতে পারে, তবে এটি ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একমাত্র উপায় নয়। আসলে, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণগুলো সাধারণত ডায়াবেটিস হওয়ার বেশ কয়েক বছর পর দেখা দিতে শুরু করে। যখন একজন ব্যক্তি দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, চোখে কালো দাগ দেখা, বা রাতের বেলা কম দেখতে পাওয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান, তখন চিকিৎসক চোখের পরীক্ষা করে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি শনাক্ত করতে পারেন। এই অবস্থায়, চিকিৎসক সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন যাতে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।
সুতরাং, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির উপসর্গ দেখা দিলে ডায়াবেটিস থাকার সম্ভাবনা প্রবল, এবং এটি ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে।