সর্বশেষ
নতুন বাংলাদেশের ধারণা পেল বিদেশিরা
‘৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে বিনিয়োগের হাব মনে করে বড় দেশগুলো’
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এই অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস
নতুন ইতিহাস গড়লেন কোহলি
বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা খুঁজছে পাকিস্তানের শিল্পগোষ্ঠী ‘এনগ্রো’
ছুটি নিয়ে ফের সুখবর পেলেন চাকরিজীবীরা
মধ্যরাতে ১১ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যা, জামায়াতের নিন্দা
সওজের জায়গা দখলে নিয়ে আ.লীগ নেতার ভবন নির্মাণ
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে: বিএনপি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন থামিয়ে তেল চুরি, চালকসহ রেলকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
বিসিএসে স্বচ্ছতাসহ ৬ দাবিতে পিএসসিকে এনসিপির স্মারকলিপি
গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাবে বিএনপি
প্রধান শিক্ষকের প্রতারণায় পরীক্ষা দিতে পারলো না ১৩ শিক্ষার্থী
স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণা, সতর্ক করলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

পাচারের টাকায় বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন আ. লীগ নেতাদের

অনলাইন ডেস্ক

জুলাই আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীএমপি নেতারা পাচারের টাকায় বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা অবস্থান করছেন।

জানা গেছে, এসব নেতারা দেশ থেকে পাচার টাকায় বিলাসী জীবনযাপন করছেন সেখানে। যেসব দেশে তারা পালিয়ে বা আত্মগোপনে আছেন, সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। শীর্ষ নেতা সাবেক মন্ত্রীদের বিদেশে বিলাসী ঈদ উদযাপনের ছড়িয়ে পড়া ছবি দেখে অনেকেই বলছেন, তাদের সঙ্গে উপহাস করা হয়েছে। জনসাধারণের মাঝেও তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে।

নিয়ে অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার সঙ্গে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে যুক্তরাজ্যে ঈদ উদযাপনের হাস্যোজ্জ্বল ছবি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকে দেশেই মামলা গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িছাড়া অবস্থায়।

যদিও অপর একটি সূত্র জানায়, ভারতে বসে বাংলাদেশে আত্মগোপনে থাকা কর্মীদের এবার ঈদের বকশিশের নামে টাকা পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে তারা যার যার নির্বাচনি এলাকায় এই টাকা পাঠিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সাধারণ মানুষ যখন অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিপর্যস্ত, তখন আওয়ামী লীগের এই সাবেক প্রভাবশালী নেতাদের বিলাসী জীবনযাত্রা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল তাদের শাসনামল।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে সাবেক মন্ত্রীকে একই ফ্রেমে দেখা যায়। তাদের মধ্যে রয়েছেনসাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং সাবেক মন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

জানা গেছে, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে দেখতে মঙ্গলবার ওই সাবেক চার মন্ত্রী হাসপাতালে যান। এছাড়া যুক্তরাজ্যের একটি নামকরা রেস্টুরেন্টে জমকালো আয়োজনে ঈদ উদযাপন করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকে। তারা সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে সেসব অনুষ্ঠানে হাস্যোজ্জ্বল ছবি তুলেছেন, যা মুহূর্তেই নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, দেশকে সংকটে রেখে কীভাবে এসব ফ্যাসিস্ট নেতা বিদেশে এত আয়েশি জীবনযাপন করছেন। পাচারের টাকায় তারা বিলাসী জীবনযাপন করছেন বলেও মন্তব্য করছেন তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের এই নেতারা ক্ষমতায় থাকার সময় অবৈধভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এসব টাকা দিয়ে বিদেশে বাড়ি, রেস্টুরেন্ট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ নানা ধরনের সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তাদের অনেকেই কানাডারবেগমপাড়ায়পরিবারসহ আরামআয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বিলাসবহুল গাড়ি কিনে বিদেশি শহরগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

সাধারণ মানুষ বলছেন, দেশের সম্পদ লুট করে এরা আজ বিলাসী জীবনযাপন করছে, অথচ দেশের সাধারণ জনগণ প্রতিদিন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এটি চরম অন্যায় অন্যায্য।

একজন নেতা বলেন, আমাদের নেতারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে আয়েশ করছে। আমরা কষ্টে থাকব আর তারা বিলাসী জীবনযাপন করবেএটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।

দেশের সাধারণ জনগণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের এই দুর্নীতিবাজ নেতাদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা উচিত। পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে এনে দেশের অর্থনীতিতে পুনঃবিনিয়োগ করা প্রয়োজন। তারা বলছেন, ‘যেসব দুর্নীতিবাজ নেতা দেশের অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পালিয়েছেন, তাদের ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত। দেশের সম্পদ বিদেশে চলে যাওয়া মানে দেশের জনগণের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়া।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি এই নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ধরনের অর্থ পাচারের ঘটনা আরও বাড়বে। তাই অবিলম্বে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি উঠেছে সব মহল থেকে।

ভারতে বসে ঈদ বকশিশ : দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের মাথায় ছাত্রজনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঈদ উদযাপন করেছেন আওয়ামী লীগসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদসদস্যদের ছোট একটি অংশ কারাগারে। তবে বেশিরভাগ সাবেক মন্ত্রীপ্রতিমন্ত্রী এবং সংসদসদস্যরা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নির্বিঘ্নে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাকিরা আছেন দেশের ভেতরে আত্মগোপনে। গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেও গত বছরের আগস্ট পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, রাজনীতির মাঠে ফের সক্রিয় হওয়ার অংশ হিসাবে দলটির পলাতক নেতারা তাদের নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকার পরীক্ষিত কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। বিশেষ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া নেতারাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সরব এবং সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছেন। ঈদের লম্বা ছুটিতে দেশের অভ্যন্তরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তারা প্রয়োজনমাফিক অস্ত্র অর্থের জোগান দিয়েছেন ভারতে বসেই। একইসঙ্গে কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে ঈদ বকশিশের নামে টাকাও পাঠিয়েছেন।

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ৩১ মার্চ দেশের মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন। এবার ঈদ উপলক্ষ্যে টানা দিনের ছুটি পান সরকারি কর্মকর্তাকর্মচারীরা। লম্বা ছুটির ফলে রাজধানী কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের পরিকল্পনায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ছক আঁকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন আওয়ামী লীগের আরও দুই সংগঠন যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরাও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সতর্ক নজরদারির কারণে ঈদকে ঘিরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা ঠেকানো গেলেও, হুন্ডির মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন ঠেকানো যায়নি।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ