আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন নাকি বয়সের ছাপ দেখা দিচ্ছে, এর প্রথম প্রভাব পড়ে ঠোঁটে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ত্বকের চেয়ে ঠোঁটের ত্বক অনেক পাতলা হয়। এ কারণে পরিবেশগত কারণেই হোক বা পানিশূন্যতা—ঠোঁট আগে শুকাবে এবং চামড়া উঠে যাবে। ঠোঁটে অয়েল গ্ল্যান্ড থাকে না বলে প্রাকৃতিক তেল সেখানে তৈরি হয় না। এরপরও ঠোঁট নরম, কোমল ও সুন্দর রাখা সম্ভব। এ জন্য খুবই কার্যকরী একটি প্রসাধনী হচ্ছে লিপ অয়েল।
মুখের ও চুলের তেলের মতো লিপ অয়েলও আর্দ্রতা প্রদানের কাজ করে। ঠোঁটের জন্য তৈরি বেশির ভাগ তেলই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয় বলে ঠোঁট ফাটা দূর হয়, ঠোঁট হয় কোমল ও মসৃণ। নিয়মিত ব্যবহারে লিপ অয়েল ঠোঁটের গভীরে গিয়ে নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। লিপস্টিক দেওয়ার আগে পারফেক্ট বেজ হিসেবে এই তেল খুব ভালো কাজ করে।
লিপ অয়েল ও লিপ বামের মধ্যে পার্থক্য কী?
ঠোঁটের যত্নে লিপ বামের ব্যবহার অনেক বেশি। তবে বাম শুধু ঠোঁটের উপরিভাগে বসে ট্রান্সএপিডার্মালে পানি কমে যাওয়াকে রোধ করে। কারণ লিপ বামে ওয়্যাক্স থাকে, যা ঠোঁটের উপরিভাগের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ঠোঁট ওয়্যাক্স শুষে নেয় না, যার কারণে দিনে কয়েকবার করে লিপ বাম লাগাতে হয়। অন্যদিকে লিপ অয়েলে প্রাকৃতিক তেল থাকার কারণে ঠোঁটের ভেতরে ও বাইরে আর্দ্রভাব বজায় থাকে এবং ঠোঁট দেখায় উজ্জ্বল।
সুন্দর ঠোঁট পেতে আর কী কী করতে পারেন?
মুখের ত্বকের যত্ন নিয়মিত নেওয়া হলেও ঠোঁটের ক্ষেত্রে তেমন একটা যত্ন নেওয়া হয় না। অথচ চেহারার সৌন্দর্য ফুটে উঠতে পারে ঠোঁটের যত্নের কারণেও। সব সময় যেন ঠোঁট সুন্দর দেখায়, সে জন্য মেনে চলতে হবে সহজ কয়েকটি উপায়—
প্রতিদিনের কিছু অভ্যাসে বদল
অনেকেই বারবার জিব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেন অথবা চামড়া টানতে থাকেন। এতে ঠোঁট আরও শুষ্ক হয়ে যায়, চামড়া উঠতে থাকে। এই অভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। যেসব লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়ে যায়, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
এক্সফোলিয়েশন
আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য লিপ অয়েল খুব ভালো কাজ করে। লিপস্টিক দেওয়ার আগে প্রাইমার হিসেবে বা লিপস্টিকের ওপর গ্লসি কোট দেওয়ার জন্যও এর ব্যবহার রয়েছে। যেভাবেই লিপ অয়েল ব্যবহার করা হোক না কেন, ঠোঁট নরম ও কোমল থাকবে। তবে শর্ত হচ্ছে এ জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ঠোঁট পরিষ্কার রাখতে হবে এবং এক্সফোলিয়েট করতে হবে। ভেজা নরম ব্রাশ বা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে ঠোঁটের মৃত চামড়া উঠিয়ে ফেলতে হবে। বাজারে এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লিপ স্ক্রাব পাওয়া যায়। চাইলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন অথবা ঘরেই চিনি ও লেবু দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন স্ক্রাব। সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্রাবিং করুন।
আর্দ্রতা
অয়েল গ্ল্যান্ড না থাকার কারণে ত্বকের তুলনায় ঠোঁট দ্রুত শুকিয়ে চামড়া উঠতে থাকে। এই সমস্যা কমাতে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সঠিক পরিমাণে আর্দ্রতা ধরে রাখা গেলে পরিবেশগত স্ট্রেস থেকে ঠোঁট সুরক্ষিত থাকবে এবং চামড়া ওঠা বা ঠোঁট ফাটার সমস্যা কমবে।
সঠিক পণ্য ব্যবহার
বাজারে অনেক প্রসাধনীর মাঝ থেকে ঠোঁটের জন্য সঠিক প্রসাধনী বেছে নেওয়া আসলেই কঠিন। এ জন্য সব সময় প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ও অর্গানিক প্রসাধনী বেছে নিন। এতে আর্দ্রতাও বজায় থাকবে, ঠোঁট হবে নরম ও কোমল, কমে যাবে বয়সের ছাপ।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম