ফেব্রুয়ারি মাসের কথা। শ্যামলী পরিবহনে চলে গেলাম হাজারিখীলের বনে। এবার এখানে আসার বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। এমন এক পাখির খোঁজে এসেছি যার দেখা পাওয়া দুর্লভ।
যে পাখির জন্য ছবি তোলার জন্য মানুষের এত অপেক্ষা সেই পাখির খোঁজে এলাম হাজারিখীলের বনে। যে লাজুক এই পাখি। কখন বের হবে বলা যায় না। বের হলেও প্রকাশ্য আসে না। সব মিলে আছি তার অপেক্ষায়। অবশেষে তার দেখা যায় অল্প কিছু সময়ের জন্য। মন ভরে ছবি তুলে ফিরলাম। বলছি কাঠ-ময়ূরের কথা।
ইংরেজিতেই এ পাখিটির নাম Grey-peacock Pheasant, বৈজ্ঞানিক নাম Polyplectron bicalcalcaratum। আইইউসিএন’র তালিকা অনুযায়ী এ পাখিটি পৃথিবীব্যাপী ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ হলেও আমাদের দেশে কাঠ-ময়ূর মহাবিপন্ন তালিকাভুক্ত পাখি।
কাঠ-ময়ূর আমাদের চিরচেনা পেখম তোলা ময়ূরের মতো অবাক করা সুন্দর না হলেও বেশ সুন্দর। পুরুষ পাখির পেখম রয়েছে। স্ত্রী পাখিটির পেখম নেই, খুব সাধারণ। দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ সেমি এবং ওজন ৭৫০ গ্রাম। দেহের তুলনায় লেজটি বেশ লম্বা।
এদের প্রজনন মৌসুম মার্চ-জুন। প্রজনন মৌসুমে দুই থেকে পাঁচটি ডিম পাড়ে। ২১-২২ দিন পর ছানা বের হয়। এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে বিভিন্ন প্রকার শস্যদানা, ফল, পোকামাকড় ও ছোট শামুক।
এ পাখিটি বাংলায় ‘মেটে কাঠ-ময়ূর’ বা ‘মেটে কাঠ-মৌর’ নামেও পরিচিত। আমাদের গৃহপালিত মোরগ-মুরগির মতো মাটিতে পা দিয়ে আঁচড় টেনে খাদ্যের সন্ধান চালায়। ‘অক-কক-কক-কক’ সুরে ডাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ও চীন পর্যন্ত এ পাখিটির বিস্তৃতি রয়েছে।