আইবিএস-এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি। চিকিৎসকরা একে ‘কোলনের কার্যকরী সমস্যা’ (functional disorder of the colon) বলে অভিহিত করেন, কারণ কোলন পরীক্ষা করে কোনো দৃষ্টিগোচর রোগের চিহ্ন পাওয়া যায় না। তবে কিছু নির্দিষ্ট উপাদান এই সমস্যার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে। নিচে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
১. অন্ত্রের পেশির গতি বা সংকোচনে সমস্যা
অন্ত্রের বিভিন্ন স্তরের পেশি খাবারকে হজমনালীর (gastrointestinal tract) মধ্য দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। আইবিএস আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়, এই পেশিগুলোর সংকোচন হয়তো স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি জোরালো বা দুর্বল হয়ে থাকে।
বেশি জোরালো সংকোচনের ফলে হতে পারে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা।
অপরদিকে, দুর্বল সংকোচনের কারণে হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং শক্ত ও শুষ্ক মলত্যাগ।
২. অন্ত্রের স্নায়ুগুলোর অতিসংবেদনশীলতা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আইবিএস আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অন্ত্রের স্নায়ুসমূহ অতিসংবেদনশীল হয়ে পড়ে, যার ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় গ্যাস বা অন্যান্য কারণে বেশি অস্বস্তি অনুভব হয়।
কিছু ক্ষেত্রে, মস্তিষ্ক ও কোলনের মধ্যে স্নায়ুবিষয়ক যোগাযোগে সমস্যার কারণেও আইবিএস-এর লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৩. অন্ত্রের জীবাণুসমূহের ভারসাম্যহীনতা বা পরিবর্তন
মানব অন্ত্রে প্রায় ১ লক্ষ কোটি অণুজীব বাস করে—যেমন: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, প্রোটিস্ট প্রভৃতি। এসব অণুজীব নির্দিষ্ট অনুপাতে অবস্থান করে এবং এই অনুপাত ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। এই জীবাণুগুলোর ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বা স্বাভাবিক জীবাণু-সংখ্যা ও প্রকারে পরিবর্তন ঘটলে, তা আইবিএস-এর জন্ম দিতে পারে।
৪. সংক্রমণ (Infections)
কিছু ক্ষেত্রে অন্ত্রে কোনো সংক্রমণ (bacterial or viral infections) ঘটলে তা আইবিএস সৃষ্টি করতে পারে।
৫. খাদ্যে বিষক্রিয়া বা গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস-এর পরবর্তী ফলাফল
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে খাবারে বিষক্রিয়া (food poisoning) বা গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস (gastric infection) হওয়ার পরপরই আইবিএস দেখা দিতে পারে।