সর্বশেষ
পর্যাপ্ত সংস্কার ও বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়: গোলাম পরওয়ার
কর্মীদের বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ সমস্যা দেশ থেকেই তৈরি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ওজন কমায় ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় তরমুজ
হৃতিকের চেয়েও নাগা স্মার্ট—সামান্থার মন্তব্যে নেটিজেনরা অবাক
বাংলাদেশকে ‘নিরাপদ’ ঘোষণা, কঠিন হতে পারে ইউরোপে আশ্রয়
আইপিএলে হঠাৎ ব্যাট মাপা শুরু হলো কেন?
অভিনয় নয়, শিল্পার কোটি কোটি টাকা আসে যে কাজ করে
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক বোট ক্লাবের সভাপতি হন বেনজীর
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, করুন আবেদন, পদ ১৮৭
বিশ্বকাপের টিকিট পেল পাকিস্তান
চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে ভারত যাচ্ছেন জেডি ভ্যান্স
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ অবৈধ ৫০৬ শ্রমিক আটক
কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় খোঁজ নিতে সহকর্মীরা গেলেন বাড়িতে, অতঃপর…
মৌসুম শেষ না হতেই পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়লো
জুমার দিন যে আমলে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়

দেশে উড়োজাহাজের টিকিটের দাম বেশি কেন

অনলাইন ডেস্ক

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে বাইরে ভ্রমণের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য থাইল্যান্ড। ঢাকা থেকে দেশটির রাজধানী ব্যাংককে যাওয়ার জন্য আগামী ১ মের উড়োজাহাজের টিকিট খোঁজ করে সর্বনিম্ন দাম পাওয়া গেল ২৩১ ডলার (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে প্রায় ২৮ হাজার টাকা)। একই দিনে ভারতের কলকাতা থেকে ব্যাংককের টিকিটের দাম ১৬৭ ডলার (প্রায় ২০ হাজার টাকা)। আর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ব্যাংককের টিকিটের দাম ১৪০ ডলার (প্রায় ১৭ হাজার টাকা)।

আবার কাজ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রধান গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। এ ছাড়া বাংলাদেশিরা নিয়মিত পবিত্র ওমরাহ পালন করতে দেশটিতে যান। ঢাকা থেকে সৌদি আরবের জেদ্দায় সরাসরি যেতে ১ মের উড়োজাহাজের টিকিটের দাম ৫৫২ ডলার (প্রায় ৬৭ হাজার টাকা)। একই দিনে নয়াদিল্লি থেকে জেদ্দার উড়োজাহাজের টিকিটের দাম ৩০৭ ডলার (প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা)।

এভাবে আশপাশের দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশ থেকে বাইরের বিভিন্ন গন্তব্যে উড়োজাহাজের টিকিটের দাম বেশি পড়ছে। এর জন্য উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর অতি মুনাফার প্রবণতাকে দায়ী করছেন টিকিট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, প্রতিযোগিতা কম থাকায় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে সুযোগ নিচ্ছে।

তবে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশে সরকারের শুল্ক-কর ও বিমানবন্দরের বিভিন্ন সেবার ফি বেশি থাকায় তাদের পরিচালন খরচ বেশি। তাই টিকিটের দাম বেশি পড়ছে।

সস্তায় উড়োজাহাজের টিকিট কাটার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিপ ডটকম। আগামী ১ মে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়া, আর ৮ মে ঢাকায় ফেরার টিকিটের (যাওয়া-আসা) খোঁজ করে সর্বনিম্ন দাম পাওয়া যায় ৪০৯ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৫০ হাজার টাকা। একই সময়ে কলকাতা থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়া-আসার টিকিটের দাম ২৭৭ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৩৪ হাজার টাকা।

অর্থাৎ কলকাতার চেয়ে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার টিকিটের দাম ১৬ হাজার টাকা বেশি। অথচ দূরত্ব প্রায় একই। তাই এখানে বেশি জ্বালানি খরচের কোনো ব্যাপার নেই। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে একই দিনে সিঙ্গাপুরের টিকিটের দাম ২০৬ ডলার (প্রায় ২৫ হাজার টাকা)।

এবার একই সাইটে আরেকটি বিষয় খতিয়ে দেখার পালা। এতে দেখা যায়, আগামী ১ মে একটি উড়োজাহাজ সংস্থার ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের টিকিটের দাম ২৭১ ডলার (প্রায় ৩৩ হাজার টাকা)। একই দিনে একই উড়োজাহাজ সংস্থার সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার টিকিটের দাম ২১২ ডলার (প্রায় ২৬ হাজার টাকা)। তার মানে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের টিকিটের ক্ষেত্রে ৫৯ ডলার (প্রায় ৭ হাজার টাকা) বেশি দাম পড়ছে।

দাম আরও যাচাইয়ে একই উড়োজাহাজ সংস্থার ওয়েবসাইটে টিকিট খুঁজে দেখা গেল, একই দিনে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের টিকিটের দাম ৩৬ হাজার ৭২৩ টাকা। আর সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার টিকিটের দাম ২৬ হাজার ৮১৭ টাকা।

টিকিট ব্যবসায় যুক্ত এজেন্সিগুলো বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টিকিট বিক্রি নিয়ে একটি চক্র তৈরি হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ নিজেই টিকিটের বেশি দাম রাখতে শুরু করে। কম দামের টিকিট আটকে রেখে বেশি দামেরটা তারা উন্মুক্ত করে দেয়। ফলে সবাই বেশি দামে কেনে। এরপর কম দামের টিকিটও বেশি দামে বিক্রি করে চক্রটি। এই প্রবণতা এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

চক্রের বিরুদ্ধে তৎপর সরকার

প্রতিবছর লাখো বাংলাদেশি কর্মী কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। অন্যদিকে এক কোটির বেশি প্রবাসী বিভিন্ন দেশে থাকেন। তাঁরা নিয়মিত ব্যবধানে দেশে বেড়াতে আসেন। তাঁরাই উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর মূল যাত্রী। অথচ প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশ খরচ হয়ে যায় উড়োজাহাজের টিকিটের পেছনে। কাজ নিয়ে কোনো দেশে যাওয়ার চাহিদা বাড়লেই সুযোগ নেয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো। গত বছরের জুনে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বন্ধের আগে দেশটিতে যেতে টিকিটের দাম এক লাখ টাকায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত বছরের শেষ দিকে শুরু হয় সৌদি আরবে যাওয়ার টিকিট নিয়ে বাণিজ্য।

টিকিটের অস্বাভাবিক দাম প্রতিরোধে গত ফেব্রুয়ারিতে ১০টি নির্দেশনা জারি করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে বিমান টিকিট আটকে রেখে বাণিজ্য করার প্রবণতা অনেক কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে কয়েক গুণ বেশি দামে টিকিট বিক্রির চক্র চাপে পড়েছে। কিন্তু এখনো অন্য দেশের তুলনায় ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক গন্তব্যে টিকিটের দাম বেশি আছে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অনুমোদিত মূল্যতালিকা অনুসারে উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রি করতে হবে। প্রবাসী কর্মীদের জন্য ছাড়ে টিকিট দিতে হবে।

টিকিটের বেশি দামের পেছনে সম্প্রতি জালিয়াতির তথ্য খুঁজে পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। তারা তদন্ত প্রতিবেদন ইতিমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। টিকিটের দাম কমানো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, টিকিটের দাম কমানো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্স কাজ করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে নিয়মিত নজরদারির কাজটি করছে বেবিচক। টিকিটের উচ্চ মূল্য ও নিম্ন মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করতে সব উড়োজাহাজ সংস্থাকে ইতিমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। টিকিটের দাম সহনীয় হলে তা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য সহায়ক হবে।

বিমানবন্দরের ফি ও শুল্ক-কর বেশি

আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় টিকিটের দাম বাড়তি হওয়ার জন্য কয়েকটি কারণকে দায়ী করছেন উড়োজাহাজ চলাচল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, অন্য দেশের চেয়ে এখানে জ্বালানি তেলের দাম বেশি। বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন সেবার ফি অনেক বেশি। মূলত একটি বিমানবন্দরের ওপর নির্ভরতা এবং একক কোম্পানি দিয়ে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড পরিচালনার কারণে একচেটিয়া ফি নির্ধারণ করে বাণিজ্য করছে বিমান। এতে উড়োজাহাজের পরিচালন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

বোর্ড অব এয়ারলাইন রিপ্রেজেনটেটিভস (বার) বাংলাদেশের সদস্যরা বলছেন, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কায় প্রতি সপ্তাহে বিদেশি উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে তাদের টিকিট বিক্রির অর্থ পাঠানো হয়। কখনো কখনো দেরি হলেও দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তা পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই অর্থ পাঠাতে ছয় থেকে সাত মাস লেগে যায়। ডলার–সংকটে কখনো কখনো এক বছরও পেরিয়ে যায়। ব্যাংকে টিকিট বিক্রির অর্থ পড়ে থাকলেও কোনো সুদ যুক্ত হয় না। এতে উল্টো খরচ বাড়ে। গত বছর ডলারের দর কম ছিল। এখন উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে টিকিট বিক্রির অর্থ পাঠানোর সময় ডলার কিনতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। এসব কারণে বাড়তি মুনাফা ধরেই টিকিটের দাম নির্ধারণ করতে হয়। তা না হলে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো লোকসানে পড়ে যাবে। তবে টাকা পাঠানোর সময় ইতিমধ্যে কমিয়ে এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজটি করে বিমান বাংলাদেশ। এ সংস্থার সূত্র বলছে, অনেক দেশের বিমানবন্দর বেসরকারি কোম্পানি বাণিজ্যিকভাবে চালায়। তারা বেশি বেশি উড়োজাহাজ সংস্থাকে আকৃষ্ট করতে নানা ‘অফার’ দেয়, ফি কমিয়ে দেয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ফি নির্ধারণ করে সরকার। আর শুল্ক-কর নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে টিকিটের দামের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা হলো মূল বিষয়। ৭০০ আসনের চাহিদার বিপরীতে ৫০০ সক্ষমতা থাকলে দাম বাড়বেই।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করে যৌক্তিক ফি নির্ধারণ করা হয়। এটি কোনো কোনো দেশের চেয়ে কম রাখা হয়। টিকিটের দাম আসলে চাহিদা ও জোগানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করে বাজার। বিমানের কোনো টিকিট এখন আর আটকে রাখার সুযোগ নেই। যে কেউ টিকিট করতে পারছেন। এতে আগের চেয়ে বিমানের টিকিটের দাম কমেছে। এ ছাড়া বিদেশে যেতে শ্রমিকদের জন্য ছাড়ে টিকিটি দেওয়া হচ্ছে।

তবে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতে টিকিটের দাম নির্ধারণের (ওঠা-নামা) কাজটি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশেষ সফটওয়্যার। তাই চাহিদা অনুযায়ী, দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ে-কমে।

অতি মুনাফার প্রবণতা

দেশের ভেতরে ও বিদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আগের চেয়ে উড়োজাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। যাত্রী পরিবহনও বেড়েছে। এতে টিকিটের দাম কমার কথা থাকলেও উল্টো তা বাড়ছে। আর ঈদের মতো যেকোনো বড় উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়তি মুনাফার প্রবণতা দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে উড়োজাহাজযাত্রা জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।

উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, যে বাজারে যত বেশি এয়ারলাইনস, তত বেশি প্রতিযোগিতা। আর বেশি প্রতিযোগিতায় টিকিটের দাম কমে যায়। সব দেশেই উড়োজাহাজ পরিবহন ব্যবসার অন্তত ৫০ শতাংশ দেশীয় কোম্পানির দখলে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যবসার ৭৫ শতাংশ বিদেশি কোম্পানির দখলে। দেশীয় কোম্পানি বাড়লে টিকিটের দাম কমত। উল্টো দেশে বিভিন্ন সময় কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা লোকসানে পড়ে সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্বের আরও অনেক উড়োজাহাজ সংস্থা এ দেশে ব্যবসা করতে আসতে চায়। কিন্তু পরিচালন খরচ বেশি থাকায় এবং টিকিটের অর্থ পরিশোধে দীর্ঘসূত্রতার জন্য তারা আগ্রহী হচ্ছে না।

উড়োজাহাজ চলাচল খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্য দেশের তুলনায় ঢাকা থেকে উড্ডয়নে খরচ অন্তত ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি। ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে যেতে যাত্রীপ্রতি কর দিতে হয় ১০ হাজার টাকার বেশি। সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফেরার সময় সে দেশে কর দিতে হয় তিন হাজার টাকার মতো। তাই স্বাভাবিকভাবেই সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার টিকিটের দাম কম। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও এমনটাই দেখা যায়।

উড়োজাহাজ পরিবহন খাত বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদ উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে টিকিটের দাম সবচেয়ে বেশি। যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বিমানবন্দরের সেবার মান সর্বনিম্ন, ফি সর্বোচ্চ। শুল্ক-কর অনেক বেশি। দেশের মধ্যে তিন হাজার টাকার টিকিটে সরকারি কর ১ হাজার ১০০ টাকা। আর বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার টিকিটে ৪০ হাজার টাকা সরকারি কর। এরপর আছে অন্যান্য ফি। টিকিটের দাম কমাতে হলে খাতটাকে এভিয়েশন-বান্ধব করতে হবে।

উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রি করার এজেন্সিগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) বলছে, জ্বালানির দাম, সরকারের ফি অন্য দেশের চেয়ে কিছুটা বেশি হতে পারে। তবে গত এক দশকে উড়োজাহাজ পরিবহন খাতটি নিয়ন্ত্রণহীন ছিল। এ সময়ে একটি গোষ্ঠীকে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতার বদলে একচেটিয়া বাণিজ্যের রাস্তা তৈরি করা হয়। ইচ্ছেমতো টিকিটের দাম নির্ধারণ করে তারা। আবার চাহিদা বাড়লেই টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিত।

আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ প্রথম আলোকে বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে সরকারের পরিপত্র জারির পর বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইনসের টিকিটের দাম কিছুটা কমেছে। বিমান কমালে বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো দাম কমাতে বাধ্য হবে। অন্য দেশের তুলনায় এখানে উড়োজাহাজের টিকিটের দাম এখনো বেশি। প্রতিযোগিতা যত বাড়বে, টিকিটের দাম তত কমবে। টিকিটের দামে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়ার সীমা বেঁধে দিতে পারে বেবিচক।

 

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ