ভারতের ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গে যখন উত্তাপ ছড়িয়েছে, সেই সময় রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে নিজের কঠোর অবস্থানের কথা জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বন্ধন দৃঢ় এবং সুদীর্ঘ দিনের।
ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন বাতিল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে গত কয়েক দিন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সে অবস্থায় আজ বুধবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের এক সভা ডাকা হয়। সেই সভায় বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। সেখানেই মমতা এ কথা বলেন।
সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দিকে আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সম্প্রীতিকে ওরা ভাঙতে পারবে না।’
আজ বিজেপির উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘ওরা মেরুকরণ করে বাংলার ক্ষমতায় আসতে চায়। তাই বিজেপির প্ররোচনায় কান দেবেন না। বিজেপির জনবিরোধি আইন আমরা সংবিধান সংশোধন করে পাল্টে দেব। অপেক্ষা করুন। আগামী এক বছর ধৈর্য ধরতে হবে। এরপর অনেক পরিবর্তন হবে দিল্লিতে।’
মমতা বলেন, ‘আবার নতুন সরকার হবে। যেদিন বিজেপি ক্ষমতা থেকে চলে যাবে, যে আইন জনবিরোধী করেছে, সেই আইন বদলাতে হবে। যদি সংকট সৃষ্টি হয়, আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
ওয়াক্ফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সহিংসতা হয় বেশি।
মুর্শিদাবাদের সহিংসতা প্রসঙ্গে আজ মমতা বলেন, ‘বিজেপি কেন বাইরে থেকে লোক এনে এখানে গন্ডগোল পাকাবে? কেন এজেন্সির মাধ্যমে অশান্তি লাগাবে? আমি জেনেছি, বাচ্চা ছেলেদের হাতে ৫–৬ হাজার টাকা দিয়ে ইট ছোড়া হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে কাদের ঢোকানো হয়েছে, তা খতিয়ে দেখব।’
মমতা বলেন, ‘আইন বাতিলের দাবি তুলুন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দরবারে। আমরা যুগ যুগ ধরে এই রাজ্যের মানুষকে একসঙ্গে রেখেছি। আমাদের ওপর ভরসা রাখুন, এই রাজ্যে আমরা হিন্দু–মুসলমান একসঙ্গে থেকেছি, একসঙ্গে থাকব, আমাদের সম্প্রীতির এই মিলন–বন্ধন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে, চলবে। বিজেপি ফাটল ধরাতে পারবে না।’
মমতা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আরজি জানান। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে রাস্তায় না করে বদ্ধ জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করুন। প্রয়োজনে দিল্লিতে গিয়ে প্রতিবাদ করা হোক।’
মমতা বলেন, ‘আজ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আর অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু মুখ বন্ধ করে আছেন। পরিকল্পনা করে দাঙ্গা করানো হয়েছে। আর এর জন্য পুরোটা দায়ী কেন্দ্রীয় সরকার। মমতা বলেন, ‘আমরা এই বাংলাকে রক্তাক্ত করতে দেব না। এখন দেশের সব এজেন্সি তো অমিত শাহর হাতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখন এজেন্সি নিয়ে রাজনীতি করছেন।’