সর্বশেষ
‘এক বাক্সে ভোট পাঠাতে’ সমমনা ৫ ইসলামি দলের ঐকমত্য
ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক
কুয়েটে ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, হলও খুলেছে
কাঠগড়ায় ফুঁপিয়ে কাঁদলেন তুরিন আফরোজ, সান্ত্বনা দিলেন ইনু
কুয়েটে শিক্ষা উপদেষ্টা, অনশনে অনড় শিক্ষার্থীরা
ইংল্যান্ড সফরেও ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাই
আসামি গ্রেফতারে লাগবে না ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি: হাইকোর্ট
পেহেলগাম পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল পাকিস্তান
জমে উঠছে ‌‘টাকার ডাক্তার’ ক্লিনিক
পোপ ফ্রান্সিসের নামে স্টেডিয়াম হচ্ছে আর্জেন্টিনায়
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়তে ওসিকে ছাত্রদল নেতার সুপারিশ
কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবক নিহত
টিকটকে পরিচয়ে প্রেম, মেয়ে স্ত্রী’র দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে 
কেন নারীদেরই বেশি রক্তশূন্যতা হয় কেন
একই সঙ্গে ফ্যাশন আর আবেদনে দশে দশ এই অভিনেত্রী, বলছে তাঁর সাম্প্রতিক যত লুক

জমে উঠছে ‌‘টাকার ডাক্তার’ ক্লিনিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

খান ইউনিসের জনবহুল বাজারের এক কোণে বসে আছেন আমজাদ নাসার। সঙ্গে নেই কোনো পণ্যসামগ্রী। কিছুই বিক্রি করছেন না তিনি। কিন্তু সামনে দেখা যাচ্ছে ছেঁড়া, বিবর্ণ, ছিদ্রযুক্ত এবং বিকৃত কিছু ব্যাংকনোট। সেগুলো সারিয়ে ব্যবহার উপযোগী করাই এখন তার কাজ। যুদ্ধ শুরু আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রশাসনিক কর্মচারী এখন ‘টাকার ডাক্তার’। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জমে উঠেছে নাসেরের টাকা মেরামত করার ক্লিনিক। ছেঁড়া-ফাটা নোট ঠিক করে সংসারের হাল ধরছে সে। ১০০-শেকেলের (৩২৯৩.৪০ টাকা) নোট মেরামতের জন্য মাত্র দুই শেকেল (৬৫.৮৭ টাকা) চার্জ (পারিশ্রমিক) করেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় বন্ধ রয়েছে ব্যাংকিং পরিষেবা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে আর্থিকখাত। অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে নতুন মুদ্রা প্রবেশ করছে না। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলমান থাকায় বেশিরভাগ নোটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে নতুন পেশা শুরু করেছে নাসের। এভাবেই শুরু হয় টাকা নিয়ে আমজাদের গল্প। স্বচ্ছ টেপ নিয়ে ছেঁড়া ফাটা নোটগুলো জোড়া দিতে শুরু করেন তিনি। এছাড়াও কিছু বিবর্ণ নোটগুলো আঠা ব্যবহার করে যা সংখ্যাগুলোকে অস্পষ্ট করে না। এ কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে কোনো অর্থ নেননি নাসের। কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবহার্যয আঠা কেনার কারণে এখন সে এটিকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দৈনিক তার গ্রাহকের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।

নিজের নতুন পেশা নিয়ে নাসের বলেছেন, ‘যুদ্ধের শুরুতে মুদ্রার মান ছিল ভালো কিন্তু এরপর নোট বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বিকল্পের অভাবে মানুষ একই নোট সম্পূর্ণরূপে জীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত চালাতে থাকে। আমি আশা করি ব্যবসায়ীরা মেরামত করা নোটগুলো গ্রহণ করবে এবং সেগুলো পশ্চিম তীরে প্রচার করা হবে কেননা সেখানে কোনো ব্যাংকিং সংকট বা নগদ তারল্যের অভাব নেই।’ গাজা নোট মেরামত যে এতটা জনপ্রিয় হতে পারে তা কেউ কল্পনাও করেনি। বর্তমানে নাসারের মতো কয়েক ডজন মানুষ এই পেশায় কাজ করেন। তবে শুধু টাকাই নয় আরও এক ভিন্নধর্মী পেশার দেখা মিলেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায়। লাইটার ঠিক করা। নাসেরের স্টলের খানিকটা সামনেই বিলাল আরাফাতে তার দোকান। ভাঙা লাইটার মেরামত ও খালি লাইটারে গ্যাসভর্তি করার কাজ করে সে। বিলাল বলেন, ‘যদি কেউ আমাকে যুদ্ধের আগে বলত যে আমি লাইটার মেরামত করব, আমি উচ্চস্বরে হেসে উঠতাম। চারটি লাইটার আগে এক শেকেলে বিক্রি হতো। কে সেগুলো ঠিক করতে বিরক্ত করবে? কিন্তু যুদ্ধ সবকিছু উলটে দিয়েছে। এখন একটি লাইটারের দাম এক শেকেলের এক চতুর্থাংশ থেকে দশ শেকেলে বেড়েছে যা প্রায় চলি্লশগুণ’।

এ বিষয়ে গাজার আল-আজহার ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সামির আবু মুদাল্লালা বলেছেন, ‘এমন জরুরি পরিস্থিতিতে এই বিষয়টি ‘অর্থনীতি’ নামে পরিচিত। লাইটার বা একটি নোট মেরামত করা সহজ কাজ নয়। বরং, এটি একটি ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া যা একটি অবরুদ্ধ সমাজের মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক চক্র বজায় রাখতে অবদান রাখে।’

 

সূত্র: যুগান্তর

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ