যৌনস্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। নারী–পুরুষ, উভয়ের ক্ষেত্রেই যৌনরোগের আশঙ্কা সমান। রোগের উপসর্গ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে তা বন্ধ্যাত্বের কারণও হয়ে উঠতে পারে। যেমন গনোরিয়া রোগ বাসা বাঁধলে গোড়ায় তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে এর উপসর্গগুলো প্রকট হতে শুরু করে। সিফিলিস, গনোরিয়ার মতো ‘সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেট ডিজিজ’ বা যৌনরোগ নির্মূল করতে পারে এমন অ্যান্টিবায়োটিক আসতে চলেছে বাজারে।
জেপোটিডাসিন নামে এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মূত্রনালির সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হত। এই ওষুধটির উপাদানেই পরিবর্তন এনে নতুনভাবে তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির গবেষকেরা জানিয়েছেন, ওষুধটি এখন যৌনরোগের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা যাবে। ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। বলা হয়েছে, গবেষণাগারে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে সুফল পাওয়া গেছে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত পুরুষ ও নারীকে ওষুধটি সেবন করে দেখা গেছে, তাদের অসুখ প্রায় ৯৩ শতাংশ নির্মূল হয়েছে।
নিসেরিয়া গনোরি নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারণে গনোরিয়া রোগ হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্রের মাঝামাঝি ‘স্পটিং’ দেখা দিতে পারে। প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাভাব হয়। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এই রোগ জরায়ু এবং ফ্যালোপিয়ন টিউবেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং ‘টিউবাল প্রেগন্যান্সি’র আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। রোগটি হলে মেয়েদের সন্তান ধারনে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা অনুভব হয়। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে শুক্রাণু উৎপাদনও কমে যেতে পারে।
গনোরিয়া আছে, এমন ৬২৮ জন নারী ও পুরুষের ওপর ওষুধটির পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষক কেটি সিঙ্কা। তিনি জানান, মাস কয়েক ওষুধটি সেবনে দেখা গেছে, রোগ ৯০ শতাংশের বেশি সেরে গেছে। পাশাপাশি, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়েছে। তবে পরীক্ষা চলছে। সব ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি ওষুধটি বাজারে আনা হবে।