প্রশ্ন: ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে কি তালাক হবে? না হলে এর কারণ কী?
উত্তর: তালাকের সঙ্গে ইনশাআল্লাহ বললে তালাককে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার সঙ্গে শর্তযুক্ত করা হয়। তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দেওয়ার অর্থ হল আল্লাহ যদি চান তাহলে স্ত্রী তালাক।
এই শর্তটি পাওয়া যাওয়ার বিষয়ে যেহেতু নিশ্চিত হওয়া যায় না তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে তালাক কার্যকর হয় না।
ইমাম মুহাম্মাদ রহ. তার কিতাবুল আছারে ইবরাহীম নাখায়ী রহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, কোনো ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে ইনশাআল্লাহ তুমি তিন তালাক। তার এ কথার দ্বারা স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হবে না। –কিতাবুল আছার ৫১১
ইমাম আবদুর রাযযাক রহ. তার মুসান্নাফে অনুরূপ বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, আবু হানীফা এমনই বলতেন, মানুষরাও এ মতের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমার মতও এটিই।
গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে কি পতিত হয়?
অনেকে জানতে চান স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে কী তালাক দেওয়া যায় বা স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় কী তালাক কার্যকর হয়।জেনে রাখা ভালো স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্ত্রী তালাক দেওয়া যায়।
সালিম (রহ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. তার স্ত্রীকে হায়েজ বা ঋতুস্রাব চলাকালীন তালাক দিলে ওমর রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এর বিধান জানতে চাইলেন। তখন তিনি বললেন: ‘তাকে তার স্ত্রীকে ফিরত নেওয়ার হুকুম দাও। অতঃপর সে যেন তাকে তুহরে (পবিত্র অবস্থা চলাকালে) অথবা গর্ভাবস্থায় তালাক দেয়।’
সুনান তিরমিযিতে এসেছে: গর্ভবতী স্ত্রীলোক যে কোন সময়ই তাকে তালাক দেওয়া যায়। (সুনানে তিরমিজী, অধ্যায়: ১১/ তালাক ও লিআন, পরিচ্ছদ: ১. তালাকের সুন্নতি পদ্ধতি, ১৭৭৬ নং হাদিসে আলেমদের অভিমত)
শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ.) বলেন: ‘গর্ভবতীর উপরে তালাক পতিত হবে—আলেমগণ এ বিষয়ে সকলেই একমত; এ বিষয়ে কোন দ্বিমত নেই।’
তবে তালাক পতিত হলেও তার ইদ্দতের মেয়াদ হল সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ অন্যত্র বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইল তাকে অবশ্যই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে অন্যত্র বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন: গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। (সুরা তালাক: ৪)
–মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১১৩২৭; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৫/৮৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৪৬০