সর্বশেষ
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে আইনি নোটিশ
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে পূর্ণ সমর্থন কাতার প্রধানমন্ত্রীর, সহায়তার আশ্বাস
র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালকের দায়িত্বে ইন্তেখাব চৌধুরী
ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ একগুচ্ছ পাল্টা পদক্ষেপ নিল পাকিস্তান
সাবেক উপমন্ত্রী জ্যাকবের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কাশ্মীরে হামলা: ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ সম্পর্কে যা জানা গেল
অবৈধ আট গেট গুঁড়িয়ে দিল ডিএনসিসি
জিয়াউল আহসানের জমি, ফ্ল্যাট ও বাড়িসহ নয়টি ব্যাংক হিসাব জব্দ
গরমে কাঁচা আম খাওয়ার ১২ স্বাস্থ্য উপকারিতা
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা বাড়ছে!
কমিউনিটি ক্লিনিকে পরিবর্তন আসছে
কৌশানির সাফল্যে, হিংসায় জ্বলছেন বনি
ট্রাক উল্টে বসতঘরে, ঘুমন্ত নারীর মৃত‌্যু
যাদের নেতৃত্বে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পাঁয়তারা আ.লীগের
সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না নির্বাচন কমিশন : সিইসি

কাশ্মীরে হামলা: ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ সম্পর্কে যা জানা গেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। এই ঘটনায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও বহু আহত হওয়ার পর ভারতীয় সরকারের কাশ্মীর নীতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

হামলার খবর যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টেলিভিশনের পর্দায় ছড়িয়ে পড়েছে, তখন টেলিগ্রাম বার্তায় হামলার দায় স্বীকার করেছে সশস্ত্রগোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। সুত্র: আল-জাজিরা।

২০১৯ সালে কাশ্মীর অঞ্চলে স্বল্প-পরিচিতি সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। যদিও ভারত থেকে কাশ্মীরকে আলাদা করতে লড়াই করা সশস্ত্র বিদ্রোহীরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্যটকদের ওপর তেমন কোনো হামলা চালায়নি।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে পেহেলগামের পর্যটনকেন্দ্র ঘুরতে আসা পর্যটকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বন্দুকধারীরা পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। নিহতদের সকলেই পুরুষ এবং বহিরাগত পর্যটক ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ওই দিনই শ্রীনগরে পৌঁছান এবং গোটা অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীরা শোকবার্তা জানান এবং এই হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, এই জঘন্য হামলার পেছনে যারা আছে, তাদের কাউকেই ছেড়ে দেওয়া হবে না, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। তবে দায় স্বীকার করা সশস্ত্র গোষ্ঠী টিআরএফ এর হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন।

টিআরএফ

‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) মূলত নতুন প্রজন্মের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বা ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির পর এই জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থেকে গোষ্ঠীটি নিজেদের পরিচিতি গড়ে তোলে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, টিআরএফ আসলে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যা পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছে। টিআরএফ তাদেরই ছদ্মবেশী রূপ, যা কাশ্মীরি জাতীয়তাবাদের নামে ভারতে সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে।

টিআরএফের মূল দাবি

এদের মূল দাবি, কাশ্মীরকে ভারতের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনিক কাঠামোকে দুর্বল করতে তৎপর এই গোষ্ঠী। টিআরএফ এক বার্তায় জানিয়েছে, তারা বহিরাগতদের কাশ্মীরে স্থায়ী আবাসন অনুমোদনের বিরোধিতা করে। যদিও মঙ্গলবারের নিহতরা কেউ কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট-টিআরএফ নিয়মিতভাবে টার্গেট কিলিং এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যার মতো হামলার দায় স্বীকার করে আসছে। এদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে রাজনৈতিক কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা সদস্য এবং ভারত সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা ব্যক্তিরাই নিহত হয়েছে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২৪ সালের জুনে সংগঠনটি জম্মুর রেয়াসি জেলায় হিন্দু তীর্থযাত্রী বহনকারী একটি বাসে হামলার দায় নেয়। ঐ হামলায় ৯ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হন। হামলার পর বাসটি একটি গভীর খাদে পড়ে যায়, যা সেই সময় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।

গোপন আস্তানা হালকা অস্ত্রের ব্যবহার
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, টিআরএফ বর্তমানে কাশ্মীরের পার্বত্য অঞ্চলে গোপন ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। সংগঠনটি ছোট ও হালকা অস্ত্র ব্যবহার করে হঠাৎ করে আক্রমণ চালিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার কৌশল অনুসরণ করছে।

পর্যটনখাতে তীব্র প্রভাব
পেহেলগামের ভয়াবহ হামলার পরদিন থেকেই কাশ্মীরের পর্যটন খাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক পর্যটক তাদের পূর্ব নির্ধারিত বুকিং বাতিল করেছেন এবং দ্রুত অঞ্চল ত্যাগের চেষ্টা করছেন। শ্রীনগর বিমানবন্দরের পথে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে এবং বিমানের টিকিটের দাম এক লাফে তিনগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে।

পেহেলগামের এই হামলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের কাশ্মীর নীতির ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার অঞ্চলটিতে “স্বাভাবিকতা” ফিরে আসার দাবি করে আসছে। পর্যটনের প্রসার ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে একটি স্থিতিশীল চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা ছিল সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। তবে মঙ্গলবারের হামলার পর সেই “স্বাভাবিকতা”-র ভাবমূর্তি গভীর সংকটে পড়েছে।

 

সূত্র: নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ