বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দল হিসাবে যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকার-সেটাই আছে। জোট হওয়ার মতো প্রক্রিয়া যখন এসে যাবে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
সম্প্রতি রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার যুগান্তরকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎকারে দেশের চলমান পরিস্থিতি, সংসদ নির্বাচন, সংস্কার, নির্বাচনি প্রস্তুতি, বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক, জোট, দলের নিবন্ধন ও আওয়ামী লীগ ইস্যুসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের পথে হাঁটবে। ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। মাঠে-ময়দানে গণসংযোগ, জনগণের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানো ও অন্তর জয় করার যে দায়িত্ব-সে ক্ষেত্রে যারা প্রার্থী হিসাবে সম্ভাব্য আলোচনায় এসেছেন তাদের দিয়েছি। বর্তমানে দলের নিবন্ধনের বিষয়টি আদালতে পেন্ডিং আছে। আশা করি ন্যায়বিচার পাব এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক পাব।
তিনি মনে করেন, যথেষ্ট জনপ্রিয়তার অবস্থানে জামায়াত এখন সময় পার করছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণ মতামত দিলে সেই ফলাফলেরই প্রতিফলন ঘটবে। জনগণ যদি ভোট দিয়ে জামায়াতকে রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্বে দেয়, তাহলে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাষ্ট্র গঠন করা তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, লন্ডনে কোনো বৈঠক হয়নি। উনি (খালেদা জিয়া) তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আমরা দীর্ঘ প্রায় ২৫-৩০ বছর একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। উনি রাজনৈতিক সহকর্মী, একই সঙ্গে খুবই অসুস্থ। আমরা যেমন মজলুম, উনিও মজলুম। জামায়াতে ইসলামীর আমির লন্ডনে গিয়েছিলেন অন্য কাজে, ওই সময় উনার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে গিয়েছেন। জাস্ট এটা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। কুশলবিনিময় করে চলে এসেছেন। ওখানে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি।
ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে আপনারা জোট গঠনের চেষ্টা করছেন, অগ্রগতি কত দূর? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অগ্রগতি সন্তোষজনক। আমরা আশাবাদী, নির্বাচন ইস্যুতে ইসলামি দলগুলোর ভেতরে একটা সমঝোতা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, এটা আমরা আগেই বলেছি, নিষিদ্ধ করার কাজ তো সরকারের। জনগণের প্রত্যাশা যেটা, সেটা সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। দল নিষিদ্ধের কাজ তো সরকার করে, কোনো পার্টি তো নিষিদ্ধ করে না।
আগামী নির্বাচনে জামায়াতের বড় চ্যালেঞ্জ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ হলো নির্বাচন নিরপেক্ষ করা। মানুষ নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে। পেশি শক্তি এবং কালোটাকার ছোবল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। এটা দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে জামায়াতের চ্যালেঞ্জ হলো-জনগণ যদি ভোট দিয়ে আমাদের রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্বে দেয়, তাহলে জনগণের প্রত্যাশার যে রাষ্ট্র, সেটা গঠন করাটা আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সূত্র: যুগান্তর