বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। বাড়ে ক্রেতার হাহাকার। বেতন বাড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে জিনিসপত্রের দাম। বাজারের এই নিত্য চিত্র। তবু ঈষৎ সান্ত্বনা, মাছের চচ্চড়ি, মুগ ডালে একখানা আম ফেলে উদোরপূর্তি করা যায়।
কিন্তু এমন উদাহরণ কোথায় পাবেন, যেখানে বেতন বাড়লে, পারলে আরও খারাপ খেলা যায়। ঠিক ধরেছেন। ক্রিকেট-উইকেট, রান-টান নিয়ে যারা একটু-আধটু ভাবেন, গত পরশু থেকে তারা উদাস-হতাশ।
সিলেটে কী কাণ্ডটাই না করলেন নাজমুল হোসেনরা। শান্তভাবে ভ্রান্ত খেলে পাঁচদিনের টেস্ট হারলেন চারদিনে। তা-ও কাদের বিপক্ষে। টেস্ট দলের র্যাংকিংয়ে যারা বাংলাদেশের চেয়ে তিন ধাপ নিচে, সেই জিম্বাবুয়ের কাছে। ১২ দলের টেস্ট র্যাংকিংয়ে যারা তলানিতে, তাদের কাছে নিজেদের পাড়ায় হারায় শান্তদেরও নাকি মন খারাপ।
তা মন যতই খারাপ হোক, ব্যাংক ব্যালেন্স তো বাড়ল। টাইগাররা পারল কি পারল না, হারল। সমস্যা হলো, হেরে-টেরে সংবাদ সম্মেলনে আসা অধিনায়ককে ছাড়ল না সংবাদকর্মীরা।
কী দরকার ছিল এক সাংবাদিকের এমন বেফাঁস প্রশ্ন করা, ‘আপনাদের ম্যাচ ফি বেড়েছে। বেতনও বেড়েছে। সুযোগ-সুবিধাও ঢের। আর কী করলে টেস্টে উন্নতি করা সম্ভব?’
স্বভাবতই প্রশ্নটা ভালো লাগেনি অধিনায়কের। না লাগারই কথা। প্রথমত, পুরুষের বেতন আর নারীর বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই।
দ্বিতীয়ত, কী আর এমন ম্যাচ ফি বেড়েছে। ৩৩ শতাংশের একটু বেশি, এই যা। আগে ছিল ম্যাচপ্রতি ছয় লাখ। এখন আট লাখ।
শান্ত তবু প্রশ্নটা শুনে অশান্ত হলেন না। ব্যাকফুটে গেলেন না। আবার ফ্রন্টফুটে এসে ড্রাইভও করলেন না। শুধু বললেন, ‘বেতন বাড়ায় আপনারা মনে হয় খুশি না…।’
কারও বেতন-টেতন বাড়লে হিংসা-টিংসা করা একদমই অনুচিত। কিন্তু বেতন বাড়লে যে দায়িত্বও বাড়ে, একথা মুশফিক-মিরাজদের কে বোঝাবে। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা একটি টেস্ট ম্যাচ খেলে ২০০০ ডলার পান (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা)। সেই তারা এ দেশে খেলতে এসে টাইগারদের ‘বিড়াল’ বানিয়ে দেন। কী আজব দুনিয়া! আড়াই লাখের কাছে হেরে যায় আট লাখ!