সর্বশেষ
১০ বছরে অবৈধ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৭ লাখ বাংলাদেশি
সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন চাইলেন জামায়াতের আমির
ঝলমলে আমেজে দিশা পাটানির যত গ্ল্যাম লুক
পাক অভিনেতার প্রশংসা করে তোপের মুখে বলিউড অভিনেত্রী
দেশে স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন হচ্ছে শিগগিরই
ভারতকে ‘চূড়ান্ত জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রীর
৮ মাসে ২৬ রাজনৈতিক দলের উত্থান, উদ্দেশ্য কী?
ভারতের কাছে জড়িত থাকার অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার
ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’
অন্য অভিবাসীদের আটকে দিলেও দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আনতে চান ট্রাম্প
নির্মাণ সামগ্রী খোলা স্থানে রাখায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জরিমানা
সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৯৯ পদে চাকরি, ১৮ বছরেই আবেদনের সুযোগ
‌‘মাথায় ক্যামেরা, খুনের পর সেলফি তুলেছিল তারা’
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন ক্রিকেটাররা, থাকবেন তামিমও
আজ যেমন থাকবে ঢাকার আকাশ

১০ বছরে অবৈধ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৭ লাখ বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্ক

পরিসংখ্যান বলছে— বিগত ১০ বছরে বৈধ পথে বিদেশ গিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ হয়ে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন প্রায় ৭ লাখ অভিবাসী। এদিকে বিদেশ যেতে বাংলাদেশি কর্মীদের গড়ে খরচ হয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে অবৈধ হয়ে ফেরত আসা প্রবাসীদের পরিবারের অন্তত ৩৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভিসা ফি, বিমান ভাড়া বাদ দিয়ে ব্যয় হওয়া অর্থের পুরোটাই রিক্রুটিং এজেন্ট কিংবা দালালদের পকেটে ঢুকেছে। আর ভাগ্য ফেরানোর আশায় বিদেশ যাওয়া শ্রমিকরা ফিরছেন পরিবারের বোঝা হয়ে।

জানা যায়, কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের ইকরামুল হক ৫ লাখ টাকা খরচ করে ২০২৩ সালে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। নিজের সঞ্চয়, ঋণ ও আত্মীয়দের থেকে ধার করা টাকা তুলে দেন দালালের হাতে। যদিও অবৈধ হয়ে জেল খেটে দুই বছরের মধ্যেই দেশে ফেরত আসতে হয়েছে তাকে।

ইকরামুল হক বলেন, ‘ফ্রি ভিসায় সৌদি আরব গিয়েছিলাম। দালালদের কথা ছিল আকামা হবে, ভালো চাকরি পাওয়া যাবে। কিন্তু সবকিছুই ছিল মিথ্যা প্রলোভন। সৌদি যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অবৈধ হয়ে যাই। এরপর জেল খেটেছি। শূন্য হাতে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে।’

বৈধ পথে বিদেশগামীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এক দশকে ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ জন বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে বিদেশ গেছেন। সরকারি এ সংস্থার কাছে বিদেশগামীদের সংখ্যা থাকলেও কতজন ফিরে আসছেন, তার কোনো তথ্য নেই। তবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যমতে, এ ১০ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ হয়ে আউটপাস নিয়ে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭০ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। বৈধ পথে বিদেশ গিয়ে অবৈধ হয়ে ফিরে আসাদের এ সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে আউটপাস নিয়ে দেশে ফেরত আসেন ৫৬ হাজার ৬৭৪ বাংলাদেশী। পরের বছর সংখ্যাটি কমে ৪১ হাজার ৬২৬ জনে নেমে আসে। এরপর ২০১৭ সালে ৫০ হাজার ১৬৩, ২০১৮ সালে ৬৮ হাজার ৮১২, ২০১৯ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৫ ও ২০২০ সালে ৪৫ হাজার ৯৮৪ জন বাংলাদেশী বিদেশ থেকে শূন্য হাতে ফিরেছিলেন। এ সংখ্যাটি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায় গত কয়েক বছরে। ২০২১ সালে আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরে আসেন ৭২ হাজার ৬০৯ জন কর্মী। ২০২২ সালে এ সংখ্যা বেড়ে হয় ৯৭ হাজার ৯১৩। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ৮৬ হাজার ৬২১ ও ২০২৪ সালে ৮৮ হাজার ৮৬৮ জন বৈধ অভিবাসী শ্রমিক অবৈধ হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

বাংলাদেশের তুলনায় প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তানসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য কিংবা প্রধান শ্রমবাজারগুলোতে অভিবাসন ব্যয় খুবই কম। দেশের ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন বায়রার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রধান শ্রমবাজারগুলোতে একজন কর্মী যেতে গড়ে ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সে হিসাবে আউটপাস নিয়ে ফিরে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় অন্তত ৩৪ হাজার কোটি টাকা। দেশে সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা ২ হাজার ৭৯৭। এর বাইরে দালালদের হাত ধরেও অনেকে বিদেশ যাচ্ছেন। ভিসা ফি, বিমান ভাড়া বাদ দিয়ে ব্যয় হওয়া অর্থের পুরোটাই এসব রিক্রুটিং এজেন্ট কিংবা দালালদের পকেটে ঢুকেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশ থেকে ফেরত পাঠানো এসব কর্মী সরকারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই বৈধ পথে গিয়েছিলেন। কিন্তু যাওয়ার পর তাদের অনেকে বৈধ কর্মসংস্থানের সুযোগ হারান। এরপর তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া বিদেশে অবস্থান অব্যাহত রেখেছিলেন। অনেকে প্রতারণার শিকার হয়েও এমন অবস্থায় পড়েন। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কাজ না পেয়ে ছয় মাসের মধ্যে দেশে ফেরার ঘটনা রয়েছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও ওমান। সৌদি আরব থেকে ২০২৪ সালে আউটপাসে দেশে ফেরত পাঠানো হয় ৫০ হাজার ২৩১ জনকে। ২০২৩ সালে ফেরত আসেন ৫৮ হাজার ৮৯৭ প্রবাসী। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২০২৪ সালে ৭ হাজার ২২৭, ২০২৩ সালে ৭ হাজার ৯২৩ জন ফেরত আসেন। মালয়েশিয়া থেকে ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৯৭১, ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৮, ওমান থেকে ২০২৪ সালে ফেরত পাঠানো হয় ৮ হাজার ৫১, ২০২৩ সালে ৬ হাজার ৩৪৭, কুয়েত থেকে ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৪২৩, ২০২৩ সালে ১ হাজার ৮৬১, কাতার থেকে ২০২৪ সালে ফেরত পাঠানো হয় ৩ হাজার ১২৭ ও ২০২৩ সালে ২ হাজার ৯৭ জনকে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা জানান, অবৈধ হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারই দেশে ফেরার সুযোগ করে দেয়। নিয়োগকারী অথবা কোম্পানি টিকিট কেটে কর্মীদের দেশে পাঠিয়ে দেয় অথবা কর্মী নিজেই টিকিটের খরচ বহন করে। এভাবে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের বেশির ভাগেরই দরকারি ডকুমেন্টস নেই। অনেকে কাজ পাননি, কারো ভিসা-পাসপোর্ট কিছুই নেই। আবার অনেকে অপরাধ করায় দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। মূলত এভাবেই প্রতি বছর হাজার হাজার প্রবাসীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) চেয়ারপারসন ড. তাসনীম সিদ্দিকী  বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এ খাতকে নিয়মের মধ্যে আনা যায়নি। এর অন্যতম কারণ রিক্রুটিং এজেন্সির সদস্যরা অনেকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন। তারা নিজেরাই যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন। তারা যেভাবে বিদেশে পাঠান সে পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যেই গলদ থাকে। গন্তব্য দেশে যে মধ্যস্বত্বভোগী গড়ে উঠেছে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য টাকা আয়, কর্মীদের কাজ দেয়া নয়। যে কারণে কর্মীরা কাজ না পেয়ে ফিরে আসছেন। মূলত এটি একটি শ্রেণীর অর্থ লুটপাটের উপায়। আর এ অর্থ যেহেতু পরবর্তী সময়ে আমলা ও নীতিনির্ধারকদেরও পকেটে যাচ্ছে, এ কারণে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই স্টাডি করে দেখেছি, অনেক অভিবাসী শ্রমিক তিন মাস, ছয় মাস, আট মাসের মাথায় দেশে ফেরত আসছেন। একটি চক্র গড়ে উঠেছে, যারা তিন মাসের জন্য কোনো একটা কাজ দেয়। যখন ধরা পড়ে দেশে ফেরত আসে। তারা আবার নতুন করে তারা কর্মী নেয়। এটি মানব পাচারের মতোই একটি ব্যবসা। এ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।’

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারের নির্ধারিত অভিবাসন খরচ সৌদি আরবে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, মালয়েশিয়ায় ৭৮ হাজার ৯৯০, সিঙ্গাপুরে (প্রশিক্ষণসহ) ২ লাখ ৬২ হাজার ২৭০, লিবিয়ায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০, বাহরাইনে ৯৭ হাজার ৭৮০, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ লাখ ৭ হাজার ৭৮০, কুয়েতে ১ লাখ ৬ হাজার ৭৮০, ওমানে ১ লাখ ৭৮০, ইরাকে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৪০, কাতারে ১ লাখ ৭৮০, জর্ডানে ১ লাখ ২ হাজার ৭৮০, মিসরে ১ লাখ ২০ হাজার ৭৮০, মালদ্বীপে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ ও লেবাননে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা।

যদিও দালালের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়া কর্মীদের সরকার নির্ধারিত ফির পাঁচ গুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক নথিতেও বিষয়টি উঠে আসে। মালয়েশিয়া যেতে ৬৭ হাজার ৩৮০ জনের কাছ থেকে বাড়তি ১ হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির ৩২ জন মালিক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী ও বেনজীর আহমদ রয়েছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) অভিবাসন ব্যয় জরিপেও উঠে এসেছে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার প্রমাণ। জরিপে বলা হয়, একজন অদক্ষ অভিবাসী কর্মীর গড় নিয়োগ ব্যয় ৪ লাখ ৭৮ হাজার এবং দক্ষ কর্মীর ৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

আউটপাস নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসাদের একজন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার চান মিয়া। দেশটির একটি কোম্পানির অধীনে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন তিনি। বৈধ পথে মালয়েশিয়া গেলেও ভিসার মেয়াদসংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে অবৈধ হয়ে যেতে হয় তাকে। পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল খাটেন এক মাস।

বৈধ পথে মালয়েশিয়া গিয়ে অবৈধ হয়ে জরিমানা দিয়ে দেশে ফেরা নরসিংদীর শরীফ হোসেনের গল্পটাও একই সূত্রে গাঁথা। সম্প্রতি দেশে ফিরে আসা এ অভিবাসী শ্রমিক জানান, ‘দালালের মাধ্যমে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি কোম্পানির ভিসায় মালয়েশিয়ায় যাই। ব্যয় হয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয় কনস্ট্রাকশনের। কিন্তু সেটিও করা গেছে মাত্র তিন মাস। এরপর বেকার হয়ে পড়লে কিছুদিন হোটেলে রাখা হয়। এভাবে বেকার বসিয়ে রাখার প্রতিবাদ করলে তুলে দেয়া হয় পুলিশের হাতে। শেষে ৫ হাজার রিংগিত (১ লাখ ৪০ হাজার টাকা) জরিমানা দিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে। এক্ষেত্রে বিমান ভাড়াও নিজের পকেট থেকে পরিশোধ করতে হয়েছে।’

আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে অপরাধ মনোবৃত্তিও দেখছেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যেসব কর্মী যান তাদের অনেকে মেয়াদের বাইরে ওই দেশে থেকে যান। পরে অবৈধ হয়ে তাদের দেশে ফিরতে হয়। মালিক বা কোম্পানির কাছে পাসপোর্ট থেকে যায়। অনেকে ভিজিট ভিসায় ইউরোপে গিয়ে থাকার চেষ্টা করেন। যদি না থাকতে পারেন তখন আউটপাস নিয়ে দেশে ফেরত আসেন। তবে আমরা তাদের আইনি সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করি। বিদেশে গিয়ে যাতে অবৈধ হয়ে দেশে ফিরতে না হয়, সেজন্য সচেতনতা দরকার। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে।’

দেশের অর্থনীতিতে গত তিন বছর ধরেই ডলার সংকট চলছে। আমদানি দায় মেটানো ও বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে টান পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে। তবে রেমিট্যান্স তথা প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে ভর করে রিজার্ভের ক্ষয় বন্ধ হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। গত মার্চে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মাসটিতে দেশে আসে ৩২৯ কোটি বা ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে প্রবাসীরা ৪ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার বেশি পাঠিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি এপ্রিলেও রেমিট্যান্সের বড় প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক দশকে যে পরিমাণ প্রবাসী বিদেশ গেছেন, তারা যদি সঠিক কর্মসংস্থান পেতেন তাহলে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বেশি হতো।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ