আয়রন আমাদের শরীরের অন্যতম প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। এটির অভাবে লোহিত কণিকা তৈরি হতে পারে না। তাই রক্তশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ আয়রনের ঘাটতি। কিন্তু আয়রন শুধু রক্তকণিকা তৈরি করে না, দেহের শক্তি উৎপাদন থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের স্নায়ুপ্রবাহও নির্ভর করে পর্যাপ্ত আয়রনের উপস্থিতির ওপর। তাই দেহে আয়রনের ঘাটতি হলে দেখা দিতে পারে বহু জটিল সমস্যা। আয়রনের ঘাটতির বেশ কিছু চেনা লক্ষণ রয়েছে। যা ঠিক সময়ে চিহ্নিত করা অত্যন্ত জরুরি। যেমন-
১. ক্লান্তি: শরীরে আয়রনের ঘাটতির অন্যতম বড় লক্ষণ হল ক্লান্তি। সঠিক খাদ্যাভাস, পর্যাপ্ত ঘুম সহ দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত ক্লান্তি ঘিরে ধরলে তা শরীরে আয়রনের অভাবে হতে পারে। আসলে আয়রনের ঘাটতি ঘটলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। ফলে ক্লান্তি অনুভূত হয়।
২. ত্বক কিংবা মাড়িতে ফ্যাকাশেভাব: হিমোগ্লোবিনই রক্ত এবং ত্বককে একটি স্বাস্থ্যকর লাল আভা দেয়। যখন আয়রনের মাত্রা কমে যায়, তখন প্রাকৃতিক গোলাপী আভাও কমতে থাকে। মুখ সহ মাড়ি, চোখের পাতার ভেতরের অংশে বা নখের তলায়ও ফ্যাকাশেভাব দেখা দিতে পারে। আয়রনের ঘাটতি থাকলে দেহের কোষগুলিতে রক্ত সমানভাবে পৌঁছয় না। তখনই রক্তের অভাবে ত্বক জেল্লা হারায়।
৩. মাথাব্যথা: শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম থাকলে মস্তিষ্ক সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ কম হয়। ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, শারীরিক অস্বস্তি বাড়ে। অনেক সময়ে মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৪. নখ ভেঙে যাওয়া: অনেক সময়ে খেয়াল করেছেন নখ সামান্য বড় হতেই ভেঙে যায়? নেপথ্যে থাকতে পারে আয়রনের অভাব। স্বাভাবিকের তুলনায় শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম থাকলে নখ দুর্বল হয়ে বারে বারে ভেঙে যেতে পারে।
৫. চুল পড়া: আয়রনের ঘাটতিতে মারাত্মক হারে চুল পড়তে পারে। যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে অ্যালোপেসিয়া। আসলে হিমোগ্লোবিন চুলের বৃদ্ধির জন্য চুলের ফলিকলে অক্সিজেন ও পুষ্টি জোগায়, যেহেতু আয়রন যেহেতু হিমোগ্লোবিনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই এটির ঘাটতিতে চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে।