দেশে ক্রমেই বাড়ছে প্রবাসী আয়। গত কয়েক মাস ধরে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স ঢুকেছে দেশে। এর সঙ্গে রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধিও দেখা দিয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর ওপর বকেয়া আমদানি বিল পরিশোধের চাপ ও ডলারের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। এতে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে।
রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে ব্যাংকগুলো ১২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৬০ পয়সা রেট দিচ্ছে। এটা চলতি মাস এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেও রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহে ১২৩ টাকা থেকে ১২৩ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত টাকা পর্যন্ত রেট দিতে হতো। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডলারের দাম কমেছে ৫০ পয়সা থেকে ৭০ পয়সা পর্যন্ত।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন- ব্যাংকগুলোর ওভারডিউ পেমেন্টের পরিমাণ কমে এসেছে। এ কারণে এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর আগে যে চাপটা ছিল, সেটাও কমে এসেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার আগের তুলনায় এখন বেশি সহজ হয়েছে। আগামীতে ডলারের দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ নতুন বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন। বিনিয়োগ সংক্রান্ত আমদানিও বাড়ার সম্ভাবনা নেই। কয়েক মাসে ডলারের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।
তাছাড়া বিগত সরকারের সময়ে জ্বালানি খাতের যে ওভারডিউ পেমেন্টের চাপ ছিল সেটাও কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে বাংলাদেশের শুধু বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বকেয়া, এলএনজি ও তেলের পাওনা (বকেয়া) ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। গত আট মাসে সেটা কমিয়ে ৬০০ মিলিয়ন ডলারে নিয়ে আসা হয়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ রেমিট্যান্স পেয়েছে ২৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৬ শতাংশ বেশি। অবশ্য টাকার বিপরীতে ডলার দর কিছুটা কমে আসার পেছনে মুদ্রাটির দাম ১২৩ টাকার নিচে রাখার নির্দেশনার প্রভাবও কিছুটা কাজ করছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা।
ব্যাংকগুলোও খুব প্রয়োজন না হলে ১২৩ টাকার বেশি দরে ডলার কিনছে না। বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি শাখার এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১ টাকা মুনাফা করছি। ডলারের দাম মূলত সরবরাহ বাড়ার কারণে কমছে। গত দুই বছরের মধ্যে ডলারের সরবরাহ এখন ভালো অবস্থানে আছে।