কিছু নকশা দেখলেই বোঝা যায়, এটা কোন ব্র্যান্ড বা ডিজাইনারের কাজ। কিছু নকশা সরবে ঘোষণা করে ডিজাইনারের নাম। হতে পারে সেটা পোশাকের কোনো কাট, উপকরণ কিংবা পোশাকের ওপর করা কোনো কাজ। এমনই একজন ডিজাইনার সাফিয়া সাথী।
বিয়ের পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসার কারণে। সাফিয়ার বানানো পোশাকে পাওয়া যায় ভিন্ন ধারা ও নকশার খোঁজ। পাশাপাশি দেশীয় উপকরণ ব্যবহারের ‘ওয়াও ফ্যাক্টর’ তো আছেই। দেশের তারকাদের অনেকেই সাফিয়ার ডিজাইন করা পোশাক পরছেন আর সিগনেচার কাজ দিয়ে এই ডিজাইনার নিজেও বনে গেছেন তারকা।
বছরের পর বছর ধরে বিয়ের পোশাক আর দাওয়াতের পোশাক বানিয়ে সুনাম কামিয়েছেন সাফিয়া সাথী। সর্বশেষ অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর গায়েহলুদের বেগুনি রঙের লেহেঙ্গাটা নজর কেড়েছে। প্রশংসাও পেয়েছে। তাঁতের শাড়ি আর সিল্ক দিয়ে সাফিয়া সাথীর শুরু। ডিজাইনার হওয়ার আগেই তাঁর ভেতর জামদানি ও টাঙ্গাইলের শাড়ি একটা বড় জায়গা নিয়েছিল। শিকড়ের এই টান একদম ভেতর পর্যন্ত গাঁথা। এই উপকরণ দিয়ে যেমন সাজতে পারেন, সাজাতেও পারেন। আবার অনেক ভারী কাজের জারদৌসির পোশাকও করছেন। অর্থাৎ পেশাগত স্টাইল আর ব্যক্তিগত স্টাইল—সাফিয়ার সাজে দুটোই দেখা যায়।
কাজ করার সময় সাফিয়া সাথী অসাময়িক ধারার পোশাকই বানাতে চান বেশি। যুগের পর যুগ যেটা চলতি ধারা হিসেবে থাকবে। ঐতিহ্যপ্রেমী সাফিয়া বলেন, ‘জামদানি শাড়ি আমাকে যেভাবে আলোড়িত করে, অন্য অনেক দামি উপকরণেও সেটা পাই না। এ কারণেই অসাময়িক কাজ আমাকে বেশি টানে। একটা সিল্ক শাড়ি হতে পারে অনেক পুরোনো, কিন্তু সেটার সৌন্দর্য অমলিন।’
বাংলাদেশের নিজস্ব যেসব উপকরণ আছে, সেগুলো নিয়েই কাজ করে যেতে চান সাফিয়া। শুটের সময় যেমন পরেছিলেন সুতির তৈরি সামার জ্যাকেট। দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করলেও কাটে ছিল আধুনিকতা। পোশাক তৈরি করার সময় প্রাধান্য দেন ঋতু, উপলক্ষ, অনুষ্ঠান ও ক্রেতার চাহিদাকে। পোশাক পরার সময় আরাম ও আত্মবিশ্বাস—দুটোই থাকতে হবে। তিনি মনে করেন, একটা সুতির শাড়ি পরেও দাওয়াতে যাওয়া সম্ভব, যদি থাকে আত্মবিশ্বাস। তবে সাফিয়া সাথীর ব্র্যান্ডের পোশাক যেহেতু শৌখিন, বিলাসবহুল ও দাওয়াতভিত্তিক, তাই প্যাটার্নের কাজ বেশি হয়।
অন্যদের যেভাবে সাজান, নিজেকে সেভাবে সাজাতে পারেন না সাফিয়া। নিজের জন্য বেশির ভাগ সময় সুযোগ পেলেই বেছে নেন অতিরিক্ত বড় আকারের ট্রাউজার আর টি-শার্ট।
সূত্র: প্রথম আলো