পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায় দেশটির ওপর সহজে কেউ আক্রমণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরীফ। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে জানায়, সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যেই মরিয়ম নওয়াজ এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দেশ রক্ষার শক্তি দিয়েছেন। পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর, যেকোনো শত্রু আক্রমণের আগে ১০বার ভাববে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক মতভেদ যাই হোক না কেন, আমাদের ইস্পাতের প্রাচীরের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান আজ শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠেছে। পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করতে নওয়াজ শরিফ ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছেন।”
সাম্প্রতিক উত্তেজনার মূল কারণ জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, যাতে নিহত হয়েছেন ২৬ জন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বড় হামলা। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং বিভিন্ন কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেয়।
জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। সিমলা চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ এবং ভারতীয় পণ্যের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ স্পষ্ট করে বলেন, “নিজের পানির অধিকার রক্ষায় আমরা যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত।”
পিপিপির নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো হুমকি দিয়ে বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত।”
এছাড়াও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি পরোক্ষভাবে পারমাণবিক হামলার সম্ভাবনার কথাও জানান।
অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্ত্রাসী হামলার জবাবে বলেন, “যারা হামলা করেছে ও মদত দিয়েছে, তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। সময় এসেছে সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার।”
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।