বিশ্ব গেমিং বাজারে ২০২৪ সাল ছিল মোবাইল গেমিংয়ের উত্থানের বছর। এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯০ বিলিয়ন ডলার, প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা! ডিভাইসভিত্তিক আয় তালিকায় মোবাইলের ঠিক পরেই রয়েছে কনসোল, যার আয় ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
পিসি গেমিং রয়েছে তৃতীয় স্থানে, মোবাইল ও কনসোলের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। জার্মান অনলাইন ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ চিত্র।
গেমিং শিল্পের আয় মূলত দুটি প্রধান উৎস থেকে আসে-হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার। হার্ডওয়্যার বলতে বোঝায় কনসোল, প্রসেসর, স্ক্রিন, কন্ট্রোলার ইত্যাদি, আর সফটওয়্যার বলতে গেমস ও ইন-গেম কেনাকাটা।
এ বাজারে জাপানের সনি, চীনের টেনসেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফট ও নিনতেন্দোর মতো প্রতিষ্ঠান বড় ভূমিকা রাখছে। তবে পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর ভিড়েও মোবাইল গেমিং আয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
স্ট্যাটিস্টা জানায়, টেনসেন্টের মোবাইল বিভাগ একা মাসে ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় করে। এক সময় ইন্ডি প্রতিষ্ঠান হিসাবে যাত্রা শুরু করা রোভিও (অ্যাংরি বার্ডস), কিং (ক্যান্ডি ক্রাশ) ও জাইঙ্গার এখন আইপিও পর্যন্ত পৌঁছেছে। লাইভ সার্ভিস ও ইন-গেম কেনাকাটার মাধ্যমে গেমিং খাতে রাজস্ব বাড়ছে, যেখানে মোবাইল গেমের অবদান সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী দামের কারণে মোবাইল গেমিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। উন্নত হার্ডওয়্যারের সুবাদে এখন স্মার্টফোনে উচ্চমানের গেম খেলা সম্ভব। ফোরজি ও ফাইভজি ইন্টারনেটের প্রসারও অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমিংকে সহজ করেছে। ফলে বিশ্বজুড়ে মোবাইল গেমের ব্যবহারকারী সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল গেমিং আয়ের বেশিরভাগ আসে স্মার্টফোন থেকে। যদিও ট্যাবলেট গেমিং বাজারে এখনো বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। করোনাকালে (২০২০-২০২১) গেমিংয়ে মানুষের ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল। এখন সেই প্রবণতা কিছুটা কমলেও গেমের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখনো উজ্জ্বল।
২০২৪ সাল ছিল গেমিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য কঠিন এক বছর। বিশ্বজুড়ে কর্মী ছাঁটাই, স্টুডিও বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বিনিয়োগ সংকোচন দেখা দেয়। তবে আশার খবরও আছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিএফসি ইন্টেলিজেন্স এবং মেটাপ্লে ভবিষ্যদ্বাণী করছে, চলতি বছর থেকেই গেমিং শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। নতুন কনসোল আর আকর্ষণীয় গেমসের কল্যাণে রেকর্ড আয় হবে বলে তারা পূর্বাভাস দিয়েছে।