প্যাকেটজাত দুধ বাড়িতে আনার পরে প্রথম কী করেন? সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার করার প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই সসপ্যানে ঢেলে এক বার ফুটিয়ে নেন! পরে ব্যবহার করতে হলেও অনেকে দুধ প্যাকট থেকে পাত্রে ঢেলে, ফুটিয়ে, ঠান্ডা করে তার পরে ফ্রিজে রেখে দেন। কেন? কারণ, ছোট থেকে তেমনটাই মায়েদের করতে দেখেছেন।
বাড়িতে বিক্রেতা দুধ দিয়ে যাক বা প্যাকেটের দুধ আনা হোক— মায়েরা প্রথমেই দুধে এক বার জ্বাল দিয়ে নিতেন। তার পরে হয় বাড়ির ছোটদের গ্লাসে ভরে দেওয়া হত অথবা ব্যবহার করা হত বড়দের চায়ে। কিন্তু এখন বাজারে যখন পাস্তুরাইজড বা আল্ট্রা পাস্তুরাইজড দুধ পাওয়া যাচ্ছে, তখনো কি খাওয়ার আগে দুধে জ্বাল দেওয়া বা ফুটিয়ে নেওয়া জরুরি? না কি সরাসরি প্যাকেট থেকেই দুধ গ্লাসে ঢেলে খাওয়া যেতে পারে!
কেন দুধ খাওয়ার আগে ফুটিয়ে নেওয়া হয়?
কাঁচা দুধকে ৯৫ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড বা তার বেশি তাপমাত্রায় ফোটালে তাতে থাকা সালমোনেলা বা ইকোলাইয়ের মতো জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, দুধ ফোটালে তাতে থাকা ল্যাকটোজ (যা কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে)-এর পরিমাণও কমে। ল্যাকটোজ বদলে যায় প্রোটিনে। ফলে হজমের সমস্যা কম হয়।
কোন দুধ ফোটাবেন? কোনটি ফোটাবেন না?
১। যেকোনো পাস্তুরাইজড দুধ যদি যথাযথ ভাবে সিলড প্যাকে থাকে এবং ফ্রিজে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়, তবে সেই দুধ না ফুটিয়েও সরাসরি প্যাকেট থেকে খাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই দুধটি কত দিন পর্যন্ত খাওয়া যাবে, তার মেয়াদ দেখে নিতে হবে।
২। যদি দুধের প্যাকেট ছেঁড়া বা ফাটা হয় তবে দুধে ব্যাক্টেরিয়া তৈরির সম্ভাবনা থাকবে। সে ক্ষেত্রে দুধ ফুটিয়ে নেওয়াই ভালো।
৩। যদি দুধ কেনার সময় দেখেন, তা যথাযথ ভাবে ফ্রিজে রাখা নেই, তা হলে সেই দুধেও ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে। তাই ফুটিয়ে নেওয়াই ভালো।
দুধ ফোটালে কি পুষ্টিগুণ কমে?
পুষ্টিবিদেরা সাধারণত বলে থাকেন, দুধ ফোটালে তা প্রথম ফুট ধরা পর্যন্তই গরম করুন। দীর্ঘ ক্ষণ ফোটানো দুধে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তবে যদি সরাসরি গরুর দুধ কেনেন, তবে তা ফুটিয়ে নেওয়াই ভালো।
আল্ট্রা পাস্তুরাইজড দুধ আগেই অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পরিশোধন করা হয়। তাই তা আবার গরম করলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে।
পাস্তুরাইজ দুধও ৭২ ডিগ্রি সেন্ট্রিগেডে ১৫ সেকেন্ড রাখা হয়। এতেও অধিকাংশ জীবাণুই নষ্ট হয়ে যায়। তাই যদি যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তবে তা ফোটানোর প্রয়োজন নেই।