সর্বশেষ
সানি লিওনকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি খুশি করে
ঝিনাইদহে মহান মে দিবস পালিত
ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব নয়: ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ
নাহিদ কি আ.লীগ নিষিদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন, প্রশ্ন রাশেদের
শ্রম, শ্রমিক এই দুয়ের ওপরেই আজকের আধুনিক সভ্যতা: কাদের গনি চৌধুরী
শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ৩০ হাজার টাকা করার দাবি
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চাইলেন রিজভী
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের ব্যাপক সামরিক মহড়া
জামায়াত ক্ষমতায় এলে কর্মক্ষেত্রে বেশি নিরাপদ থাকবে নারীরা: শফিকুর রহমান
শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিকল্প নেই: জামায়াত আমির
শ্রমিক কল্যাণে ইসলামি শ্রমনীতি চালুর আহ্বান জামায়াত সেক্রেটারির
মে দিবসে দেশের শ্রমজীবী মানুষের প্রতি এবি পার্টির শুভেচ্ছা
‘সবুজ সংকেত’ পেয়ে বিএনপি মিত্রদের নির্বাচনি তোড়জোড়
শ্রমিক-মালিকের যৌথ প্রচেষ্টাই আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
ব্যাট হাতে ফের মাঠে নামছেন শোবিজ তারকারা

প্রবাসে ছুটিহীন মে দিবস

অনলাইন ডেস্ক

আমরা কমবেশি অনেকেই জানি মে দিবস কেন চালু হয়েছে, তাই এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে যেটা বলার আছে মে দিবস সম্পর্কে জানলেও এটা কয়জনের পালন করার সুযোগ রয়েছে বা এটা আদৌ কি শ্রমিকদের কোন কল্যাণে এসেছে?

২০১৫ সালে আমি স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাস যাওয়ার পর পড়াশোনার পাশাপাশি ওয়ার্কশপের কাজে যোগ দিই। প্রথম বছর মনে করেছিলাম ১লা মে সরকারি বন্ধ, মে দিবসের আগেরদিন বসকে বলেছিলাম আগামীকাল আমাদের ছুটি না?

সে হেসে বলল ‘মে দিবস’ এটা আবার কি? এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আসলেই ঐ দেশের প্রায় লোক মে দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। অবগত হবার কথাও না। কারণ মে দিবসটি মূলত বিশেষ  যে কারণে চালু করা হয়েছিল, ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটির পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে ১২ ঘণ্টা ডিউটি নাই বললেই চলে। ৮ ঘণ্টার বাইরে যা করবে তা ওভারটাইম হিসেবে মজুরি পরিশোধ করা হয়, সেজন্য তারা মে দিবসটিকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। যার ফলে সরকারিভাবে সেদিন কোন ছুটি নেই।

কিন্তু বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও এখনো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি চালু রয়েছে। শুধু বিশেষ কিছু সেক্টরে ৮ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি। তাই হয়ত আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মে দিবস নিয়ে এতটা মাতামাতি হয়।

বলছিলাম সাইপ্রাসের কথা—তখন বন্ধুদেরকে মন খারাপ করে বলছিলাম ভাই কি চাকরি করি মে দিবসেও বন্ধ নেই। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল ভাই তোমার কাজ আছে বলে বন্ধের জন্য চিন্তা কর আর আমাদের যে কাজই নাই মে দিবস এসব দিয়ে আমরা কি করব? আসলেই প্রবাসে একদিন কাজ না থাকা মানে অনেক পিছিয়ে পড়া, সাইপ্রাসে অন্যান্য সরকারি ছুটিগুলিতে বন্ধ দিলেও বেতন দেওয়া হয় না।

এখানে দৈনিক ডিউটির উপর বেতন নির্ভর করে। তাই এখানে সরকারি ছুটি পাওয়া মানে লসটা নিজের। সুতরাং এই ‘মে দিবস’ কি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নাকি এটি নামেমাত্র? এরপর যখন ২০২০ সালে আরব আমিরাতে আসলাম এখানেও দেখি একি অবস্থা। মে দিবসে শ্রমিকদের কোন ছুটি নেই। মধ্যেপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশ হল সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখানে এসে দেখলাম মানুষের প্রতিটা সেকেন্ডের মূল্য আছে৷ যে যত বেশি কাজ করতে পারে ততবেশি আয়। আরব আমিরাতে যেহেতু এখন কাজের সুযোগ অনেক বেশি তাই একজন মানুষ চায়লে মাসে ৩০ দিন কাজ করতে পারে।

এখানে যারা কন্ট্রাক্টশন সেক্টর বা বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও গ্রোসারিতে কাজ করে তারা আদৌ জানে না মে দিবস নামে যে একটা দিবস আছে। কারণ এ দিবসে কোন বন্ধ নেই এখানেও। এখানে কন্ট্রাক্টশন সেক্টরগুলিতে সাধারণ ডিউটি হল ৮ ঘণ্টা ও সপ্তাহে একদিন ছুটি রয়েছে। ৮ ঘণ্টার বাইরে ও বন্ধের দিন কাজ করলে তা হল ওভারটাইম। মে দিবসের নামে যদি বন্ধ দিয়ে মালিকপক্ষ ঐ একদিনের বেতন কাটে তাহলে এই মে দিবস কি শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নাকি অকল্যাণের জন্য সে প্রশ্ন থেকে যায়!

আবার যারা ব্যবসা করে আরব আমিরাতে, এখানে ব্যবসা করা মানে একদিনে অনেক খরচ একদিন যদি ব্যবসা বন্ধ থাকে তাহলে অনেক টাকা লোকসান এখানে যে অপ্রয়োজনে একদিন ব্যবসা বন্ধ রাখবেন সে সুযোগ নেই। সুতরাং বলা যায় এই মে দিবস কারো পক্ষে গেলেও আবার কারো বিপক্ষে চলে যায়। তাই হয়ত পুঁজিবাদী দেশগুলিতে মে দিবস নামেমাত্র থাকলেও এটি পালন করা হয় না।

বাংলাদেশে যারা মে দিবস নিয়ে বেশি মাতামাতি করছে তারাও বলতে পারবেনা এটি তাদের কোন কাজে আসে, একজন রিক্সা বা সিএনজি চালক বা সাধারণ দিন মজুর যদি একদিন কাজ করতে না পারে তার পরিবার না খেয়ে থাকবে। এই মে দিবস দিয়ে তার পেট চলবেনা। তাই বলা যায় শুধু প্রবাস কেন; দেশেও ছুটিহীন এই মে দিবস।

 

সূত্র: যুগান্তর

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ