পদ ফিরে না পেলে স্বেচ্ছায় জেলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর। তিনি বলেন, এনসিপিতে পদ ফিরে না পাওয়া মানে হলো অভিযুক্ত হওয়া। এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমি আমার জায়গা থেকে স্পষ্ট বলছি, আমি অভিযুক্ত না। নিজেকে এজন্যই আইনের হাতে সোপর্দ করবো যাতে এর পরিপূর্ণ তদন্ত হয়। পদ ফিরে না পেলে স্বেচ্ছায় জেলে যাবো এবং সরকারের কাছে পরিপূর্ণ তদন্ত চাইবো।
সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন গাজী সালাউদ্দিন তানভীর। তিনি সচিবালয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ৫ আগস্টের আগে সচিবালয়ে আমার একবার যাওয়া হয়েছে। আমি একটি কোম্পানির চাকরি করতাম, কোম্পানির কাজে একবার যাওয়া হয়েছিল। আর পরে চারবার। সব মিলিয়ে আমি জীবনে পাঁচবার সচিবালয়ে গিয়েছি।
আমি মনে করি বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষেরও সচিবালয়ে এন্ট্রি থাকা উচিত। উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তার নম্বর ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকে। সেখানে যাওয়া যদি অপরাধ হতো তাহলে নম্বরগুলো ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকত না। আমি সোখানে চারবার গিয়েছি এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই গিয়েছি। তার মানে এই না যে আমাকে কেউ পাঠিয়েছে, যোগ করেন তিনি।
ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একটি গাড়িতে চলাচল করি, পাজেরো। পরিচিত একজনের গাড়ি এটি। আমি মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে ব্যবহার করি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ে যে লড়াইটা হয়েছিল সেই নেতৃত্বের উপরেই এনসিপি প্রতিষ্ঠিত। ৫ আগস্টের আগের কালচারে চলবে তা নয়। যেমন আগে জঙ্গি নাটক সাজানো হতো, অযথা মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো।
আরও বলেন, এখন মানুষকে অযথা হয়রানি করা হবে, মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হবে, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনেই তার সম্পর্কে মন্তব্য করবে, তার লেবাস নিয়ে সমালোচনা করবে, এনসিপি সেগুলো কখনোই মেনে নেবে না। আমি আশা করি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, নানা অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
গত সোমবার (২১ এপ্রিল) জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে পাঠানো হয়।
এনসিপির এই নেতার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক নিয়োগে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর পাঠ্যবই ছাপার কাগজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের নিকট ৭ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে যথাযথ ব্যাখ্যা প্ৰদান করতে এবং তাকে কেন দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না জানতে চাওয়া হয়।
সূত্র: নিউজ টোয়েন্টিফোর