লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই পুত্রবধূসহ কাতার আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চেপে দেশে ফিরছেন তিনি। গতকাল সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ছেড়েছে বেগম জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির অবতরণের কথা রয়েছে।
লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর দেশের পথে যাত্রা করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাকে বরণ করতে প্রস্তুত বিএনপি। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশা, দেশে ফিরে আগের মতোই দলের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
যানজট ও জনদুর্ভোগ এড়াতে খালেদা জিয়ার গাড়ির আশপাশে ভিড় না জমাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার দুই পুত্রবধূ ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও লন্ডনে সফরে থাকা বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল।
বেগম জিয়ার নিরাপত্তার বিষয়েও ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। লন্ডন ক্লিনিকে উন্নত চিকিৎসা ও ছেলে তারেক রহমানের পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জানা গেছে, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানিয়েছেন ছেলে তারেক রহমান। ঢাকায় বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত পথে পথে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাবেন নেতাকর্মী। বিএনপি ও এর বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে কারা কোথায় অবস্থান নেবেন এবং তাদের করণীয় বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়েছিলেন জুবাইদা রহমান। স্বামী তারেক রহমান ও একমাত্র সন্তান জায়মা রহমানকে নিয়ে লন্ডনে ছিলেন তিনি। আর সৈয়দা শামিলা রহমান বেশ কয়েকবার দেশে এসেছেন। সর্বশেষ তার মায়ের অসুস্থতার সময়ে দেশে ফিরেছিলেন। পরে গত ২৯ এপ্রিল তিনি লন্ডনে ফিরে যান।
দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এর পর কয়েক দফা তার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করা হলে তিনি কারামুক্ত হন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায় বাতিল করে আদালত।
সূত্র: নিউজ টোয়েন্টিফোর