কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা খাদ্যগুদামে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য হিসাবে বোরো সংগ্রহ অভিযানে চালকল সমুহের মাঝে বরাদ্দ বিভাজনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় সব চালকল একই আকৃতির এবং মোটর একই হর্সপাওয়ার সম্পন্ন হওয়া সত্বেও ১০টি চালকলের বিপরিদে বেশী চালের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রভাবশালী চালকল মালিকদের সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই বরাদ্দ বিভাজন করে আসছেন বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী মিলাদের অভিযোগ ।
জানাগেছে,চলতি বোরো মৌসুমে চিলমারী উপজেলা খাদ্যগুদামে ৪৭৭মে.টন ধান ও ১হাজার ৪৪১মে.টন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। যা প্রতি কেজি ধান ৩৬টাকা ও চাল ৪৯টাকা দরে ক্রয় করার জন্য ২৪এপ্রিল থেকে ৩১আগষ্ট ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়। নিয়মানুযায়ী অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য হিসাবে বোরো সংগ্রহ-২৫এ উপজেলায় অবস্থিত চলমান এবং বৈধ লাইসেন্সধারী চালকল সমুহের ফিটনেস সরেজমিনে দেখে প্রাপ্যতার ভিত্তিতে চালের বিভাজন দেয়ার কথা।সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজ খেয়ালখুশি মত ৪২টি চালকলের মধ্যে ভিন্ন পরিমান চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিভাজনকৃত সকল চালকল একই বৈশিষ্টের হলেও ১০টি চালকলের নামে বেশী বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে। বিভাজনকৃত চালকল সমুহের মধ্যে চাল উৎপাদ বন্ধ থাকা এবং নাম সর্বস্ব কিছু মিলও রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রভাবশালী চালকল মালিকদের সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই বরাদ্দ বিভাজন করে আসছেন বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী মিলাদের অভিযোগ ।
সরেজমিনে দেখা যায়,প্রায় সব চালকল একই আকৃতির এবং মোটর একই হর্সপাওয়ার সম্পন্ন হওয়া সত্বেও ১০টি চালকলের বিপরিদে বেশী চালের বরাদ্দ দেয়া হয়।তবে সাবরিনা চালকল নামে একটি মিলে ৫০হর্সপাওয়ারের মোটর দেখা গেছে।এছাড়াও উপজেলার হ্যালিপ্যাড এলাকার মির্জা চালকলের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কলটির হাউসে তেলাপিয়া মাছ চাষ করা হলেও সেটির নামে ২৯.৬১০মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।উপজেলার কলেজমোড় এলাকার ইউসুফ চাল কল পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকলেও তার নামে ২৮.১৭০মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।এন হাসান চালকল ও নাহিদ হাসান চালকল দুটির জন্য একটি মাত্র হাউস থাকলেও কল দুটির জন্য ৪৪.৭৯০ ও ৩১.০৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আরও অনেক চালকল পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কথা জানা গেছে। সবকিছু একই থাকার পরও বরাদ্দ কম পাওয়া মিলারদের অভিযোগ সকল শর্ত একই থাকা সত্বেও বরাদ্দ বিভাজনে কেন তাদের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে?
আরাফাত চালকলের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান বলেন,সব চালকলের মোটর একই হর্সপওয়ার হলেও প্রভাবশালী মিলারদের বেশী বরাদ্দ দিয়ে নিরিহদের বৈষম্যর শিকার করা হয়েছে।সঠিকভাবে চালকল সমুহ পরিদর্শন করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিভাজনের দাবী জানান তিনি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আলাউদ্দিন বসুনিয়া জানান,চালের বরাদ্দ বিভাজনের বিষয়ে মিলারদের সাথে কথা হয়েছে কোন সমস্যা থাকলে সমাধান করা হবে। আগামীকাল অফিসের আসেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
চাল ও ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান,চালকল সমুহের বরাদ্দ বিভাজনে কোন ত্রুটি থেকে থাকলে তা সংশোধন করে পুনঃবন্ঠন করার জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।