বাংলাদেশ সফরে আসলেন বর্তমান মিস ইউনিভার্স মুকুটধারী তাতিয়ানা কালমেল। ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত থাকবেন বাংলাদেশে।
এই সফরের আয়োজন করেছে ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের জাতীয় পরিচালক মোস্তফা রফিকুল ইসলাম ডিউক। সফরের মূল উদ্দেশ্য—বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পর্যটনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করা।
আজ দুপুরে ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হলে আয়োজিত এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে তাতিয়ানা কালমেল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে তিনি নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলেন এবং মিস ইউনিভার্স প্ল্যাটফর্মের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব ও সাংস্কৃতিক প্রভাব তুলে ধরেন।
এই আয়োজনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা। পাশাপাশি মিস ইউনিভার্স স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করা হয়। উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাতিয়ানা কালমেল বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ পেয়ে এবং এখানে এসে আমি সত্যিই আনন্দিত। বাংলাদেশ খুব সুন্দর, এখানে আছে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। বাংলাদেশের মানুষ খুব আন্তরিক ও অতিথিপরায়ণ। আমি এই সফরে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে দেখা করার, নিজের গল্প বলার এবং এই অসাধারণ দেশ সম্পর্কে আরও জানার অপেক্ষায় আছি। আশা করি, আমার এই সফর অন্যদেরও উৎসাহিত করবে বাংলাদেশে আসতে।’
ফ্লোরা টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা রফিকুল ইসলাম ডিউক বলেন, ‘মিস ইউনিভার্স কেবল মাত্র একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক মঞ্চ যেখানে বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্বাস এবং ইতিবাচকতাকে উদ্যাপন করা হয়। তাতিয়ানা কালমেলকে বাংলাদেশে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। তার সফর বাংলাদেশের নারীদের জন্য এক নতুন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।’ মিস ইউনিভার্স স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিস ইউনিভার্স স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে আছে বিশেষভাবে তৈরি “এমিউ৭সি+ কমপ্লেক্স”—যেখানে ৭টি মহাদেশ থেকে সংগ্রহ করা এইজ-ডিফাইং উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।
‘ও স্কিন মেড স্পা’ এবং ‘অলিভিয়া কুইডো ক্লিনিক্যাল স্কিনকেয়ার’-এর প্রতিষ্ঠাতা মিস অলিভিয়া কুইডো-কো উপস্থিত ছিলেন না এই আয়োজনে তবে তাঁর বার্তায় তিনি জানান, ‘মিস ইউনিভার্স-এর ‘ফোর্স টু গুড’ দর্শন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে স্কিনকেয়ার পণ্য তৈরি করেছি, যা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং আত্মবিশ্বাসও বাড়ায়।’ এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা রফিকুল ইসলাম বলেন গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে গুলশান বনানীর উচ্চবিত্ত নারী সকলের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাজারে আসবে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের এই পণ্যটি। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করা অলিভিয়া কুইডো-কো এই স্কিনকেয়ার লাইনটি মিস ইউনিভার্স-এর ব্র্যান্ড ভ্যালু অনুসরণ করে তৈরি করেছেন। পণ্য গুলির মধ্যে থাকছে অ্যান্টি-এজিং প্রোডাক্ট, ময়েশ্চারাইজার, ফেইসওয়াশ, ক্লিনজার, টোনার ও সেরাম।
আয়োজনে বক্তব্য রাখেন মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশনের ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ডেনিস মার্টিন ডাভিলা। তিনি বলেন,বাংলাদেশে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। মিস ইউনিভার্সের অন্যান্য প্রতিযোগীদের মধ্যে তাতিয়ানা সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ছিল বাংলাদেশে আসার জন্য। কোন দেশে আসা মানে সে দেশের সংস্কৃতি আর মানুষ সম্পর্কে জানা। মিস ইউনিভার্স প্ল্যাটফর্ম কেবল সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা নয়। নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং বিশ্বের সব নারীদের অনুপ্রাণিত করা এর মূল লক্ষ্য। ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, জাপান, ভিয়েতনাম সফর করেছি। বাংলাদেশ হচ্ছে আমাদের এই সফরের দক্ষিণ পূর্ণ এশিয়ার শেষ দেশ। বিভিন্ন দেশে গিয়ে সেখানকার কন্টিনেন্টাল খাবার ও সংস্কৃতি আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা বাংলাদেশে এসেছি মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ অধ্যায়ের সূচনা করতে, সেই সঙ্গে বিশ্বখ্যাত রূপসজ্জা ব্র্যান্ডের পণ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের নারীদের পরিচয় করিয়ে দিতে।
তাতিয়ানা কালমেলের এই সফর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ ব্যাপার। এটি শুধু সৌন্দর্যের গল্প নয়, বরং এক নতুন বৈশ্বিক বন্ধুত্ব, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং নারীর ক্ষমতায়নের বার্তা বহন করছে বলে জানান আয়োজকেরা।