সর্বশেষ
জুলাইকে দলীয় ফ্রেমে চিন্তা করলে এর শক্তিশালী চেতনা ম্লান হবে: সিবগাতুল্লাহ
কোথায় তৈরি হয় এতো অটোরিকশা, নেপথ্যেই বা কারা?
সাইবার স্পেসেও নিষিদ্ধ হলো আ.লীগের কার্যক্রম
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি
ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি আবদুল হামিদের লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়নি: রিজভী
আট নায়িকাকে সামলানোর দায়িত্ব মোশাররফ করিমের কাঁধে
পথশিশুদের দাঁতের যত্নে বসুন্ধরা শুভসংঘের টুথ ব্রাশ ও পেস্ট বিতরণ
রাতে দুধ খাওয়া কাদের জন্য চরম বিপদজনক?
এলডিসি উত্তরণে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার
আ. লীগ ঝটিকা মিছিল করলে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ: ডিবি
গরমে স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অফিস
‘গণঅভ্যুত্থানের মামলা তদন্তে বিশেষ মনিটরিং সেল হচ্ছে’
আয়নাঘরে বন্দিদের একাকিত্বের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে যা বললেন নাবিলা ইদ্রিস
‘আমি আর লিখব না’, কেন বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ

জাপানের মেক্সট বৃত্তিতে সুযোগ একাদশের শিক্ষার্থীদেরও

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশিসহ বিশ্বের অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য পছন্দের অন্যতম দেশ জাপান। এর অন্যতম কারণ পড়ালেখার মান। দেশটিও পকেটর অর্থ খরচের পাশাপাশি স্কলারশিপে পড়াশোনার সুযোগ আছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয়। এর একটি হলো মেক্সট স্কলারশিপ।

আবেদন বা ভর্তি হতেও কোনো ফি লাগে না। মাসিক উপবৃত্তি, বিমানে যাতায়াত খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা মেলে এ বৃত্তি পেলে। আইইএলটিএস কিংবা টোয়েফল ছাড়াই করা যায় আবেদন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মেক্সটকী

জাপানে পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি বৃত্তি হলো ‘মেক্সট’/ MEXT। এটি আসলে MECSST। শব্দটি প্রকৃতপক্ষে Ministry of Education, Culture, Sports, Science and Technology। বড়সড় শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ‘মেক্সট’। ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় ১৬০টির মতো দেশ থেকে আসা ছাত্রদের জন্য এ বৃত্তি দেয় জাপান সরকার। জাপান সরকার প্রদত্ত বৃত্তিগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খ্যাতনামা আর সবচেয়ে সম্মানিত। এ বৃত্তির জন্য ভিসা পেলে ভিসাতে লেখা থাকে ‘Govt. Scholar’। জাপানের গবেষণার মাধ্যমে বৃত্তিপ্রাপ্তির দেশ এবং জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতু হয়ে ওঠা মানবসম্পদকে উৎসাহিত করা এবং উভয় দেশ ও বৃহত্তর বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যেই দেওয়া হয় এ বৃত্তি।

জাপান সরকারের সেই মেক্সট বৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। ২০২৫ সালে জাপানে গবেষণা (স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি), স্নাতক, কলেজ অব টেকনোলজি এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং প্রোগ্রামে যুক্ত হতে চাইলে আবেদন করতে পারেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে।

বৃত্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশ থেকে জাপানে আসার জন্য ও ঠিক সময়ে ডিগ্রি শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানভাড়া মেক্সট বহন করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি বা অন্যান্য কোনো ফি দিতে হয় না। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় ফি মওকুফ এবং পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করে দেশটি।

মাস্টার্স ও পিএইচডিতে ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামে ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজে ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে।

*যেসব বিষয় নিয়ে পড়া যাবে

গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, আর্থ সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম অ্যান্ড কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইকোনমিকস, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত ও কম্পিউটিং সায়েন্স, লাইফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

সুযোগসুবিধা

*বৃত্তিপ্রাপ্তদের কোনো টিউশন ফি বা ভর্তি ফি দেওয়া লাগবে না।

*আবেদন করতেও লাগবে না কোনো ফি।

*আসা-যাওয়ার বিমান খরচও মিলবে।

*শিক্ষার্থীদের আইইএলটিএস বা টোয়েফল স্কোর দেখাতে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা ও পরীক্ষা হয়েছে, সেটির প্রমাণ লাগবে।

আবেদনের অন্যতম শর্ত

*আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে।

*মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ১৯৯১ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে

*আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ২০০১ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে

*ট্রেনিং কলেজ প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ২০০১ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে। একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে হবে।

আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা

ক. মাস্টার্স ও ডক্টরাল: (First phase) পর্যায়ে আবেদনকারীকে অবশ্যই স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে;

খ. ডক্টরাল কোর্স: (Second phase) পর্যায়ে আবেদনকারীকে অবশ্যই স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে অথবা স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণসহ দুই বছর বা তদূর্ধ্ব সময় বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে;

গ. ডক্টরাল কোর্স (faculties of medicine, dentistry, veterinary sciences, and certain areas in pharmaceutical) পর্যায়ে আবেদনকারীকে অবশ্যই স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে অথবা স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণসহ দুই বছর বা তদূর্ধ্ব সময় বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো গবেষণা সংস্থায় গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে;

ঘ. আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং গ্রুপ পর্যায়ে আবেদনকারীকে উচ্চ মাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে (যে সকল আবেদনকারী মার্চ ২০২৬-এর মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারাও আবেদন করতে পারবে। এরূপ আবেদনকারীকে একাদশ শ্রেণির ফলাফল দাখিল করতে হবে)। College of Technology পর্যায়ে আবেদনকারীকে একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে হবে।

স্কলারশিপে সুবিধাগুলো-

*ভাতা: প্রতি মাসে ১ লাখ ১৭ হাজার ইয়েন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষভাবে নির্ধারিত অঞ্চলে অধ্যয়ন বা গবেষণা পরিচালনার জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীরা মাসিক ভাতার সঙ্গে অতিরিক্ত ২ বা ৩ হাজার ইয়েন পাবেন। জাপান সরকারের বাজেট পরিস্থিতির কারণে এই অর্থের পরিমাণ প্রতি অর্থবছরে পরিবর্তিত হতে পারে। যদি কোনো গ্রহীতা দীর্ঘ সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রস্তুতিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে ওই সময়ের জন্য স্কলারশিপ স্থগিত রাখা হবে।

*শিক্ষা ফি: ভর্তি পরীক্ষা, ভর্তি প্রক্রিয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করা হবে প্রার্থীর।

*আইইএলটিএস-টোয়েফলের সনদ লাগবে কি-

প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি অথবা জাপানি ভাষায় দক্ষতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে আইইএলটিএস বা টোয়েফলের সনদ।

*একজন কতটি আবেদন করতে পারবেন-

কোনো প্রার্থী একাধিক প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন না। যেকোনো একটি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যেমন সনদ, মার্কশিট, ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ে যথাসময়ে জমা দিতে ব্যর্থ হলেও আবেদন বাতিল হতে পারে।

প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর অনুষ্ঠিত হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় মূলত ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা যাচাই করা হবে। মাস্টার্স বা পিএইচডিতে আবেদনের জন্য মেক্সটের নিজস্ব সিজিপিএর একটি মানদণ্ড থাকতে হয়। জাপানের সেশনগুলো দুটো সেমিস্টারে শুরু হয়। জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মেক্সটের ওয়েবসাইটেও ‘মেক্সট’ বৃত্তির যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়।

*আবেদনের শেষ কবে

অনলাইনে আবেদন চলছে। আবেদনকারীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের http://202.4.112.150:3030 লিংকে আবেদন করতে হবে। আগামীকাল সোমবার (১২ মে ২০২৫) বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এই লিংক এরপর আর কার্যকর থাকবে না।

*আবেদনকারীকে লিংকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট সার্টিফিকেট, মার্কসিট, পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, আইইএলটিএস/টোয়েফেল এর সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য সব ডকুমেন্টের সত্যায়িত কপিসহ আবেদনের হার্ড কপি সচিবালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন অভ্যর্থনা কক্ষের ৯ নম্বর কাউন্টারে রক্ষিত নির্ধারিত বক্সে জমা দিতে হবে। হার্ড কপি জমা দেওয়া যাবে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।

*জাপানের বৃত্তির আবেদনসহ বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন

সূত্র:  প্রথম আলো

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ