সর্বশেষ
জুলাইকে দলীয় ফ্রেমে চিন্তা করলে এর শক্তিশালী চেতনা ম্লান হবে: সিবগাতুল্লাহ
কোথায় তৈরি হয় এতো অটোরিকশা, নেপথ্যেই বা কারা?
সাইবার স্পেসেও নিষিদ্ধ হলো আ.লীগের কার্যক্রম
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি
ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি আবদুল হামিদের লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়নি: রিজভী
আট নায়িকাকে সামলানোর দায়িত্ব মোশাররফ করিমের কাঁধে
পথশিশুদের দাঁতের যত্নে বসুন্ধরা শুভসংঘের টুথ ব্রাশ ও পেস্ট বিতরণ
রাতে দুধ খাওয়া কাদের জন্য চরম বিপদজনক?
এলডিসি উত্তরণে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার
আ. লীগ ঝটিকা মিছিল করলে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ: ডিবি
গরমে স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অফিস
‘গণঅভ্যুত্থানের মামলা তদন্তে বিশেষ মনিটরিং সেল হচ্ছে’
আয়নাঘরে বন্দিদের একাকিত্বের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে যা বললেন নাবিলা ইদ্রিস
‘আমি আর লিখব না’, কেন বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ

ফটিকছড়িতে অবৈধ কারবারের স্বঘোষিত সম্রাট বিএনপি নেতা

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাগান বাজারে বিভিন্ন অপকর্মের এক সময় নামজাদা সম্রাট ছিলেন তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. রুস্তম আলী। শেখ হাসিনার পতনের পর পাল্টে যায় সেই চিত্র। এখন সেই সম্রাটের তকমা ইউনিয়নের তথাকথিত সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. আবুল হোসেন (৬২) প্রকাশ আবু মেম্বারের। তিনি এখন হয়ে উঠেছেন অবৈধ কারবারের অপ্রতিরোধ্য স্বঘোষিত সম্রাট।

সবসময়ই উপজেলার সীমান্তবর্তী এই বাজারটি নিয়ন্ত্রিত হয় শাসক দলের মাধ্যমে। এতদিন আ.লীগের লোকজন থাকলেও সরকার পতনের পর বর্তমানে এসব বিএনপির নিয়ন্ত্রণে। সেই সুবাদে সাংগঠনিক দক্ষতা, প্রশাসনিক ক্ষমতা ও পেশীশক্তির প্রভাব এই আবু মেম্বারের। তিনি এখন বিভিন্ন অপকর্মে অপ্রতিরোধ্য। নিজের আধিপত্যে এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করছেন না। মানব পাচার, ইয়াবা বাণিজ্য, ভারতীয় পণ্য বেচাকেনা, বন বিভাগের সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ ও দখল বাণিজ্যে তিনি হয়ে উঠেছেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তার এমন কর্মকাণ্ডে তার নিজ দলের একটি পক্ষই ত্যক্ত-বিরক্ত।

আবুল স্বাধীনতা পরবর্তী বাগান বাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিলেন। সেসময় এলাকার ত্রাস আ.লীগ নেতা ও বাগান বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুস্তম আলী একাধিক মামলায় আত্মগোপনে গেলে আবুল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। তখন থেকেই তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করে গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন। গড়ে তোলেন অপকর্মের এক বিশাল বাহিনী।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার উত্তরাঞ্চলের সমৃদ্ধ এই বাজারটি বরাবরই ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত। যখন যারা ক্ষমতায় আসে তারাই বাজারটি নিয়ন্ত্রণে নেন। স্বাধীনতা পরবর্তী বিএনপির আমল থেকে আবু মেম্বার দলের হাল ধরে নানান অপকর্মে জড়ান। পাহাড় কাটা, বালি তোলা, টপসয়েল কাটা, সীমান্ত পাচার, বিচার বাণিজ্য, সিন্ডিকেট সবকিছুতেই তার রয়েছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন। তার কথার বাইরে কিছুই হয় না এখানে। ব্যথায় হলে আবু’র হস্তক্ষেপে হামলা-মামলা এবং হয়রানির শিখার হতে হয় সবাইকে। আবু মেম্বারের এসব অপকর্মে সহযোগিতা করেন তারই ভাগিনা রাসেল, ভাই মনির, অনুসারী সোহেল ও মাটি খেকো মীর হোসেন। তারাই মূলত আবু মেম্বারের বিভিন্ন অপকর্মের যোগানদাতা।

বাজারের ব্যবসায়ী মো. আমীর বলেন, ‘আবু মেম্বারের নেতৃত্বে গরু বাজারে সরকারি জায়গায় বিপুল অর্থের বিনিময়ে স্থাপনা নির্মাণ, ভাগিনা রাসেলকে দিয়ে লালমাই, নতুন বাজার, চিকনের খিল, বাংলাবাজার, খেদা, বাগানবাজার নামক স্থানে পাহাড়, টিলা এবং টপসয়েল কেটে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। খাল থেকে বালি উত্তোলন ও বাদ যাচ্ছে না। এসব বিষয়ে কেউ মুখ খোলে না।’

চিকনছড়া বাজারের বাসিন্দা প্রবাসী মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘একসময়ের সিএনজি চালক সোহেলের নেতৃত্ব পানুয়াছড়া, নলুয়া, অফিসটিলা, রহমতপুর, বদ্ধ, বাগানবাজার ও আঁধারমানিক চা-বাগান, জ্যোতির চর, হাবিয়াল্লার চর, হলুদিয়া সীমান্তে শাড়ি, মাদক, সাবান চিনি থেকে শুরু করে সব ভারতী অবৈধ পণ্য বিকিকিনি করছে তার সিন্ডিকেট। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলে তার এসব কর্মকাণ্ড। আর পেছনে রয়েছে আবু মেম্বারের লম্বা কালো হাত।’

দলের কর্মীরা জানান, আবু মেম্বারের ইশারায় বর্তমানে বাংলাবাজার মাদ্রাসার দক্ষিণে মাটি কাটা, বাগানবাজারে পশুরহাট দখল করে দোকান নির্মাণ, লালমাই ও গার্ডের দোকান এলাকায় বালি উত্তোলন, মাটি কাটা, বনবিভাগের গাছ কর্তনসহ বিপুল অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দল কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

বাগান বাজার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. একরামুল হক বাবুল বলেন, ‘তিনি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কারণে আমরা প্রায়শই তিক্ত-বিরক্ত। এসব বিষয় আমরা বার বার উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বলেছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আমরা এখন কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে।’

অভিযোগের বিষয়ে মো. আবুল হোসেন প্রকাশ আবু মেম্বার বলেন, ‘এসব অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা। দলের একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে লেগে আছে। আমি অন্যায় করলে দল এবং পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এতে আমার কোন আপত্তি নেই।’

উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. সরোয়ার আলমগীর বলেন, ‘গঠনতন্ত্র বিরোধী কোন কর্মকাণ্ড বা অনৈতিক কাজে জড়িতের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কাজ করে কেউ পার পাবে না।’

ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুল হক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এলাকায় জনশ্রুতি আছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

সূত্র: যুগান্তর

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ