টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার পরদিনই স্ত্রী আনুশকা শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে বৃন্দাবনে গেলেন ভারতের তারকা ব্যাটার বিরাট কোহলি। মঙ্গলবার তারা বৃন্দাবন ধামে প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক গুরু স্বামী প্রেমনন্দ মহারাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং আশীর্বাদ নেন। বিরাট ও আনুশকা দুজনেই তার ভক্ত হিসেবে পরিচিত এবং এর আগেও তাদের বৃন্দাবনে একাধিকবার দেখা গেছে।
বিরাট কোহলির টেস্ট অবসর একটি গৌরবময় অধ্যায়ের ইতি টেনেছে। দীর্ঘ ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে সাদা পোশাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে ব্যাট হাতে একক আধিপত্য কায়েম করেছেন তিনি। ব্যাটার হিসেবে যেমন, তেমনি অধিনায়ক হিসেবেও বিরাট রেখে গেছেন দারুণ এক দৃষ্টান্ত।
৩৬ বছর বয়সী বিরাট কোহলি ১২৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। মোট রান করেছেন ৯,২৩০, ব্যাটিং গড় ৪৬.৮৫। তার নামের পাশে আছে ৩০টি সেঞ্চুরি ও ৩১টি ফিফটি। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ২৫৪* রান। টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের পক্ষে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনি চতুর্থ, তার সামনে আছেন শুধু শচীন টেন্ডুলকার (১৫,৯২১), রাহুল দ্রাবিড় (১৩,২৬৫) এবং সুনীল গাভাস্কার (১০,১২২)।
বিরাট কোহলি টেস্টে অভিষিক্ত হয়েছিলেন ২০১১ সালের জুনে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রথম সিরিজ ছিল হতাশাজনক— পাঁচ ইনিংসে মাত্র ৭৬ রান করেছিলেন। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে নিজের জাত চিনিয়েছেন।
২০১২ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস দিয়ে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি পান কোহলি। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন টেস্ট ব্যাটারদের মধ্যে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি। এই সময়ে ৪৩টি টেস্টে ৬৬.৭৯ গড়ে ৪,২০৮ রান করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল ১৬টি সেঞ্চুরি এবং ১০টি ফিফটি। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ২৫৪* রান ছিল এই সময়েই। এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক সাতটি ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড তারই।
তবে ২০২০ সাল থেকে তার ফর্ম অনেকটা পড়ে যায়। এই সময় ৩৯টি টেস্টে ৩০.৭২ গড়ে করেন মাত্র ২,০২৮ রান। সেঞ্চুরি মাত্র তিনটি, ফিফটি নয়টি। ২০২৩ সাল তার ক্যারিয়ারে কিছুটা স্বস্তি ফেরায়। ওই বছর আটটি টেস্টে ৫৫.৯১ গড়ে তিনি করেন ৬৭১ রান। করেন দুটি সেঞ্চুরি এবং দুটি ফিফটি।
বিরাট কোহলি টেস্ট ক্রিকেটে যেমন সাফল্য পেয়েছেন, তেমনি মাঠের বাইরে তিনি একজন আধ্যাত্মিক ও পারিবারিক মানুষ। ক্যারিয়ার শেষে তার এই সস্ত্রীক বৃন্দাবন সফর যেন তারই প্রমাণ।
সূত্র: যুগান্তর