সর্বশেষ
সুরক্ষায় নেই ‘ডিজাস্টার রিকভারি সিস্টেম’, ঝুঁকির মুখে ইসির বিশাল তথ্যভান্ডার
চন্দ্রঘোনা-রাইখালী রুটে ফেরি চলাচল শুরু
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর
‘বিদেশি নাগরিকত্ব’ ইস্যুতে অবস্থান স্পষ্ট করলেন খলিলুর রহমান
ত্বকের ধরন জানা কতটা জরুরি, ধরন অনুযায়ী যত্ন কেমন হওয়া উচিত
পাকিস্তানের হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিতে অভিযুক্ত হরিয়ানার জ্যোতি
ফুসফুস ভাল রাখতে চান? রোজ নিয়ম করে এই একটি কাজ করুন
অ্যাপলের ব্যাটারিতে এআই বিপ্লব
আবার কান-এ গেলেন বলিউডের লঙ্কান সুন্দরী, দেখুন তাঁর যত সাম্প্রতিক ১০ লুক
মানবহৃদয়ে প্রেম-ভালোবাসা জাগিয়ে তুললেন যিনি
জনরোষের আগেই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিন ফারুক NF NEWS
রোববার কলম বিরতিতে যাবেন এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
এক ঠিকানায় সব সেবা দিতে ‘নাগরিক সেবা’র উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ শুরু
ফ্রান্সে গড়ে উঠছে বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সাবেক এমপি জেবুন্নেসা গ্রেফতার

মানবহৃদয়ে প্রেম-ভালোবাসা জাগিয়ে তুললেন যিনি

অনলাইন ডেস্ক

সৃষ্টিকুলের জন্য আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হজরত মুহাম্মাদ (সা.)। রাসূল (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার সৃষ্টিগুলো পেয়েছে পূর্ণতা। জগদ্বাসী পেয়েছে তাদের মুক্তির দিশা।

মহান আল্লাহ রাসূল (সা.)কে এমন সময় পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন, যখন মনুষ্যত্ব হারিয়ে মানুষ মেতে উঠেছিল পশুত্বে। মানবতার মোকাদ্দমা চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় ছিল আল্লাহর আদালতে। ঠিক তখনই প্রেরিত হলেন মুহাম্মাদ (সা.)।

ঘোষণা এলো ‘হে নবি! আপনাকে আমি জগৎগুলোর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’

মানব হৃদয়ের যে সহজাত আবেগ মানুষকে সর্বদা কল্যাণের পথে অনুপ্রাণিত করেছে এবং ইতিহাসের সব অধ্যায়ে অবিস্মরণীয় সব কীর্তি ও কর্মের গৌরব দান করেছে, তার নাম প্রেম ও ভালোবাসা। কিন্তু বহুদিন থেকে মানব হৃদয়ে প্রেম-ভালোবাসার স্রোতধারা শুকিয়ে গিয়েছিল, কিংবা মানবকল্যাণের পরিবর্তে তা প্রবাহিত হয়েছিল ভিন্ন খাতে। ফলে ধীরে ধীরে মানুষ নেমে গিয়েছিল পশুর স্তরে।

এভাবেই যুগের পর যুগ অতিবাহিত হয়েছে। রাজার পর রাজা এসেছে, বহু রাজ্যের ভাঙা-গড়া হয়েছে, কিন্তু ইতিহাসের মঞ্চে এমন কোনো মহামানবের আবির্ভাব ঘটেনি, যিনি হৃদয়ের শুকিয়ে যাওয়া এ ‘প্রেমধারা’ নতুনভাবে প্রবাহিত করতে পারেন এবং মানবতার কল্যাণের জন্য তা ব্যবহার করতে পারেন; যিনি তার পরিপূর্ণ গুণ ও সৌন্দর্য এবং সমুন্নত স্বভাব ও চরিত্র ধারা মানুষের হৃদয়রাজ্য জয় করতে পারেন এবং মানব হৃদয়ের প্রেম, ভালোবাসা ও ভক্তি-শ্রদ্ধার অধিকারী হতে পারেন।

মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের বরকতে ও তার মহান শিক্ষার বদৌলতে বদলে গেল পৃথিবী, বদলে গেল পৃথিবীর রীতিনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামো। তার আগমনে পালটে গেছে মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি, তাদের হৃদয়গুলো আপন প্রতিপালকের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠল। ব্যাপকভাবে মানুষ ছুটল আল্লাহর পানে। সন্ধান পেল অপরিচিত এক নতুন স্বাদের, অজানা এক নতুন রুচির, অজ্ঞাত এক নতুন ভালোবাসার!

এমন একটি দিকভ্রান্ত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত ও নির্যাতিত সমাজে আল্লাহর আখেরি রাসূলরূপে শ্রেষ্ঠ মানব মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ আবির্ভূত হলেন। তিনি সব বেড়াজাল ছিন্ন করলেন এবং সব জঞ্জাল সাফ করলেন।

মানবসমাজকে তিনি সত্য-ন্যায়ের আলো দান করলেন এবং হৃদয়ের জগতে নতুন করে প্রেম ও ভালোবাসার ঝর্ণাধারা উৎসারিত করলেন এবং সঠিক খাতে তা প্রবাহিত করলেন।

মানুষকে তিনি শুভ্র-সুন্দর ও সফল-সার্থক জীবনের পথ দেখালেন এবং অনন্ত সৌভাগ্য লাভের সুসংবাদ দান করলেন। তার মহান ব্যক্তিসত্তায় আল্লাহতায়ালা গুণ ও সৌন্দর্যের এবং জ্ঞান ও ঐশ্বর্যের এমন সর্বোত্তম সমাবেশ ঘটিয়েছেন, যার তুলনা মানবজাতির মাঝে দ্বিতীয়টি আর নেই।

মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের বরকতে ও তার মহান শিক্ষার বদৌলতে বদলে গেল পৃথিবী, বদলে গেল পৃথিবীর রীতিনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামো। তার আগমনে পালটে গেছে মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি, তাদের হৃদয়গুলো আপন প্রতিপালকের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠল। ব্যাপকভাবে মানুষ ছুটল আল্লাহর পানে। সন্ধান পেল অপরিচিত এক নতুন স্বাদের, অজানা এক নতুন রুচির, অজ্ঞাত এক নতুন ভালোবাসার!

সাইয়িদ সুলাইমান নদভী তার বিখ্যাত ‘খুতুবাতে মাদ্রাজ’ গ্রন্থে নবি জীবনের এক সুন্দর চিত্র তুলে ধরেছেন। যেখানে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরিপূর্ণ, বিশ্বজয়ী ও অবিনশ্বর জীবন-চিত্র, তার ব্যাপকতা ও পরিপূর্ণতা, মানব জাতির সব স্তর ও সব শ্রেণির, এ ছাড়া সব রকমের পরিবেশ, সব যুগ, সব পেশা, মোটকথা সব ধরনের অবস্থা, জীবনের প্রতিটি স্তর ও পর্যায়ের জন্য তার পরিপূর্ণ ও সামগ্রিক দিকনির্দেশনা ও মহোত্তম আদর্শ অত্যন্ত প্রভাবমণ্ডিত ভাষায় অলংকারপূর্ণ ভঙ্গিতে পেশ করেছেন।

তিনি বলেন: ‘সব শ্রেণির মানুষের জন্য সর্বাবস্থায় আদর্শ এবং মানুষের সব ধরনের বিশুদ্ধ মানসিকতার সুষ্ঠু বিকাশ, পূর্ণাঙ্গ আচার-পদ্ধতি ও চরিত্রের মিলনে যার জীবন চরিতে ঘটেছে তিনি একমাত্র মুহাম্মাদ (সা.) ছাড়া আর কেউ নন। আপনি যদি বিত্তশালী হয়ে থাকেন তবে মক্কার আদর্শ ব্যবসাপতি ও বাহরাইনের বিত্তবান মহাপুরুষের আদর্শ অনুসরণ করুন।

দীনহীন দরিদ্র হয়ে থাকলে শিয়াবে আবু তালিবের নিঃসহায় বন্দি ও মদিনায় আশ্রয়গ্রহণকারী মেহমানের হালচাল শুনুন।

আপনি সম্রাট হয়ে থাকলে আরব সম্রাটের ইতিকাহিনি পাঠ করুণ, শাসিত হলে কুরাইশদের শাসিত শোষিত মুহাম্মাদ (সা.)-এর দিকে একটু খেয়াল করুন। বিজয়ী হয়ে থাকলে বদর ও হুনাইন বিজয়ী মহাবীর সেনাপতির দিকে লক্ষ করুন। পরাজিত হয়ে থাকলে ওহুদ যুদ্ধের শিক্ষা গ্রহণ করুন। আপনি যদি শিক্ষক হয়ে থাকেন, তবে সুফফা শিক্ষাগারের আদর্শ শিক্ষকের আদর্শ সামনে রাখুন।

ছাত্র বা শাগরিদ হলে জিবরাইল রুহুল আমিনের সামনে বসে থাকা আদর্শ ছাত্রকে অনুসরণ করুন। মদিনার খেজুর পাতায় ছাওয়া মসজিদে বসা বিচারপতিকে লক্ষ করুন আইনের বেলায় যার কাছে বাদশাহ-ভিখারি ও আমির-গরিবের মধ্যে পার্থক্যের কোনো বালাই নেই। আপনি স্বামী হয়ে থাকলে খাদিজা ও আয়েশা পুণ্যাত্মা স্বামীর আদর্শচরিত পাঠ করুন। আপনার সন্তানসন্ততি থাকলে ফাতেমার জনক ও হাসান-হুসাইনের নানার আদর্শ আপনার সম্মুখে রয়েছে।

মোটকথা, আপনি যে কেউ হোন না কেন, সবক্ষেত্রে আপনার জীবন পথে চলার জন্য আদর্শ ও আলোর দিশা মুহাম্মাদ (সা.)-এর ব্যাপক জীবন-চরিতে নিহিত রয়েছে। এ জন্য সব শ্রেণির আদর্শ অনুসন্ধিৎসু ও ইমানের নূর অন্বেষণকারীদের জন্য একমাত্র মোস্তফা-চরিতেই আলোর দিশা ও মুক্তির পথ নিহিত রয়েছে।

মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবানাদর্শ যার সামনে রয়েছে, একাধারে নূহ, ইবরাহিম, আইয়ূব, ইউনূস ও মুসা-ঈসা মহাপুরুষবর্গের আদর্শ জীবন-চরিতগুলোও তার সামনে রয়েছে।

লেখক: তরুণ আলেম গণমাধ্যমকর্মী

অনলাইন ডেস্ক

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ