হার্ট থেকে ফুসফুস, শরীরের অধিকাংশ অঙ্গের সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে শরীরচর্চায়। কিন্তু গরমকালে অন্যান্য সময়ের মতো শরীরচর্চা করা সত্যিই কঠিন হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যাঁরা মধ্যবয়স ছুঁয়ে ফেলেছেন কিংবা মধ্যবয়স পার করে ফেলেছেন, তাঁদের জন্য গরমে অতিরিক্ত শরীরচর্চা হিতে বিপরীত হতে পারে। এই অবস্থায় এমন একটি দৈনন্দিন অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন, যা কষ্টকরও নয়, কিন্তু ব্যায়ামের মতোই স্বাস্থ্যকর – সাঁতার কাটা। গরমে কিছুটা সময় সাঁতার কাটলে শরীর ঠান্ডাও থাকবে আবার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতাও মিলবে।
১. হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি:
সাঁতার একটি চমৎকার কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম। এটি হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে, রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত সাঁতার ফুসফুসের ধারণক্ষমতা বাড়ায় এবং শ্বসনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এর ফলে হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে।
২. পেশীশক্তি ও শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি:
সাঁতার কাটার সময় শরীরের প্রায় সব প্রধান পেশী একসঙ্গে কাজ করে, যার ফলে পেশী সুগঠিত ও শক্তিশালী হয়। এটি শরীরের নমনীয়তা বাড়াতেও সাহায্য করে, কারণ সাঁতারের সময় বিভিন্ন জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধিগুলো তাদের সম্পূর্ণ পরিসরে সঞ্চালিত হয়। একারণে এটি একটি ‘ফুল বডি ওয়ার্কআউট’ হিসেবেও পরিচিত।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ক্যালোরি দহন:
সাঁতার শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে, যা ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকর। বিভিন্ন ধরনের সাঁতারের কৌশল (যেমন ফ্রিস্টাইল, ব্রেস্টস্ট্রোক) ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে ক্যালোরি দহন করে। অনেকেই সাঁতারকে মেদ ঝরানোর আনন্দদায়ক উপায় বলে মনে করেন।
৪. মানসিক চাপ হ্রাস ও ঘুমের উন্নতি:
জলের মধ্যে সাঁতার কাটলে শরীর ও মন উভয়েই প্রশান্তি লাভ করে। এটি মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে এবং মনকে সতেজ রাখে। সাঁতারের ফলে শরীরে এন্ডোরফিন নামক ‘ভাল লাগার’ হরমোন নিঃসৃত হয়। এছাড়াও, শারীরিক পরিশ্রমের ফলে রাতে ভাল এবং গভীর ঘুম হয়, যা অনিদ্রা দূর করে।