চুল পড়া ও পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রকট। স্বাস্থ্যকর চুল কার না চাওয়া। চলুন, চট করে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে দ্রুত চুল গজাবে ও বৃদ্ধি পাবে।
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
আপনি যত স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন, আপনার চুলের ফলিকল ততই ভালো থাকবে। বিশেষ করে ডিম, মাংস বা ডালের মতো প্রোটিনের কোনো বিকল্প নেই। পালংশাক, বাদাম, বেরি-জাতীয় ফল ও পর্যাপ্ত পানি খাওয়া খুবই জরুরি। কেননা প্রোটনের সঙ্গে বায়োটিন, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও আয়রনও মাথার ফলিকলের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট ম্যাসাজ
ম্যাসাজে নারকেল তেল, রোজমেরি ও ক্যাস্টর ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ভালো হয়। ত্বক পর্যাপ্ত পুষ্টি আর অক্সিজেন পায়।
৩. চুলে হিট দেওয়া বন্ধ করুন
অনেকে চুল স্ট্রেট বা কার্লি করাতে হিট দেন। বাইরে বের হওয়ার আগে হিট থেরাপির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের স্টাইল করেন। এতে চুলের স্বাভাবিক গঠন ভেঙে যায়, নষ্ট হয় চুলের স্বাস্থ্য। আর এতেই চুল ভেঙে যায়, পড়ে যায়।
- একান্তই হিট ব্যবহার করলে আগে হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করে নিন।
- চুলে পারতপক্ষে গরম পানিও ব্যবহার করবেন না।
- চুলে রং করলে অবশ্যই নিয়মিত কন্ডিশনার ও প্রোটিন মাস্ক ব্যবহার করবেন।
- সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
৪. হেয়ার সাপ্লিমেন্ট
স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন চুলে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়, বাইরে থেকে পুষ্টি জোগানোর জন্য প্রয়োজন হেয়ার সাপ্লিমেন্ট। বায়োটিন, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, আয়রন, ফলিক অ্যাসিডের সমন্বয়ে তৈরি সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের ফলে নতুন করে চুল গজাবে। তা ছাড়া আপনার চুল থাকবে ঘন আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
৫. নিয়মিত চুল ছাটুন
দেড় মাস পরপর বা দুই মাসে একবার করে চুল ছাঁটুন। এর ফলে চুল ভাঙা, পড়া রোধ করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সহজ হয়।
৬. টেনশনমুক্ত জীবন যাপন করুন
স্ট্রেস বা মানসিক চাপের ফলে মাথার স্ক্যালের ত্বক শিথিল হয়ে চুল পড়া বৃদ্ধি পায়। টেনশনমুক্ত জীবন যাপন করতে ডিপ ব্রিদিং, মেডিটেশন, হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুমেরও কোনো বিকল্প নেই।
৭. চুল বৃদ্ধির আরও নানা আয়োজন
২-৫ শতাংশ মিনোক্সিডিল (ওষুধটি পুরুষ ও নারীর উচ্চ রক্তচাপ এবং চুল পড়া রোধে ব্যবহৃত হয়) চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করান। ক্যাফেইনযুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।
৮. ঘুমের সময় চুলের যত্ন
সুতি কাপড়ের বালিশে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সিল্ক বা সাটিনের বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। ভেজা চুলে ঘুমাতে যাবেন না। ঘুমানোর সময় চুল আঁটোসাঁটো করে বাঁধবেন না।
মনে রাখবেন, রাতারাতি চুল বদলে যাবে না। ধৈর্য ধরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিতে হবে। আপনার স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য দুইয়ের সঙ্গেই চুল গভীরভাবে যুক্ত।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট