কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হাজী আসমত কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী হত্যা মামলায় দুই নারীসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতেমা জাহান স্বর্ণা এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের শাকিল উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন মিয়া (৩৯), পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দৌলতদিয়া গ্রামের মো. কাইয়ুম সরকারে স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪১) ও একই জেলার আশুগঞ্জ সোনারামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের মেয়ে শোভা প্রকাশ (৩৭)।
রায় ঘোষণার সময় সেলিনা বেগম ব্যতীত অন্য দুজনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
নিহত মোহাম্মদ আলী জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার তারাকান্দি মধ্যপাড়ার মো. সামছুদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি ভৈরব হাজী হাসমত কলেজে হোস্টেলে থেকে বিএসসি প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করতেন।
জানা গেছে, অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার জেরে আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলীকে হত্যা করেন।
কিশোরগঞ্জ জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন জানান, ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৯টার দিকে মোহাম্মদ আলী ও তার বন্ধু মুরাদ ভৈরব হাজী হাসমত কলেজ গেটের ভেতরে প্রবেশ করছিলেন। এ সময় আগে থেকে প্রস্তুত থাকা দুষ্কৃতকারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন দুই শিক্ষার্থী। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে তাদের উদ্ধার করে ভৈরবের মাতৃকা হাসপাতালের নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক মোহাম্মদ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গুরুতর আহত মুরাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ আলীর বাবা সামছুদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার পরের দিন ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ৩০ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভৈরব থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আজিজ আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য-জেরা ও শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদালত এ আদেশ দেন।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি অ্যাডভোকেট শফিউজ্জামান ভূঁইয়া।
সূত্র: যুগান্তর