কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল । ভারতের কলকাতার চ্যানেল জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন কয়েকবছর আগে। রাতারাতি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠার পরই যেন নক্ষত্রের পতন। তার বিরুদ্ধে জমা হতে থাকে অভিযোগের পাহাড়। নিচে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ দেওয়া হলো:
অভিযোগ-১
২০১৯ সালে ভারতের জি বাংলা কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ‘সারেগামাপা’ অনুষ্ঠানে নোবেলকে তৃতীয় ঘোষণা করা হলে তিনি বলেছিলেন, তাঁর গান বিচার করার ক্ষমতা বিচারকদের নেই। ওই ঘটনায় জি বাংলা চ্যানেল তাকে সাসপেন্ড করে।
অভিযোগ-২
তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান প্যারোডি করা গাওয়ার পর বলেছিলেন, যে রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের জন্যে কিছু করেননি। তার গান প্যারোডি করায় ‘রবীন্দ্রনাথ’ জাতে উঠেছেন।
অভিযোগ-৩
নোবেলের বিরুদ্ধে প্রথম ধর্ষণের মামলা হয় ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। চট্টগ্রামের এক তরুণী পাঁচলাইশ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
অভিযোগ-৪
২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর সালসাবিল মাহমুদকে ভালোবেসে বিয়ে করেন নোবেল। কিন্তু পরে সালসাবিল অভিযোগ করেন, যে নোবেল মাদকাসক্ত। অনেক চেষ্টা করেও তাকে ওই মাদকের নেশা থেকে ফেরাতে পারেননি। একপর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে তাঁদের।
অভিযোগ-৫
২০২৩ সালের ২৭ এপ্রিল মদ্যপ অবস্থায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কনসার্টে গান গাইতে উঠে অসংলগ্ন ও অনিয়ন্ত্রিত আচরণের জন্য দর্শকরা যেই বুঝে ফেলেন তিনি মদ্যপান করেছেন অমনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ওপর পানির বোতল ও জুতা ছুড়ে মারেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আয়োজকেরা তাঁকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেন।
অভিযোগ-৬
ফেসবুকে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১ জুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২৫(২)২৯ ধারায় মামলা করেছিলেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু।
অভিযোগ-৭
২০২১ সালের ১৭ মে সময় টিভির বিনোদন সাংবাদিক আল কাছিরের এক প্রশ্নে নোবেল ক্ষুব্ধ হয়ে ওই সাংবাদিককে ফোন করে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘নোবেলকে তুই চিনিস? হুমকি পেয়ে সেই দিন সময় টিভির প্রশাসন ও পরিচালন বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সৈয়দ আসাদুজ্জামান ঢাকার কলাবাগান থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন।
অভিযোগ-৮
তাকে একাধিকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কাটাতে হয়েছে। সেখানেও তিনি খারাপ ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ-৯
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর ফেসবুকে এক নারীর সঙ্গে তিনি তিনটি ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, মেয়েটি তাঁর স্ত্রী। খুলনার মেয়েটি ছিলেন ফারজানা আরশি। পেশায় ফুড ব্লগার। আসলে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ ছিল।কিন্তু তখন আরশি অন্যের স্ত্রী ছিলেন। অবশ্য আরশির প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদের পর নোবেলের সঙ্গে অল্পদিনের (সপ্তাহখানেক সম্ভবত) সংসার করেন।
অভিযোগ-১০
দেশের রকস্টার জেমসকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করেও নোবেল সমালোচিত হয়েছেন। তার মন্তব্য অনেকটা এমন ছিল, তিনি জেমসের চেয়েও বড় গায়ক। জেমস এসবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। পরে অবশ্য নোবেল তার ভুলও স্বীকার করেছিলেন।
অভিযোগ-১১
সর্বশেষ নোবেল এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে মেয়েটির মা-বাবা তাকে চিনতে পেরে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানান। পরে ডেমরার সারুলিয়ার আমতলায় নোবেলের বাসা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই নারী রাতেই থানায় মামলা করেন। এরপর রাত দুইটায় অভিযান চালিয়ে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই নারী ইডেনের ছাত্রী বলে জানা যায়। ওই নারীর সাথে প্রতারণা করে ধর্ষণ করেছেন দিনের পর দিন এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল