সর্বশেষ
নতুন চুক্তিতে ১০ গুণ বেশি বেতন পাবেন ইয়ামাল!
সন্ধ্যার মধ্যে ১৩ জেলায় তীব্র ঝড়ের আভাস
সবজির দাম কমায় স্বস্তিতে ক্রেতা, স্থিতিশীল মুরগি
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে পরিষ্কার বার্তা তার বিশেষ সহকারীর
‘ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন’
গরমে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ খেলে কী হয়?
এআই প্রযুক্তি: বিশ্বজুড়ে বাড়াচ্ছে সাইবার হামলার আশঙ্কা
ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে যা বললেন সাকিব
ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আল্লাহভীতি ও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব
পুরুষের প্রাণঘাতী প্রোস্টেট ক্যানসার: লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি
কেশচর্চায় আমলকি
মোদির ছবিযুক্ত নেকলেস পরে কানের মঞ্চে ভারতীয় অভিনেত্রী
দেশের স্বার্থে বিভাজন মিটিয়ে ফেলার আহ্বান হাসনাতের
বাংলাদেশকে মানবিক করিডরের নামে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন না: দুদু
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে: বিএনপি

ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আল্লাহভীতি ও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব

অনলাইন ডেস্ক

ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সুদমুক্ত অর্থব্যবস্থা ও তাকওয়াভিত্তিক সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তবে এ ব্যবস্থার সঠিক বাস্তবায়নে দুইটি জিনিস অপরিহার্য—এক. তাকওয়া, দুই. ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিষয়ে গভীর জ্ঞান। এর যেকোনো একটিতে ঘাটতি থাকলে শরিয়াহ পরিপন্থী লেনদেনের আশঙ্কা তৈরি হয়, যার মাধ্যমে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় হারামের অনুপ্রবেশ হয়ে বহু মানুষ হারামে লিপ্ত হতে পারে।

তাকওয়ার গুরুত্ব
তাকওয়া হচ্ছে এমন এক অভ্যন্তরীণ গুণ, যা মানুষকে আল্লাহভীতির মাধ্যমে প্রত্যেক সিদ্ধান্তে হালাল-হারামের পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করে। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এটি শুধু পরিচালকের নয়, বরং শরিয়াহ বোর্ড, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সবার মধ্যে থাকা জরুরি। কারণ সুদ এতটাই ভয়াবহ জিনিস যে, তা মানুষকে আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত করে তোলে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনরা, তোমার আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা অবশিষ্ট আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা মুমিন হও। কিন্তু যদি তোমরা তা না কর, তাহলে আল্লাহ ও রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৮-২৭৯)

এখানে মূলত এই নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণকারীদেরকে কঠোর শাস্তির হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, তোমরা যদি সুদ পরিহার না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। কুফর ছাড়া অন্য কোনো বৃহত্তম গুনাহের কারণে পবিত্র কোরআনে এত বড় শাস্তির কথা উচ্চারিত হয়নি। (মাআরেফুল কোরআন)

অপর দিকে কেউ যদি আল্লাহকে ভালোবেসে ও ভয় করে সুদমুক্ত থাকার নীতি অনুসরণ করলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। মহান আল্লাহ তার জন্য অবশ্যই হালাল ভাবে বরকতময় রিজিকের ব্যবস্থা করবেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেন এবং তিনি তাকে এমন উত্স থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ২-৩)

এই আয়াতগুলো দ্বারা বোঝা যায়, তাকওয়া মানুষকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে। ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাঝে এই গুণ থাকলে তারা যেকোনো লেনদেনে নগদ মুনাফার চেয়ে আল্লাহভীতিকে প্রাধান্য দেবে, তাদের সঙ্গে লেনদেন করা উম্মাহ সুদের মতো ভয়াবহ বিষয় থেকে মুক্ত থাকবে।

ইলম বা জ্ঞানের অপরিহার্যতা
ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং একটি জটিল শাখা, যেখানে ফিকহুল মুআমালাত (লেনদেনসংক্রান্ত ফিকহ) ও ব্যাংকিং বিষয়ে বিশদ জ্ঞান ছাড়া সঠিক শরিয়াহ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ব্যাংকের নীতি নির্ধারক থেকে শুরু করে ব্যাংকার পর্যায়ে প্রতিটি শাখায় তাদের দায়িত্বের পরিধি অনুযায়ী ফিকহুল মুআমালাতের স্পষ্ট জ্ঞান থাকাও আবশ্যক। কারণ এই সেক্টরের দায়িত্বগুলো অনেক স্পর্শকাতর। সামান্য ভুল কিংবা অবহেলার কারণে মানুষের উপার্জনে হারামের অনুপ্রবেশ হতে পারে। নবীজি (সা.) দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে সে সেক্টরে অভিজ্ঞতা রাখে এমন লোককে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করতেন। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (সা.) মজলিসে জনসম্মুখে কিছু আলোচনা করছিলেন। এরই মধ্যে তাঁর নিকট জনৈক বেদুইন এসে জিজ্ঞেস করল, ‘কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বলেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেননি। আর কেউ কেউ বলেন বরং তিনি শুনতেই পাননি। আল্লাহর রাসুল (সা.) আলোচনা শেষে বলেন, ‘কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়?’ সে বলল, ‘এই যে আমি, হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বলেন, ‘যখন কোনো অনুপযুক্ত ব্যক্তির ওপর কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯)

বোঝা গেল, সঠিক জ্ঞান ও তাকওয়া ছাড়া এই অঙ্গনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

যার তাকওয়া আছে জ্ঞান নেই, সে যেমন এই সেক্টরকে সঠিক ভাবে এগিয়ে নিতে পারবে না, তদ্রুপ যার জ্ঞান আছে তাকওয়া নেই, সেও জনগণের আমানতকে হালাল ভাবে তার কাছে পৌঁছাবে না। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত, এই অঙ্গনে কর্মরতদের মাঝে তাকওয়া ও সঠিক জ্ঞানের সমন্বয় ঘটানো যায়, সে ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া। পাশাপাশি গ্রাহকদেরও উচিত, এই দুটি গুণ অর্জনের চেষ্টা করা।

আল্লাহভীতি | ইসলামী ব্যাংকিং | জ্ঞানার্জন

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ