চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি পরিবারের জন্য প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ও লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী স্থানে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে নির্মিত এ সেতু এই স্থানে হওয়ায় শুধুমাত্র ইসমাইল সওদাগরের একটি পরিবারের ৩-৪টি ঘরের মানুষ উপকৃত হবেন।
সরেজমিন দেখা যায়, যে স্থানে সেতুটি হচ্ছে সেখানে শুধু চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজনের কয়েকটি বাড়ি উপকৃত হবে। অথচ অন্য যে স্থানটিতে সেতুটি নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী আবেদন করেছিলেন সেখানে ৫টি পাড়ার অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবারের বসবাস। তাই এত বড় বাজেটের সেতুটি কেন স্থানীয় অন্য পরিবারগুলো বাদ দিয়ে একক পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকা সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সড়কের সোনাকানিয়া ইউনিয়নের নানিয়ারছড়া খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়।
৩৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা। মেসার্স এমএম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির কাজটি করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দীন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার আত্মীয় ইসমাইল সওদাগরের উঠানে সেতুটি স্থাপনের জন্য অনুমোদন নেন। এখানে সেতু নির্মাণ হলে একটি পরিবার ছাড়া অন্য পরিবারগুলো উপকৃত হবে না। তাই সেতুটি অনুমোদিত স্থান হতে সামান্য দক্ষিণে সবার উপকারে আসে এমন জায়গায় নির্মাণ করার জন্য গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, সেতু সেখানে কেন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। অনুমোদিত স্থানের পরিবর্তে দাবিকৃত স্থানে সেতুটি নির্মাণ করা হলে সেখানে ছোট দুটি কালভার্ট করতে হবে, তাই সেতুটি অনুমোদিত স্থানেই নির্মাণ করা হচ্ছে।
সূত্র: যুগান্তর
একটি পরিবার একটি সেতু