সর্বশেষ
গাজায় ত্রাণের ট্রাক পাহারায় থাকা ৬ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত
জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও ড্র বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের
জটিলতা সৃষ্টি করে সরকারের মান-অভিমান গ্রহণযোগ্য কাজ না: আনু মুহাম্মদ
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান
দিল্লিতে এক সপ্তাহে ১২১ বাংলাদেশি গ্রেফতার
পেশীশক্তি, কালো টাকা ও সন্ত্রাসমুক্ত করে নির্বাচন দিতে হবে: হামিদুর রহমান আযাদ
‘মা, আমি চোর নই। চিপস চুরি করিনি’, অপমানের পর ১২ বছরের শিশুর সুইসাইড নোট
এবার ‘ইইউ’কে ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের
ড. ইউনূসের পদত্যাগ তার ব্যক্তিগত বিষয়, বিএনপি দাবি করেনি: সালাহউদ্দিন
গুরুতর অসুস্থ নায়িকা নুসরাত ফারিয়া
মাহিরা খান কি আবারও বলিউডে অভিনয় করবেন?
একটি পরিবারের জন্য একটি সেতু!
তরুণদের প্রযুক্তিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান ডা. জোবাইদার
পদত‍্যাগ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসুন
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, একদিনও এদিক-সেদিকের সুযোগ নেই: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

জটিলতা সৃষ্টি করে সরকারের মান-অভিমান গ্রহণযোগ্য কাজ না: আনু মুহাম্মদ

অনলাইন ডেস্ক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মতাদর্শিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করা। তিনি বলেন, ‘সরকার সেই কাজের দিকে না গিয়ে, অন্যদিকে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে তারপর মান-অভিমান করা, এটা তো কোনো গ্রহণযোগ্য কাজ না।’

আজ শুক্রবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ: কেমন বাজেট চাই?’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত এ আলোচনাসভায় আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এই সরকারের স্থায়ী কোনো ম্যান্ডেট নেই। এই সরকার দীর্ঘদিন থাকবে না। তাই তার পক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব না। তবে সরকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু কিছু পরিবর্তনের গতিমুখ তৈরি করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ পরিশ্রম করছে, সম্পদ তৈরি হচ্ছে, ফলে টাকা-পয়সার অভাব নেই। সম্পদের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হবে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার পর। সরকারের এটা প্রতিশ্রুতির অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারের দিকে না গিয়ে বিদেশি কোম্পানি, বিদেশি বিনিয়োগ, স্টারলিংক, এলএনজি আমদানি—এসব দিকে মনোযোগ দেওয়া তো এই সরকারের দায়িত্ব না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশে অগ্রসর হওয়ার জন্য জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা, কৃষি-শিল্পের ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা এবং জনগণের জন্য পরিবেশবান্ধব যে পথ, সেই পথটাই যাতে শক্তিশালী হয়, সেটার জন্য প্রয়োজনীয় মতাদর্শিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করা। সরকার সেই কাজটা করবে। সেই কাজের দিকে না গিয়ে, অন্যদিকে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে, তারপর মান-অভিমান করা, এটা তো কোনো গ্রহণযোগ্য পথ না।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা না করে, ধরেন চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা এমনভাবে ঘোষণা করলেন এটা দিতেই হবে, যেকোনো মূল্যে দিতে হবে। হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি) এর নতুন নাম দিয়েছে ত্রাণ চ্যানেল।

দুটির ঘটনা তো একই। এগুলো করতে হবে। কিংবা স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সবগুলোই কোনো না কোনোভাবে জাতীয় সক্ষমতার বিকল্প হিসেবে হাজির করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে যেসব দুর্বলতা আছে, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব আছে—সেগুলো দূর করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় তৎপরতা বাড়াতে পারত। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার জন্য পাঠাতে পারত। চট্টগ্রাম বন্দরে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো হলে সেটার স্থায়ী ও স্থিতিশীল প্রভাব ভবিষ্যতের জন্য থাকত।’

বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বিডার চেয়ারম্যান হঠাৎ করে এলএনজি আমদানির জন্য চুক্তি করে এলেন। পেট্রোবাংলা জানে না। এটা তো হওয়ার কথা না। দেশের দরকার ছিল গ্যাস উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো। সেটার জন্য গত ৯ মাসে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সামনের বাজেটে এই জিনিসগুলো থাকতে হবে। জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিগত অবস্থানের একটা পরিবর্তন করতে হবে। সেটা হলে সস্তায় গ্যাস, বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আমদানির জন্য এত ব্যয়, ভর্তুকি দিতে হবে না।’

সৈয়দপুর, পার্বতীপুর ও চট্টগ্রামে রেলওয়ের যেসব ওয়ার্কশপ ছিল, সেগুলোর জনবল কমানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কশপের সক্ষমতা কমিয়ে রেলের ইঞ্জিন, বগি, ওয়াগন—সবকিছু আমদানি করা হয়েছে। অথচ ওয়ার্কশপ শক্তিশালী করা হলে বাংলাদেশে বগি, ইঞ্জিন—সবই নির্মাণ করা সম্ভব হতো।’

জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ, গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘এই খাতে বাংলাদেশের খরচ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম। এত বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বানিয়ে রেখেছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জাতীয় প্রয়োজনের সঙ্গে গবেষণা করা, সেটার চেষ্টা কিংবা তৎপরতা নেই।’

অর্থবছর (জুলাই-জুন) পরিবর্তন করার পক্ষে মত দেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘বাংলা বছর অথবা জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অর্থবছর করা প্রয়োজন। কারণ, বর্তমান অর্থবছরের শেষ দিকে বৃষ্টি থাকে, উন্নয়নকাজে অর্থের অপচয় হয়, কাজ ঠিকমতো হয় না।’

এ সময় আরো বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মাহা মির্জা, কল্লোল মোস্তফা, হারুন উর রশীদ, মোশাহিদা সুলতানা, মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, সজীব তানভীর, মারজিয়া প্রভা, কৌশিক আহমেদ ও সালমান সিদ্দিকী।

 

 আনু মুহাম্মদ

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ