সর্বশেষ
জনবল নেবে গ্রামীণ ব্যাংক, ৪০ বছরেও করা যাবে আবেদন
পথে বেড়ে উঠা শিশুদের ৫৮ শতাংশেরই নেই জন্মসনদ
নিয়মিত আম খেলে কমবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ পাবে বিরোধী দল: সালাহউদ্দিন
উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ চান ইশরাক, ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি
অনিরুদ্ধকে বিয়ে করছেন ‘ন্যাশনাল ক্রাশ’ কাব্য?
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বাড়ল
৫ বলে ৫ উইকেট! আবার আলোচনায় সেই ‘আইপিএল তারকা’ দিগ্বেশ রাঠী
ঐশ্বরিয়ার সৌন্দর্য ধরে রাখার নেপথ্যে তাহলে এই?
নীরবে লিভার ধ্বংস করছে যে ৩ খাবার
ট্রাম্প কেন তড়িঘড়ি জি-সেভেন সম্মেলন ছেড়ে দেশে ফিরলেন?
তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণ
শারীরিক নির্যাতনের মতোই দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ক্ষত তৈরি করে সাইবার বুলিং: গবেষণা
বর্ষার আমেজে যত নীলের সাজে কেয়া পায়েল
ইনস্টাগ্রামে স্টোরিতে লোকেশন যুক্ত করবেন যেভাবে

কোরবানির পশু সম্পর্কিত কিছু বিধান

অনলাইন ডেস্ক

কোরবানির মতো মহত্ বিধান পালন করতে গিয়ে পশু ক্রয় ও জবেহ এর ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে আমরা সঠিক পন্থা অবলম্বন করি না। এ প্রবন্ধের মাধ্যমে কোরবানি প্রস্তুতি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব—

১. চার ধরনের পশুতে কোরবানি নয় : কোরবানির পশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে রাসুল (সা.) নির্দেশিত নিম্নোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে খেয়াল করবে। আবু জাহহাক উবায়দ (রহ.) বলেন : আমি বারা (রা.)-কে বললাম : যে সকল পশুর কোরবানি করতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন, তা আমার কাছে বর্ণনা করুন। তিনি বলেন : রাসুল (সা.) (খুতবা দিতে) দাঁড়ালেন, আর আমার হাত তাঁত হাত অপেক্ষা ছোট। তিনি বললেন : চার প্রকার পশুর কোরবানি বৈধ নয়, ১. কানা পশু, যার কানা হওয়াটা সুস্পষ্ট, ২. রুগ্ণ, যার রোগ সুস্পষ্ট, ৩. খোঁড়া পশু, যার খোঁড়া হওয়া সুস্পষ্ট এবং ৪. দুর্বল, যার হাঁড়ে মজ্জা নেই। আমি বললাম : আমি শিং ও দাঁতে ত্রুটি থাকাও পছন্দ করিনা। তিনি বলেন : তুমি যা অপছন্দ করো, তা ত্যাগ করো; কিন্তু অন্য লোকের জন্য তা হারাম করো না। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৬৯)

২. নামাজের পরে জবেহ করবে : ঈদের নামাজের আগে কোরবানির পশু জবেহ করার সুযোগ নেই। রাসুল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে জবেহ করল, সে নিজের জন্যই জবেহ করল। আর যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পরে জবেহ করল, তার কোরবানি পূর্ণ হলো এবং সে মুসলিমদের নীতি গ্রহণ করল। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৪৬)

৩. আল্লাহর নামে জবেহ করবে : কোরবানি দাতাদের নিজ হাতে আল্লাহর নামে পশু জবেহ করা উত্তম। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি তাঁকে অর্থাত্ নবী (সা.) কে তা নিজ হাতে জবেহ করতে দেখেছি। পশুর ঘাড়ের ওপর তাঁর পা রেখে আর তিনি ’বিসমিল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবর’ বলেছিলেন। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৪১৭)

৪. ছুরি শাণিত করবেন এবং পশু ঠাণ্ডা হতে দেবেন : অনেকে অব্যবহূত ও ধারহীন ছুরি ব্যবহার করে পশুকে কষ্ট দিয়ে জবেহ করে থাকেন। আবার কেউ পশুর সামনেই ছুরি ধার দেন। জবেহের পরে কসাই ভাইয়েরা তাড়াহুড়ো করে প্রাণ না যেতেই চামড়া খসানো শুরু করে থাকেন, যা অত্যন্ত অমানবিক। রাসুল (সা.) বলেছেন : আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর প্রতি সদয় আচরণ ফরজ করেছেন। অতএব তোমরা যখন কোন জন্তু জবেহ করবে, তখন উত্তম পন্থায় জবেহ করবে এবং তোমাদের প্রত্যেকে যেন ছুরি ধার দিয়ে নেয়। আর জবেহকৃত পশুকে ঠান্ডা হতে দেয়। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৪০৫)

৫. জবেহ করার সময় প্রার্থনা করবেন : কোরবানিদাতা পশু জবেহের পর তার কোরবানি যেন আল্লাহ কবুল করেন সেই দোয়া করবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কোরবানি করার জন্য শিংওয়ালা দুম্বাটি আনতে নির্দেশ দেন। সেটি আনা হলে… তিনি দুম্বাটি ধরে শোয়ালেন, জবেহ করলেন এবং বলেন : ‘বিসমিল্লাহ। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবার ও তাঁর উম্মতের পক্ষ হতে এটা কবুল করে নাও।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৭)
৬. কোরবানির গোশত নিজে এবং অন্যকে খাওয়াবে : কোরবানির গোশত বন্টনের ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনা হচ্ছে, আল্লাহ বলেন : ‘অতঃপর তোমরা উহা (কোরবানির  গোশত) হতে আহার করো এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।’ (সুরা হজ, আয়াত : ২৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন : তোমরা (কোরবানির  গোশত) নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং জমা করে রাখো। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৩)
‘খাওয়াও’ শব্দ দ্বারা অভাবগ্রস্থ ও আত্মীয়দের দান করা বুঝানো হয়েছে।

পশু জবেহ করার নামই কোরবানি নয় বরং, মানুষের ভেতরে যে পৈশাচিক এবং পশুত্বের স্বভাব আছে সেগুলোকে কোরবানি করতে পারলেই কেবল কোরবানির মহিমা, ত্যাগ ও তাত্পর্যের পূর্ণ অনুসরণ করা হবে। কোরবানির গোশত নির্দেশিত সবার মধ্যে বিতরণ না করাটা খুবই লজ্জাজনক কাজ। এতে হূদয়ের সংকীর্ণতা ও কৃপণতা প্রকাশ পায়। কারণ কোরবানির মাধ্যমে কোরবানিদাতা অহংকার থেকে মুক্ত হন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধি লাভ করে।

লেখক : শিক্ষক, প্যারামাউন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, রাজশাহী।

 

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ