এখন সময় আর অসময় নেই। কখন যে চুল পাকছে বোঝা খুব মুশকিল। চলতে-ফিরতে দেখা যায়, অল্প বয়সিদেরও চুলে পাক ধরেছে। এটা কিছুটা খাদ্যাভ্যাসের দোষ, আবার কিছু আবহাওয়ার কারণেও হয়ে থাকে। তাই এই অসময়ে চুল পাকায় আপনি উদ্বিগ্ন। ছুটছেন দোকানে কিংবা পার্লারে।
আর পাকা চুল কালো করে নিজেকে বাহবা দিচ্ছেন। কাজটা কি আসলে ঠিক করছেন? না, আপনি ঠিক কাজটি করছেন না। কারণ পার্লারে ব্যবহৃত রাসায়নিকে চুলের ক্ষতি হয়। এত বেশি অ্যামোনিয়া থাকে, যা চুলের গোড়া দুর্বল করে দেয়। চুলের স্বাভাবিক রংও নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়ে চুল কালো করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক— কোন কৌশলে ঘরোয়া উপায়ে চুল কালো করবেন।
বয়সের চাকা বার্ধক্যের দিকে ছুটবেই। বুড়িয়ে যাওয়া প্রথম ধরা পড়বে চুলের পাকে। কিন্তু এখন বার্ধক্যে পৌঁছানোর আগেই চুলে পাক ধরছে। এর কারণ অনেক। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত রাসায়নিক দেওয়া হেয়ার ডাই ব্যবহারের কারণে অকালেই পাক ধরছে চুলে। আর শুধু পাকা চুলের সমস্যাই নয়, চুল অনেক বেশি রুক্ষ ও শুষ্কও হয়ে যাচ্ছে। যদি পাকা চুল ঢাকতেই নয়, তাহলে কেনা হেয়ার ডাই বা পার্লারের রাসায়নিক মেশানো কৃত্রিম রং নয়, বদলে ব্যবহার করতে পারেন ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্ক।
চুলের রং ধরে রাখে মেলানোসাইট কোষ। এই কোষ আবার জন্মায় স্টেম কোষ থেকে। স্টেম কোষ সারা শরীরেই থাকে। এই স্টেম কোষ থেকেই বিভিন্ন রকম কোষের জন্ম হয়। এর মধ্যে মেলানোসাইট কোষও আছে। ত্বক ও চুলের রঙের জন্য দায়ী এই কোষ। মেলানোসাইট কোষ থেকে যে রঞ্জক তৈরি হয়, তার নাম মেলানিন। এই মেলানিনের কারণেই একমাথা কুচকুচে কালো চুল হয়। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয় অন্য জায়গায়। এই মেলানোসাইট কোষ চুলের গোড়ায় তৈরি হয় এবং সেখানেই মেলানিন তৈরি করে। প্রতিটি চুলের গোড়াতেই মেলানোসাইট থাকে। এখন এই কোষের যদি কম বা বেশি হয়, অথবা মেলানোসাইট নষ্ট হয়ে গিয়ে মেলানিন তৈরি করতে না পারে, তখন চুলের স্বাভাবিক রং ফিকে হতে থাকে। একসময়ে সব রং উঠে গিয়ে সাদা হয়ে যায়। এ প্রক্রিয়াকে রুখে দিতেই ঘরে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করাই ভালো।
যেভাবে ব্যবহার করবেন—
আমলকীর রস
আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে থাকে ভিটামিন ‘সি’, যা চুল পাকা রুখতে সাহায্য করে। তিন চামচ আমলকীর পাউডার, তিন চামচ হেনা পাউডার ও এক চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্ট চুলে লাগিয়ে রাখুন। দুই ঘণ্টা পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পাকা চুলে রংও ধরবে, পুষ্টিও পাবে।
কারিপাতার মাস্ক
কম বয়সে চুল পেকে গেলে কারিপাতা সবচেয়ে ভালো উপায়। নারকেল তেলে কারি পাতা ফুটিয়ে নিন। এই তেল ছেঁকে নিয়ে মাথায় মালিশ করুন। জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুল পাকা রুখতে দারুণ কাজ করে কারি পাতা।
তুলসি হেয়ার প্যাক
চিনি ছাড়া চা ভালো করে ফুটিয়ে নিন। আর লাল চায়ে থাকে ট্যানিক অ্যাসিড, যা চুল পাকা ঠেকাতে পারে। এর সঙ্গে কয়েকটি তুলসিপাতা ফুটিয়ে নিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। তুলসির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘সি’ এবং লাল চায়ের ট্যানিক অ্যাসিড চুলে মেলানিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেবে।