লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরবড়ালিয়া এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে মাজহারুল ইসলাম মাসরুর। ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাটারীরহাট ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে জুলাই আন্দোলনের তিন মাস আগে কাঁচামালের ব্যবসা করতে গাজীপুরে গিয়েছিলেন। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মাসরুর।
এর দুই মাস পর পৃথিবীতে আগমন ঘটে তার ছেলে সন্তানের। দেশ রক্ষার আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হওয়া মাসরুরের স্ত্রীর দুই চোখে এখন ঘোর অন্ধকার। স্বামীকে হারিয়ে দুই শিশুসন্তাকে নিয়ে বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাসরুরের স্ত্রী সালমা বেগম জানান, সন্তানদের নিয়ে যে থাকব, সেই মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই। বাড়িতে বসতঘর না থাকায় কখনো বাপের বাড়ি আবার কখনো শ্বশুরের বসতঘরে থাকতে হয়। ঘর না থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন তিনি।
একদিকে নেই স্বামী, অন্যদিকে নেই বসতঘর; একথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। অশ্র“শিক্ত চোখে বারবার একটাই আকুতি তার; যেন সরকার তাকে মাথাগোঁজার একটি ঘর দেয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাসরুরের বৃদ্ধ বাবা আব্দুল খালেক বলেন, ছয় সন্তানের মধ্যে মাসরুরই ছিল একমাত্র উপার্জনকারী। তার উপার্জনেই চলত সংসার। দেশ বাঁচানোর আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হয়েছেন মাসরুর। ছেলেকে হারানোর শোকে অনেকটা পাথর হয়ে গেছেন তিনি। নিজেকে জীবিত থেকেও এখন মৃত মনে হয় তার।
তিনি বলেন, নিজের সংসারই চলছে না, তার ওপর মাসরুরের রেখে যাওয়া দুই সন্তান ও ছেলের বউয়ের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়া এখন তার পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
মাসরুরের ছোট ভাই হুমায়ুন কবির বলেন, আমার ভাই দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, এতে আমরা গর্ব করছি। ভাই শহীদ হওয়ার পর সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল সামান্য সহায়তা করেছে। ওই সহায়তার টাকা মাসরুরের রেখে যাওয়া ঋণ শোধ করার পর এখন তার দুই সন্তান ও স্ত্রীকে চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
সূত্র: যুগান্তর