সর্বশেষ
শপথের ব্যবস্থা না করলে নিজেই শপথ নিয়ে চেয়ার দখল করবো: ইশরাক
এফডিসি এখন লিচুর বাগান, দুই যুগ ধরে বিটিভিতে বাতাবি লেবু: আব্দুন নূর তুষার
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে উত্তেজনা, মোদীকে ১৬ দলের চিঠি
সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের
যে কৌশলে বাড়বে ফোনের ব্যাটারির আয়ু
বাজেটে জন-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি: নাহিদ ইসলাম
অপ্রদর্শিত আয় ব্যবহারের সুযোগ থাকছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
৪৮তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
গ্যাস সংকটে কমছে উৎপাদন
ত্বকের সুরক্ষায় মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, কিন্তু কেন
ঈদের পর থেকে ১০ দিন ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহন নিষিদ্ধ
চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ড. ইউনূস
ফ্যান জোনে খেলা দেখাবে বাফুফে 
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত
সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে: গভর্নর

কোনো মুসলমানকে ‘আহলে কিতাব’ বলা যাবে কি

অনলাইন ডেস্ক

‘আহলে কিতাব’ শব্দটি মুসলমানদের জন্য ব্যবহার করা বৈধ নয়। এটি মূলত একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর পরিচয়বাহী শব্দ, যা শুধুমাত্র ইহুদি ও খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ, এরা তাওরাত ও ইনজিল নামক আসমানি কিতাবের অনুসারী। বেশির ভাগ ইসলামী বিদ্বান ও ফকিহদের মতে, ‘আহলে কিতাব’ বলতে শুধু ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বোঝানো হয় এতে অন্যান্য অমুসলিম বা কাফেরদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। তবে হানাফি মাজহাবের মধ্যে কিছু ভিন্ন মতামত আছে।

বেশির ভাগ ইসলামী আইনজ্ঞদের মতে, “আহলে কিতাব” বলতে মূলত ইহুদি ও খ্রিস্টান এবং তাদের বিভিন্ন উপদল বা সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়। হানাফি মাজহাবের আলেমদের মতে, ‘আহলে কিতাব’ তাদেরই বলা যায় যারা কোনো একজন নবীর প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত কোনো আসমানি কিতাবকে স্বীকৃতি দেয়। এই দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় শুধু ইহুদি ও খ্রিস্টান নয়—এমন লোকেরাও অন্তর্ভুক্ত, যারা দাউদ (আ.)-এর জবুর, ইব্রাহিম (আ.) বা শিস (আ.)-এর ওপর নাজিলকৃত কিতাবের প্রতিও বিশ্বাস রাখে। কারণ, এরা সবাই কোনো না কোনো ঐশী গ্রন্থ ও ধর্মে বিশ্বাসী। (মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ১৪০)

আধুনিক তাফসিরবিদ ইমাম তাহির ইবনে আশুর (রহ.) বলেন, ‘আহলে কিতাব’ শব্দটি কোরআনে মূলত ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে—যারা ইসলাম গ্রহণ করেনি। কারণ এই উপাধি তখনই প্রযোজ্য হয়, যখন তারা তাওরাত ও ইনজিলের অনুসারী অবস্থায়ই থাকে এবং মুসলিম না হয়।

যদিও মুসলমানদের কাছেও একটি আসমানি কিতাব তথা কোরআন আছে, তারপরও তাদের কোরআনের পরিভাষায় ‘আহলে কিতাব’ বলা যায় না। অর্থাত্, একজন ইহুদি বা খ্রিস্টান ইসলাম গ্রহণ করার পর আর ‘আহলে কিতাব’ হিসেবে বিবেচিত হন না। উদাহরণস্বরূপ—কোরআনে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) – যিনি একজন ইহুদি ছিলেন এবং পরে ইসলাম গ্রহণ করেন—তাঁর ব্যাপারে ‘আহলে কিতাব’ শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। বরং আল্লাহ তাআলা তাঁকে এভাবে উল্লেখ করেছেন—‘আর যার কাছে কিতাবের জ্ঞান আছে।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ৪৩) এবং ‘বনি ইসরাঈলের একজন সাক্ষী তার অনুরূপ সাক্ষ্য দিয়েছে।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১০)

কারণ, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, এবং কোরআন যাদের ‘আহলে কিতাব’ বলে উল্লেখ করেছে, তারা হল ইহুদি ও খ্রিস্টান, যারা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ঈমান আনেনি। তাই কোরআন অনুযায়ী, ‘আহলে কিতাব’ পরিচয়টি শুধু তাদের জন্যই সীমাবদ্ধ , যারা পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের অনুসারী হলেও এখনো ইসলামে দাখিল হয়নি। (আত-তাহরির ওয়াত-তানভির ; খণ্ড ২৭, পৃষ্ঠা ৪২৯-৪৩০) মোটকথা, কোনো মুসলিম ব্যক্তির ক্ষেত্রে ‘আহলে কিতাব’ শব্দটি ব্যবহার করা বৈধ নয়।

আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু মানুষ যারা মূলত বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী ও দ্বিন-বিমুখ, তারা ইসলাম, ইহুদিবাদ ও খ্রিস্টধর্মকে একত্রিত করে একক ধর্মরূপে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা এই তিনটি ভিন্ন ধর্মের মধ্যে কোনো পার্থক্য করতে রাজি নয়। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তারা ইসলামী পরিভাষা ও ধর্মীয় শব্দাবলীর অপব্যবহার করছে, যাতে করে কুফরপন্থী পশ্চিমাদের সন্তুষ্ট করা যায়।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দান করুন, আমিন।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ