দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা দৌলতদিয়া ঘাটগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবোচরে ধাক্কা খায়। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী নদীতে ছিটকে পড়েন।
এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাঁচ ভাঙচুর ও মাস্টার পলাশ মিয়াকে মারধর করেন।
শুক্রবার সকালে দৌলতদিয়ার ৬নং ফেরিঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে লঞ্চ এমভি ব্ল্যাকবার্ড। লঞ্চটি দৌলতদিয়ার ৬নং ফেরিঘাটের কাছাকাছি আসলে একটি ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় ৪-৫ জন যাত্রী নদীতে ছিটকে পড়ে যান। এতে করে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাচ ভাঙচুর ও মাস্টারকে মারধর করেন।
এ সময় ঘাটে অবস্থান করা কয়েকজন লোক নৌকা নিয়ে গিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করেন। প্রায় ৩০ মিনিট পর বিকল্প আরেকটি লঞ্চের সাহায্যে ডুবোচর থেকে উদ্ধারের পর লঞ্চটি ঘাটে নোঙর করা হয়।
আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, দৌলতদিয়ার ৬ নাম্বার ফেরিঘাটের সামনে থাকা চরটি সাম্প্রতিক বর্ষা পানিতে তলিয়ে গেছে। লঞ্চচালক কিছু বুঝে ওঠার আগেই চরের সঙ্গে লঞ্চের সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে করে কয়েকজন যাত্রী নদীতে পড়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাঁচের অংশ ভেঙে ফেলেন ও মাস্টারকে মারধর করেন।
লঞ্চযাত্রী মো. সবুজ মিয়া বলেন, লঞ্চটির ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে আসছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে মাস্টার সামনের কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় তিনজন যাত্রী পদ্মা নদীতে পড়ে যান। লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করেছেন। তবে এক-দুজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার শিমুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তিনজন যাত্রী নদীতে পড়ে যাওয়ার সংবাদ পাই এবং তাদের উদ্ধার করা হয়। কোনো যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন এমন তথ্যের কোনো দাবিকারী পাইনি। দুর্ঘটনার শিকার লঞ্চটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ঘাটেই নোঙর করে রাখা হবে।
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন মাস্টার আবদুর রহমান বলেন, পাঁচজন যাত্রী পদ্মা নদীতে পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইতিমধ্যে চারজনকে উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে দুজনকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। এখনো একজন নিখোঁজ রয়েছে এমন দাবির প্রেক্ষিতে তাদের ডুবুরি দল উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কিছু অংশ ভাঙচুর করেছে। লঞ্চের চালক ও সহকারী নিরাপদ হেফাজতে আছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।