নোভাক জকোভিচ ফরাসি মুল্লুকে পা রেখেছিলেন ২৫ গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাস গড়ায় চোখ রেখে। কিন্তু তার এই আশা শেষ হয়ে গেল সেমিফাইনালে। বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় ইয়ানিক সিনারের কাছে সরাসরি সেটে হেরে বিদায় নিতে হলো তাকে। আর তাই ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন ‘বিশ্বসেরা’ সিনার আর টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের দুইয়ে থাকা স্পেনের কার্লোস আলকারাজ।
শুক্রবার রাতে পুরুষ এককের সেমিফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় সিনার ৬-৪, ৭-৫, ৭-৬ (৭-৩) সেটে হারিয়েছেন কিংবদন্তি নোভাক জকোভিচকে। এদিন আগে আরও একটি সেমিফাইনালে খেলেন কার্লোস আলকারাজ। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন ইতালির লরেঞ্জো মুসেত্তি।
ম্যাচে আলকারাজ এগিয়ে ছিলেন ৪-৬, ৭-৬ (৭-৩), ৬-০, ২-০ তে। এরপর ইনজুরির কারণে খেলা ছাড়তে বাধ্য হন মুসেত্তি। ম্যাচ শেষে আলকারাজ বলেন, ‘এভাবে জিততে চাইনি। আমি জিততে চাই, কিন্তু এমনভাবে নয়।’ এই নিয়ে পরপর ছয়টি গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করছেন সিনার ও আলকারাজ।
৩৮ বছর বয়সী জকোভিচ যদি জিততেন, তবে তিনিই হতেন ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু তরুণ সিনারের বিপক্ষে তিনি কিছুতেই ছন্দ খুঁজে পাননি। জকোভিচ অনেক রকম কৌশল নিতে চেষ্টা করেন। বেসলাইন র্যালি, ড্রপ শট, সার্ভ অ্যান্ড ভলি—সবই করেন। কিন্তু সিনারকে টলানো যায়নি।
প্রথম সেটে সিনার জকোভিচের সার্ভ ব্রেক করে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় সেটে জকোভিচ কিছুটা ভালো খেললেও তা ধরে রাখতে পারেননি। সিনার সুযোগ পেয়ে সেটটি নিজের করে নেন।
তৃতীয় সেটে জকোভিচ চোট পেয়ে মেডিকেল টাইমআউট নেন। কিন্তু সিনার ছিলেন আগের মতোই নির্ভার। ৫-৪ গেমে তিনটি সেট পয়েন্ট বাঁচিয়ে দেন তিনি।
সেই গেমে একটি লাইন কল নিয়ে রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়ান জকোভিচ। পরে টাইব্রেকারে সিনার দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ নেন এবং ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন। এই ম্যাচ ছিল দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে প্রথম দেখা, তাতেই বাজিমাত করলেন সিনার।
অন্যদিকে, আলকারাজের ম্যাচটা ছিল অদ্ভুত এক নাটকীয়তায় ভরা। শুরুতে মুসেত্তি দুর্দান্ত খেলেন। প্রথম সেট জেতেন তিনিই। তবে এরপর হঠাৎই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। আলকারাজ নিজের গেমে ফিরে আসেন, দ্বিতীয় সেট টাইব্রেকারে জেতেন। এরপর মুসেত্তির বাঁ পায়ে চোট লাগে। তৃতীয় সেটে মাত্র পাঁচটি পয়েন্ট পান তিনি।
দুইবার ফিজিওর কাছে যান মুসেত্তি। কিন্তু চোটের কারণে আর চলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নেট পেরিয়ে আলকারাজের সঙ্গে করমর্দন করে ম্যাচ ছেড়ে দেন।
এবারের ফাইনাল রোববার। দুই তরুণ—ইয়ানিক সিনার ও কার্লোস আলকারাজ—লড়বেন ফ্রেঞ্চ ওপেন ট্রফির জন্য। যারা আগেই প্রমাণ করেছেন, এখন তারাই আধুনিক টেনিসের ভবিষ্যৎ।