ইতালীয় খাবার পাস্তা কালক্রমে বাংলাদেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দুধ, মাখন, চিজ দিয়ে তৈরি এই খাবার শুধু ছোটদের নয়, বড়দেরও পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে । তবে পাস্তা রান্নার সময় নিয়ে বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা চলছে। অনেকের ধারণা, পাস্তা দীর্ঘক্ষণ রান্না করলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। কিন্তু এ ধারণা কতটা সঠিক, তা নিয়ে পুষ্টিবিদদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
ভারতের চেন্নাইয়ের পুষ্টিবিদ মিনু বালাজি বলছেন, পাস্তার রান্নার সময় নির্ভর করে পাস্তার ধরন ও পরিবেশের ওপর। পাহাড়ি এলাকায় পানি দ্রুত গরম না হওয়ায় পাস্তা সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়। তবে পাস্তা বেশি সময় রান্না করার সঙ্গে পুষ্টির কোনো বড় হ্রাস ঘটে না।
অন্যদিকে, পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক জানান, পাস্তা দীর্ঘক্ষণ ফোটালে এতে থাকা ফাইবারের পরিমাণ সামান্য কমে যেতে পারে। এছাড়া, ফোঁটার পর পানি ঝরালে দ্রবণীয় ফাইবার বেরিয়ে যায়। তবে পাস্তা ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রাখার পর গরম করলে এতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হজমে সহায়ক ও রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
মিনু বালাজি আরও বলেন, পাস্তার মোটা বা পাতলা হওয়া, আকৃতি ইত্যাদি অনুযায়ী রান্নার সময় পরিবর্তিত হয়। তবে বাড়তি সময় রান্নার সঙ্গে পুষ্টির কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে দেন, ময়দার তৈরি পাস্তা স্বাস্থ্যকর নয়। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা নিয়মিত খেলে ওজন বৃদ্ধি ও হজম সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই পাস্তার সঙ্গে ঘন মাখন ও চিজের সাদা গ্রেভি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত নয়।
তাদের পরামর্শ, ময়দার বদলে ডুরুম হুইট পাস্তা খাওয়া ভালো, যা হালকা হলদেটে রঙের এবং গ্লুটেন ফ্রি। এটি হজমে সুবিধা দেয় এবং যারা ময়দা খেলে সমস্যা অনুভব করেন, তাদের জন্য নিরাপদ। সঠিক পদ্ধতিতে পাস্তা রান্না করা গুরুত্বপূর্ণ।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, মাসে একবার পাস্তা খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত এ জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত, বিশেষত যারা ওজন বৃদ্ধি বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে।