ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। কট্টরপন্থি মেইতেই সংগঠন ‘আরামবাই তেংগোল’-এর পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বিবিসি জানায়, রোববার মণিপুরের ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে সংগঠনটির প্রধান অসেম কনন সিংসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। তাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতার সময় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা একটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়, বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রাখে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাসের শেল ও গুলি ছুড়ে। এতে ১৩ বছরের এক কিশোর আহত হয়। মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভূমি ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে ২০২৩ সাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। এতে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার সূচনা হয় ৭ জুন। ওইদিন সিবিআই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের পর আসাম রাজ্যের গৌহাটিতে নিয়ে যায়। সিবিআই জানায়, মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মামলাগুলোর বিচার স্থানান্তর করে আসামে আনা হয়েছে। এ ঘটনার পর রাজ্যের পাঁচটি জেলায় পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা বন্ধ এবং একটি জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও চার বা ততোধিক মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। এদিকে আরামবাই তেংগোল শনিবার রাত থেকে রাজ্যের কিছু অংশে ১০ দিনের জন্য স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল আহ্বান করেছে।
মণিপুর রাজ্যের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক্সে লিখেছেন, রাজ্যের নাগরিকদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। এই দায়িত্ব থেকে পিছু হটা নিজের দায়িত্ব অস্বীকার করার শামিল। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি দায়ী করে বলেন, মণিপুরের সহিংসতা শুরুর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী এখনও সেখানে যাননি, প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করেননি।